প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –  লক্ষ্য নিয়েও বিজেপি 2021 এর বিধানসভা নির্বাচনে নিজেদের নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি। আর তারপরেই গেরুয়া শিবিরের ভাঙ্গন ধরতে শুরু করেছে। তৃণমূল ছেড়ে একের পর এক নেতারা বিজেপিতে যোগদান করলেও, এখন তারা আবার বেসুরো হতে শুরু করেছেন। ইতিমধ্যেই হেভিওয়েট বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের গেরুয়া শিবির ছেড়ে নাম লিখিয়েছেন ঘাসফুল শিবিরে। একইভাবে ভোটের আগে তৃণমূল কংগ্রেসের মন্ত্রীসভা থেকে ইস্তফা দিয়ে গেরুয়া শিবিরের নাম লেখাতে দেখা গিয়েছিল রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে।

বর্তমানে সেই রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় তার একাধিক মন্তব্য থেকে শুরু করে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের বাড়িতে গিয়ে সাক্ষাত, তৃণমূলে ফেরার মরিয়া চেষ্টা বলেই দাবি করছেন একাংশ। যদিও বা ডোমজুড়ের তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা দাবি জানাচ্ছেন, কোনভাবেই যেন দলে গ্রহণ করা না হয় রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে। আর এই পরিস্থিতিতে হেভিওয়েট এই বিজেপি নেতার অস্বস্তি বাড়িয়ে তার ঘনিষ্ঠ প্রায় 40 জন বিজেপি নেতা-কর্মী প্রকাশ্যে মাইক ধরে বিজেপির হয়ে কাজ করার জন্য ক্ষমা চাইলেন।

পাশাপাশি রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত ডোমজুড়ে সেই ক্ষমা চাওয়া বিজেপি নেতা- কর্মীদের দলে যোগদান করাতে দেখা গেল তৃণমূল কংগ্রেসকে। যার ফলে ভোটের আগে গেরুয়া শিবিরে যোগদান করা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের শক্ত ঘাঁটিতে একা হয়ে পড়লেন বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার ডোমজুড়ের প্রায় ঘরছাড়া 40 জন বিজেপি নেতা কর্মী তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। যেখানে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার আগে সেই সমস্ত বিজেপি কর্মীরা প্রকাশ্যে মাইক ধরে বিজেপি করার জন্য ক্ষমা চেয়ে নেন। পাশাপাশি গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে তারা বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন এবং তা যে ভুল ছিল, তা স্বীকার করে নিতে দেখা যায় এই সমস্ত বিজেপি কর্মীদের। আর তারপরেই ডোমজুড়ের তৃণমূল বিধায়ক কল্যান ঘোষ সেই সমস্ত বিজেপি নেতা কর্মীদের তৃণমূলের পতাকা ধরিয়ে দেন।

স্বাভাবিক ভাবেই এই গোটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাপে পড়ে গেল ভারতীয় জনতা পার্টি। পাশাপাশি নির্বাচনে ভরাডুবি হওয়ার পর রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে নানা জল্পনা তৈরি হয়েছিল। তবে তার তৃণমূলে ফেরার রাস্তা যে সম্পূর্ণরূপে বন্ধ, সেই ব্যাপারে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের উদ্যোগের ফলেই পরিষ্কার হয়ে যায়। তবে এবার রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ, যারা তার সাথে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন, তারা নিজেদের ভুল স্বীকার করে কার্যত ক্ষমা চেয়ে নিয়ে আবার তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করায় যথেষ্ট চাপের মুখে পড়ে গেলেন বিজেপি নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

এদিন এই বিজেপি নেতা কর্মীদের নিজেদের দলে যোগদান করিয়ে তাদের স্বাগত জানান তৃণমূল বিধায়ক কল্যান ঘোষ। তিনি বলেন, “আমাদের দল কোনোরকম হিংসা বা অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয় না। ফল ঘোষণার পর এরা নিজেরা বিজেপিতে চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু এরপর ফিরতে চেয়ে এরা স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধানের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। প্রধান আমাকে জানালে আমি সঙ্গে সঙ্গে তাকে এদের ফিরে আসার জন্য সচেষ্ট হতে বলি। আজ তারা ফিরে এলেন। বিজেপি কর্মীরাই ওই মাইকের বন্দোবস্ত করে ক্ষমা চেয়েছেন।” কিন্তু ভোটের আগে যারা বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন, নির্বাচনে ভরাডুবির পর তারা আবার তৃনমূল কংগ্রেসের ফিরে যাওয়ায় কা চাপের মুখে পড়ে গেল না ভারতীয় জনতা পার্টি?

এদিন এই প্রসঙ্গে হাওড়ার বিজেপি সভাপতি সুরজিৎ সাহা বলেন, “এটা কি বিশ্বাসযোগ্য যে, এতদিন পর এই কর্মীদের বিজেপি করার জন্য অনুতাপ হয়েছে? তৃণমূল ভয় দেখিয়ে এটা করাতে বাধ্য করেছে।” তবে বিজেপির পক্ষ থেকে যে কথাই বলা হোক না কেন, তৃণমূল তাকে মানতে নারাজ। অর্থাৎ কোথাও মাথার চুল কেটে আবার কোথাও বা কান ধরে ক্ষমা চাওয়ার পর এবার বিজেপি নেতার শক্ত ঘাঁটি ডোমজুড়ে মাইকে ক্ষমা চেয়ে নিয়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন প্রচুর বিজেপি কর্মী সমর্থক