তৃণমূলকে তৃতীয় বার ক্ষমতায় আনতে পিকের মহাপরিকল্পনা! সীলমোহর মমতার – জানুন বিস্তারিত কলকাতা রাজ্য November 15, 2019 লোকসভা ভোটে বিপর্যয়ের পরেই দলের রননীতিকার হিসেবে ভোটগুরু প্রশান্ত কিশোরকে দায়িত্ব দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর দায়িত্ব নিয়েই প্রশান্ত কিশোর অনুধাবন করেন যে, তৃণমূল মানুষের থেকে অনেকটাই বিচ্ছিন্ন। আর তাই রাজ্যের শাসক দলকে প্রথমে জনসংযোগে নিয়ে যেতে হবে। আর এই কথা অনুধাবন করেই দিদিকে বলোর মত কর্মসূচি চালু করে গোটা তৃণমূলকে ময়দানে নামিয়ে দেন ভোটগুরু। ইতিমধ্যেই এই জনসংযোগ প্রকল্পের মধ্যে দিয়ে তৃণমূল অনেক ক্ষেত্রে সাফল্য পেয়েছে বলে দাবি ঘাসফুল শিবিরের। তবে প্রশান্ত কিশোর তৃণমূলের দায়িত্ব নেওয়ার পর এই প্রথম রাজ্যের 3 কেন্দ্রের বিধানসভা উপনির্বাচন হচ্ছে। যা তৃণমূলের কাছে যেমন অ্যাসিড টেস্ট, তেমনই প্রশান্ত কিশোরেরও শক্তি পরীক্ষা বলে মত রাজনৈতিক মহলের। আর এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলকে সেই তিন উপনির্বাচনে জয়যুক্ত করতে নয়া পরিকল্পনা নিলেন ভোটগুরু। বস্তুত, আগামী 25 নভেম্বর রাজ্যের 3 কেন্দ্র – করিমপুর, খড়্গপুর-সদর এবং কালিয়াগঞ্জ বিধানসভায় উপনির্বাচন হবে। জানা যায়, এর মধ্যে করিমপুরে তৃণমূল সাফল্য পেলেও খড়্গপুর এবং কালিয়াগঞ্জে সদ্যসমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির সাফল্য ছিল চোখে পড়ার মত। পাশাপাশি এই খড়্গপুর এবং কালিয়াগঞ্জের একটিতে বিজেপি এবং একটিতে কংগ্রেসের বিধায়ক ছিলেন। তাই সেদিক থেকে 2021 এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির প্রভাব মুক্ত করতে এই কেন্দ্র তৃণমূলের পক্ষে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মত তৃণমূল শিবিরের। একাংশের মতে, বিধানসভা ও লোকসভা ভোটে প্রতিটি রাজনৈতিক দল সার্বিকভাবে তাদের ইস্তেহার প্রকাশ করে। কিন্তু স্থানীয় এলাকার সুবিধা-অসুবিধাকে প্রাধান্য দিয়ে কোনো ইস্তেহার প্রকাশ করা হয় না। তবে এবার নির্বাচনে জয়লাভ করতে প্রশান্ত কিশোরের সূক্ষ্ম বুদ্ধিমত্তায় তৃণমূলের ইস্তেহারে একটি বিধানসভা কেন্দ্রের সমস্যা এবং সমাধানই প্রকাশ পেতে দেখা গেল। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - আর স্থানীয় ইস্যুকে এইভাবে নিজেদের ইস্তেহারে প্রাধান্য দেওয়ায় তৃণমূল অনেকটাই সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পাবে বলে মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের। কেননা প্রায় প্রতিটি রাজনৈতিক দল ইস্তেহারে সার্বিকভাবে প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু নির্দিষ্ট কোনো একটি অঞ্চলের সমস্যা সমাধানের জন্য তাদের কোনো প্রতিশ্রুতি দিতে দেখা যায় না। তাই সেদিক থেকে প্রশান্ত কিশোরের পরামর্শে আসন্ন 3 বিধানসভা উপনির্বাচনের আগে তৃণমূলের এই ইস্তেহার অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। জানা গেছে, বিধানসভার অন্তর্গত আর্থিক, সাংস্কৃতিক এবং জনবিন্যাস গত ভিন্নতার কথা মাথায় রেখেই এই তিনটি আলাদা ইস্তেহার করা হয়েছে। এদিন এই প্রসঙ্গে এক তৃণমূল নেতা বলেন, “এই ইস্তেহার নিঃসন্দেহে অভিনব এটা অনেক বেশি কার্যকর হবে। এই উদ্যোগ সফল হলে আগামী দিনে সাধারণ নির্বাচনের ইস্তেহার প্রকাশে বিকেন্দ্রীকরণ ঘটবে।” বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রশান্ত কিশোরের সূক্ষ্ম বুদ্ধিমত্তায় যেভাবে তৃণমূল এগিয়ে চলছে, তাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অত্যন্ত খুশি। আর তাইতো তিনি ইস্তেহারে ভিন্নতা আনায় তাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও সীলমোহর দিয়ে দিলেন। তার থেকেও বড় কথা এই তিন আসনের উপনির্বাচন কার্যত আগামী বিধানসভা নির্বাচনের অভিমুখ ঠিক করে দেবে। ফলে পিকের স্ট্র্যাটেজিতে এই উপনির্বাচনে ঘাসফুলের জয়জয়কার হলে – স্বভাবিকভাবেই আগামী নির্বাচনে তিনিই তৃণমূলের মাস্টারমাইন্ড হতে চলেছেন। তৃণমূলকে তৃতীয়বার ক্ষমতায় আনতে তাঁর রণনীতিতেই ভরসা করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিকে তৃণমূলের অন্দরমহলের খবর, শুধু উপনির্বাচনেই নয়, আগামী বিধানসভা নির্বাচনেও কেন্দ্র ধরে ধরে পৃথক ইস্তেহারের ভাবনায় রয়েছে টীম পিকে। আর যাতে স্বয়ং দলনেত্রীরও সিলমোহর পড়ে গেছে। তবে, তা বাস্তবে রূপায়নের জন্য, তার আগে টীম পিকেকে এই উপনির্বাচনে ভালো ফল করে প্রমান দিতে হবে। ফলে বিজেপি বা অন্যান্য রাজনৈতিক দলের তরফে তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রচার করা হলেও, ইস্তেহারে তৃণমূলের এই মাস্টারস্ট্রোক কতটা কার্যকরী হয়, সেদিকেই আপাতত তাকিয়ে গোটা রাজনৈতিক মহল। আপনার মতামত জানান -