এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা আসলে ‘চোর’? বিস্ফোরক অভিযোগ তুলে ধর্নায় বসলেন ঘাসফুল কর্মীরাই!

প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা আসলে ‘চোর’? বিস্ফোরক অভিযোগ তুলে ধর্নায় বসলেন ঘাসফুল কর্মীরাই!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – বিধানসভা নির্বাচনের সময় যত এগিয়ে আসছে, ততই তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়তে শুরু করেছে। গোষ্ঠী কোন্দলে জর্জরিত হতে শুরু করেছে শাসক দল। এক নেতা অপর নেতার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলতে শুরু করেছেন। আর তৃণমূলের নেতারা একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলতে শুরু করায় কার্যত বাড়তি অক্সিজেন পেতে শুরু করেছে বিরোধী দল বিজেপি। সূত্রের খবর, এবার দলের প্রধানের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ তুলে পার্টি অফিসের সামনে ধর্নায় বসতে দেখা গেল তৃনমূল কংগ্রেসের নেতা কর্মীদের। যে ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে উত্তর দিনাজপুর জেলা জুড়ে।

জানা গেছে, সোমবার ইসলামপুর ব্লকের পন্ডিতপোতা 2 গ্রাম পঞ্চায়েতে দলীয় প্রধান রাজি বেগমের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলে পার্টি অফিসের সামনে ধর্নায় বসে পড়েন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। রাত পর্যন্ত চলে ধর্না। পরবর্তী পরিস্থিতি সামলাতে হস্তক্ষেপ করতে হয় উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি কানাইলাল আগরওয়ালকে। তবে দলীয় প্রধানের বিরুদ্ধে যেভাবে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ বসে পড়লেন, তা যে বড় অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ালো শাসক শিবিরের কাছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে।

এদিন এই প্রসঙ্গে ধর্নায় অংশ নেওয়া তৃণমূল কর্মী নূর আলম বলেন, “এই প্রধান পঞ্চায়েতের একাধিক কাজে দুর্নীতি করেছেন। তার বিরুদ্ধে আমরা ইতিমধ্যেই একাধিকবার প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। তারপর বাধ্য হয়ে 7 জানুয়ারি আমরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ জানিয়ে চিঠি পাঠিয়েছি। এদিন আমরা ধরনায় বসেছি। যাতে অভিযোগগুলোর তদন্ত হয়।”

আর এখানেই একাংশের প্রশ্ন, বিরোধীরা শাসকদলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুললে তা স্বাভাবিক হিসেবে ধরে নেওয়া হয়। কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনের আগে যেখানে বিরোধীরা তৃণমূলের বিরুদ্ধে নানা ইস্যুতে সরব হচ্ছে, সেখানে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে রীতিমত বিক্ষোভে বসে পড়ায় তা যে বিরোধীদের হাতে বাড়তি হাতিয়ার তুলে দিল, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

এদিকে প্রধানের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করা হলেও, তা সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করেছেন দলীয় প্রধান রাজি বেগমের স্বামী মহম্মদ রশিদ। এদিন তিনি বলেন, “আমরা এলাকায় একের পর এক উন্নয়নের কাজ করে চলেছি. এরা সেই কাজে বাধা সৃষ্টি করছে. এরা হচ্ছে ধান্দাবাজ। যারা এদিন বিক্ষোভ দেখিয়েছে, তারা গত লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছিল। তারা প্রকৃত তৃণমূল নয়। অনেকদিন ধরেই তারা প্রধানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। কাটমানি চাইছে। তা না দেওয়াতে এভাবে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। আমরা সব কথা দলের বিধায়ক করিম চৌধুরী এবং জেলা সভাপতিকে জানিয়েছি।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিকে এই ব্যাপারে বিক্ষোভকারীদের দলের কর্মী বলে যা বলার জেলা সভাপতি বলবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন ইসলামপুর ব্লক তৃণমূল সভাপতি জাকির হোসেন। কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনের আগে প্রধানের বিরুদ্ধে দলের কর্মীদের এভাবে বিক্ষোভ কি শাসকদলকে বেকায়দায় ফেললো না? এদিন এই প্রসঙ্গে উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি কানাইলাল আগরওয়াল বলেন, “আমি বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের সমস্ত অভিযোগ শুনেছি। তাদের দাবি ছিল প্রধানকে দল থেকে সাসপেন্ড করতে হবে। আমি বিডিওকে বলেছি, সমস্ত অভিযোগ তদন্ত করে দেখতে হবে। সেইসঙ্গে ব্লক সভাপতিকে বলেছি, এলাকায় খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনে প্রধানকে শোকজ করতে হবে। তবে এখানে গোষ্ঠী কোন্দলের কিছু নেই।”

কিন্তু জেলা সভাপতি যতই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা অস্বীকার করুন না কেন, পরিস্থিতি যে ক্রমশ আয়ত্তের বাইরে যেতে শুরু করেছে, তা ভালোই জানেন তৃণমূলের সকল স্তরের নেতৃত্বরা। স্বাভাবিক ভাবেই বিধানসভা নির্বাচনের আগে এভাবে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের পক্ষ থেকে প্রধানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শাসকদলের চিন্তাকে ক্রমশ বাড়িয়ে দিল বলেই মত বিশেষজ্ঞদের। পাশাপাশি এই ঘটনায় তৃণমূলের শৃঙ্খলা কার্যত প্রশ্নচিহ্নের মুখে পড়ে গেল বলেই দাবি করছেন পর্যবেক্ষকরা। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!