এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > বালুরঘাটে কারা হবেন তৃণমূল প্রার্থী! প্রশান্ত কিশোরের টিম চালাচ্ছে সমীক্ষা

বালুরঘাটে কারা হবেন তৃণমূল প্রার্থী! প্রশান্ত কিশোরের টিম চালাচ্ছে সমীক্ষা

 

গত লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গের বেশিরভাগ লোকসভা আসনের মতই বালুরঘাট লোকসভা আসনেও জয়যুক্ত হতে পারেনি শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু বরাবরই তৃণমূল কংগ্রেসের শক্তঘাঁটি ছিল এই বালুরঘাট। শুধুমাত্র লোকসভা নির্বাচনের ক্ষেত্রে নয়, লোকসভা ভোটের বিধানসভা ভিত্তিক ফলাফল অনুযায়ী, বালুরঘাট বিধানসভা কেন্দ্রে 47 হাজারেরও বেশি ভোটে গেরুয়া শিবিরের প্রার্থীর থেকে পিছিয়ে ছিল তৃণমূল শিবিরের প্রার্থী।

পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষে তাই এই আসন যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং বলে মনে করেছে রাজনৈতিক মহল। সেই কারণেই লোকসভা নির্বাচনে বিভিন্ন জায়গায় পরাজয়ের পর স্বয়ং দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন প্রশান্ত কিশোরকে দলের নীতিনির্ধারকের দায়িত্ব দিয়েছিলেন, তখন থেকেই পিকের টিমের বিশেষ নজরদারিতে ছিল বালুরঘাট কেন্দ্র।

রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক জানা যাচ্ছে, খুব শীঘ্রই অনুষ্ঠিত হতে চলেছে রাজ্যজুড়ে পৌরসভা নির্বাচন। আর সেই নির্বাচনে যেন বিরোধী দল ভারতীয় জনতা পার্টির কাছে কোনোভাবেই শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস পিছিয়ে না পড়ে, সেজন্য বালুরঘাটে ইতিমধ্যেই প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ শুরু করে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। আর সেই বাছাইপর্বে নেপথ্যে কাজ চালাচ্ছে টিম পিকে বলে খবর।

পৌরসভা ভোটের নিরিখে শাসক দলকে শক্তিশালী করতে এবং জনগণের পছন্দসই প্রার্থী খুঁজে বার করার লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ঘুরতে শুরু করে দিয়েছে প্রশান্ত কিশোরের টিম। এক্ষেত্রে কোন ওয়ার্ডে কোন নেতার কতখানি প্রভাব রয়েছে, কাকে প্রার্থী করা হলে এলাকার মানুষ সবচেয়ে বেশি খুশি হবেন! সেই সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহের কাজ চালাচ্ছে টিম পিকে। তৃণমূল সূত্রের খবর, প্রশান্ত কিশোরের টিমের রিপোর্টের ভিত্তিতে নেতৃত্ব আগামী দিনে পৌরসভা ভোটের প্রার্থী নির্ণয় করবেন।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

শুধু তাই নয়, জানা যাচ্ছে, জেলা তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বের ইচ্ছা থাকলেও, নিজের ইচ্ছামত কাউকে প্রার্থী করতে পারবেন না জেলা নেতৃত্ব। এক্ষেত্রে পিকের টিমের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হবে। তবে প্রশান্ত কিশোরের টিম যদি সার্ভে করে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী নির্ণয় করেন, সেক্ষেত্রে আদতে দলের মঙ্গলই হবে বলে জানান দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী অর্পিতা ঘোষ।

এই বিষয়ে অর্পিতা দেবী বলেন, “পিকের টিমের সদস্যরা সার্ভে শুরু করে দিয়েছেন। তাদের সার্ভের উপর ভিত্তি করে যদি টিকিট দেওয়া হয়, তাহলে তা খুবই ভালো হবে। এতে আমাদের ক্ষেত্রে সুবিধা হবে। নেতাদের মধ্যেও কোনো মতভেদ তৈরি হবে না। স্বাভাবিকভাবেই তাতে আসন্ন পৌরসভা ভোটে আমাদের দলের ফলাফল অনেক ভালো হবে।”

তবে এক্ষেত্রে কিন্তু মনে করা হচ্ছে, বালুরঘাট পৌরসভায় একাধিক বিদায়ী কাউন্সিলরের নামে কাটমানি সংক্রান্ত নানান অভিযোগ থাকায় এবারের পৌরসভা নির্বাচনে প্রশান্ত কিশোরের টিমের সমীক্ষা অনুযায়ী, তারা টিকিট নাও পেতে পারে। সেদিক থেকে অবশ্য নতুন মুখ প্রার্থী হিসাবে লড়াই করতে পারে ঘাসফুল প্রতীক চিহ্ন নিয়ে। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে সার্ভের ক্ষেত্রে নানান পন্থায় কাজ চালিয়ে যাচ্ছে টিম পিকে বলে খবর।

প্রায় সময়ই বালুরঘাটের নানান ওয়ার্ডে কিছু অজ্ঞাত পরিচয় যুবকদেরকে খাতা কলম হাতে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে এলাকার সমস্যা সংক্রান্ত, রাস্তাঘাট সংক্রান্ত, প্রাক্তন কাউন্সিলরছর কাজকর্ম সংক্রান্ত নানান প্রশ্ন করতে দেখা যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, চৌমাথা মোড়ে দাঁড়িয়ে হাতে খাতা-কলম ধরে মানুষের সঙ্গে কথা বলে প্রার্থী হিসেবে তাদের কাকে পছন্দ, কোন নেতার ব্যবহার ভালো! ইত্যাদি তথ্য সংগ্রহ করতে দেখা যাচ্ছে একাধিক যুবক-যুবতীদেরকে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এরাই টিম পিকের সদস্য সমস্যা। আর এই সমীক্ষার মাধ্যমেই আগামীদিনে পৌরসভার নির্বাচনের প্রার্থী ঘোষণা করতে হবে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে। কারণ বিগত পৌরসভার কাজকর্মের প্রতি মানুষের যে খুব একটা বেশি ভক্তি নেই, তা প্রকাশ পেয়েছে ইতিমধ্যেই প্রশান্ত কিশোরের টিমের সমীক্ষায় বলে খবর। তবে এই ব্যাপারে বালুরঘাট পৌরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান রাজেন শীল বলেন, “টিকিট কাকে দেওয়া হবে, তা দল বিচার করবে। আমি চেয়ারম্যান থাকাকালীন শহরের জন্য প্রচুর কাজ করেছি। আশা করছি, আগামীতে সুযোগ পেলে আরও অনেক কাজ করব।”

তবে রাজেনবাবু যাই বলুন না কেন, বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বালুরঘাট পৌরসভায় একাধিক কাজ হলেও দুর্নীতির অভিযোগে রীতিমতো জর্জরিত হয়ে রয়েছে একাধিক কাউন্সিলর থেকে শুরু করে স্বয়ং চেয়ারম্যানকে। অভিযোগ প্রমাণ সাপেক্ষ হলেও, মানুষের মনে যে তৃণমূল কংগ্রেসের বিদায়ী কাউন্সিলর এবং চেয়ারম্যানকে নিয়ে যথেষ্ট পরিমাণে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে, তা বলার অবকাশ রাখে না।

সেক্ষেত্রে লোকসভা নির্বাচনে ভোটের নিরিখে শক্তিশালী ভারতীয় জনতা পার্টিকে পরাজিত করে বালুরঘাট পৌরসভায় নিজেদের আধিপত্য কায়েম রাখতে গেলে প্রকৃত অর্থেই রীতিমতো স্বচ্ছ চেহারার ব্যক্তিত্বদেরকে তৃণমূলের প্রতীক চিহ্ন লড়াই করাতে হবে। আর তার ফলেই নির্বাচনে ভালো ফল করতে পারে ঘাসফুল শিবির বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!