এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > প্রাথমিক শিক্ষকদের সংগঠন উস্তি-র আন্দোলনের চাপেই কি পিছু হটলো সরকার, জেনে নিন বিস্তারিত

প্রাথমিক শিক্ষকদের সংগঠন উস্তি-র আন্দোলনের চাপেই কি পিছু হটলো সরকার, জেনে নিন বিস্তারিত


শিক্ষকদের বলা হয় জাতির মেরুদন্ড! অথচ সেই শিক্ষকরাই আজ চরমভাবে বঞ্চিত এই রাজ্যে বলে অভিযোগ। আর সেই বেতন বঞ্চনার বিরুদ্ধে লড়াই করতে, সরকারের কাছে আবেদন জানাতে কোনো পথই বাদ রাখেননি রাজ্যের হাজার হাজার প্রাথমিক শিক্ষকরা। কিন্তু, ঘুম ভাঙেনি সরকারের! উল্টে, নিজেদের ন্যায্য দাবি চাইতে গিয়ে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীর কাছ থেকে জুটেছিল ‘অযোগ্য’ তকমা!

আর তাই, এবার নিজেদের ‘জীবনের মূল্যে’ এবার নিজেদের ন্যায্য দাবি ছিনিয়ে নেওয়ার যুদ্ধে নামলেন রাজ্যের শিক্ষকরা। রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকদের সংগঠন উস্থির ডাকে বিকাশ ভবনের অদূরে আমরণ অনশনে বসেছেন রাজ্যের হাজার প্রাথমিক শিক্ষক – লক্ষ্য একটাই সরকার তাঁদের প্রাপ্য পিআরটি স্কেল দিক। গ্রেড-পে নিয়ে যে বঞ্চনা বছরের পর বছর ধরে চলে আসছে – এবার হোক তার অবসান।

আর এই আন্দোলন নিয়ে কি রাজ্য সরকার এবার রীতিমত চাপে পরে গেল? প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহল থেকে। কেননা, রাজ্য সরকার বারবার দাবি করে এই সরকার মা-মাটি-মানুষের সরকার অর্থাৎ অত্যন্ত মানবিক সরকার। কিন্তু, নিজেদের ন্যায্য দাবি আদায়ের জন্য গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আন্দোলনরত শিক্ষকদের আন্দোলন নিয়ে সহমর্মিতা দেখানোর বদলে, পানীয় জল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে, আন্দোলনে হাজার হাজার শিক্ষিকা থাকলেও নেই কোনো শৌচাগারের ব্যবস্থা! যেটি ছিল, সেটিও নাকি এখন আর ব্যবহার করতে দেওয়া হচ্ছে না! ইতিমধ্যেই অনশনের ফলে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বেশ কিছু শিক্ষক-শিক্ষিকা, কিন্তু তবুও লড়াই চলছে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

আর এরপরেই রাজ্য সরকারের উপর চাপ যে কি পর্যায়ে গেছে তা শিক্ষামন্ত্রীর আক্রমণাত্মক সাংবাদিক বৈঠকই প্রমান দিচ্ছে। শিক্ষকদের ন্যায্য দাবির কোনো উত্তর বোধহয় তাঁর কাছে নেই, আর তাই চাপের খেলা ও বিভ্রান্তি ছড়ানো সাংবাদিক বৈঠক তাঁকে করতে হয়েছে বলেও গুঞ্জন শুরু হয়ে গেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। অনশনের তৃতীয় দিনে এসে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় গতকাল বিকেলে সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, আমি আপনাদের খুব দায়িত্ব নিয়ে বলছি, যাঁরা (শিক্ষকরা) বসে আছেন (অনশন করছেন) তাঁরা অকারণে বসে আছেন ৷ আপনাদের (সাংবাদিকদের) দিকে তাকিয়ে আছে, যাতে আপনারা কতটা খবর করবেন। প্রাইমারি টিচারদের গ্রেড পে নিয়ে যে একটা একটা অসন্তোষ আছে, সেটা সমাধান করব ৷ সাথেই দাবি করেছিলেন যে, তিনি কোনও উস্থি বা কুস্তি জানেন না। তিনি সব প্রাথমিক শিক্ষকদের সঙ্গেই একটি বৈঠক করবেন। কারও সঙ্গে আলাদা করে বসবেন না। একই সঙ্গে তিনি জানান, ক্লাসে না গিয়ে শিক্ষকেরা আন্দোলনে যোগ দিলে তা বরদাস্ত করা হবে না।

এর পরেই মঙ্গলবার স্কুলশিক্ষা দফতর থেকে জেলায় জেলায় ওই শো-কজের নির্দেশ পাঠানো হয়। জেলাগুলি কী ব্যবস্থা নিল, তার বিশদ রিপোর্টও চাওয়া হয়। এই নির্দেশে প্রাথমিক শিক্ষকদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। ধন্দে পড়েন অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকেরাও। এক অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের কথায়, ”শো-কজ করতে হলে কারা স্কুলে গরহাজির থেকে সরকার বিরোধী আন্দোলন করছেন তা চিহ্নিত করতে হত। কিন্তু কী ভাবে তা চিহ্নিত করা সম্ভব বুঝতে পারছিলাম না।” বুধবারই নতুন নির্দেশ আসে।

এদিকে ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই অবশ্য বদলে গেল সেই নির্দেশ।নতুন নির্দেশে জানানো হল, এখনই শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা যেন না নেওয়া হয়। যদিও শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় আজ বলেন, ”এ ব্যাপারে কিছু জানা নেই।”

ফলে সব মিলিয়ে প্রশ্ন উঠছে তবে কি চাপের মুখে পরেই এই সিদ্ধান্ত বদল করতে বাধ্য হলো তৃণমূল সরকার। প্রশ্ন উঠেছে শিক্ষামন্ত্রীকে নিয়েও কেননা তার দপ্তর কি করছেন সেই খবর তাঁর কাছে নেই এমনটা হলে তো তিনি সত্যিই তাঁর দপ্তরের রাশ ধরে রাখতে পারছেন না।

এই দাবি শুধু রাজনৈতিকমহলেরই নয়, দাবি প্রাথমিক শিক্ষকসংগঠনেরও। প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠন উস্থির দাবি, রাজ্য সরকার বুঝে গেছে এই আন্দোলনের গুরুত্ত্ব কতখানি, তাঁরা অনুধাবন করতে পারছেন যে শো-কজের নির্দেশ দেওয়া ঠিক হয়নি। এতে আগুনে ঘি পড়েছে। প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকারা আরও বেশি করে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তাই বাধ্য হয়ে নির্দেশ বদলেছে। তবে আমরা থামবো না এই লড়াই চলবে আমাদের অধিকার না পাওয়া পর্যন্ত।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!