এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > মেদিনীপুর > রামজীবনপুর পুরসভা দখল নিয়ে নাটক অব্যাহত জোর শোরগোল রাজ্যে

রামজীবনপুর পুরসভা দখল নিয়ে নাটক অব্যাহত জোর শোরগোল রাজ্যে


2019 এর লোকসভা ভোটের পর থেকে দলবদলের প্রবণতায় বিজেপির দিকে ঝোঁক বাড়ে সবার। রাজ্যের শাসক দল থেকে বহু নেতা-কর্মীরা লোকসভা ভোটের পর বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। লোকসভা ভোটে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল রীতিমতো কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল বিরোধী দল বিজেপির কাছে। পশ্চিমবঙ্গের 42 টি আসনের মধ্যে যেখানে তৃণমূল অধিকার করেছিল 22 টি আসন, বিজেপির হাতে সেখানে আসে 18 টি আসন।

লোকসভা ভোটের পর থেকে বিভিন্ন দল থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার যে বিশেষ প্রবণতা দেখা দিয়েছিল, তার ফলে রাজ্যের বহু পুরসভা পঞ্চায়েত বিজেপির দখলে চলে এসেছিল। এবার সেই একই ছবি ধরা পড়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার রামজীবনপুর পুরসভায়।

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার রামজীবনপুর পুরসভা দখল নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে। নির্বাচনের ফলে 11 আসনবিশিষ্ট রামজীবনপুর পুরসভায় পাঁচটি করে আসন পায় তৃণমূল এবং বিজেপি। আর একটি যায় নির্দল প্রার্থীর হাতে। কিন্তু বিজেপির দুই কাউন্সিলর পরবর্তীতে তৃণমূলে যোগ দিলে তৃণমূল রামজীবনপুর পুরসভার বোর্ড গঠন করে। এভাবেই বেশ কিছুদিন চলার পর আবার বিজেপিতে ফেরত যান তাঁরা অর্থাৎ পালাবদল হয়। ফলে রামজীবনপুর পুরসভায় আসন সংখ্যা দাঁড়ায় 5-5-1।

গতমাসে তৃণমূলের কাউন্সিলর শিবরাম দাস আবার বিজেপিতে যোগদান করেন এবং তারপর থেকেই বিজেপির হাতে আসে ছটি আসন। এবং এর ওপর ভিত্তি করেই বিজেপি রামজীবনপুর পুরসভা দখল করতে আগ্রহী হয়। গত এক মাস ধরে এই সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে বোর্ড গঠন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল বিজেপি। বুধবার প্রশাসনিক নিয়ম মেনে সংখ্যাগরিষ্ঠ বিজেপি কাউন্সিলররা রামজীবনপুর পুরসভা বোর্ড গঠন করার সিদ্ধান্ত নেয়। এবং ঘোষণা করে। পুরপ্রধান নির্বাচিত হন গোবিন্দ মুখার্জি নামক এক প্রবীণ বিজেপি কাউন্সিলর।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

বিজেপির এই কাজে তৃণমূল আপত্তি জানায়। তৃণমূলের তরফ থেকে বলা হয়, মহকুমা শাসকের অনুমতি না নিয়েই রামজীবনপুর পুরসভায় বিজেপি বোর্ড গঠন করেছে। বোর্ড গঠন করতে গেলে কিছু আইনি পদ্ধতি মানার দরকার। বিজেপি তা মানেনি বলে তৃণমূলের দাবি। তৃণমূল অভিযোগ করে, বিজেপির কাউন্সিলররা তৃণমূল পুরপ্রধান এর ঘরে ঢুকে তৃণমূল প্রধানের বোর্ড ভেস্তে দিয়েছে। সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন ফাইলপত্র। আর এর পরেই বিকেলে তৃণমূলের কাউন্সিলরসহ পুরপ্রধান চন্দ্রকোনা থানায় বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। বেআইনিভাবে পুরপ্রধান এর ঘরে ঢুকে নথিপত্র তছনছ করা সহ বিভিন্ন ক্ষয়ক্ষতির অভিযোগ করা হয় বিজেপি কাউন্সিলরদের বিরুদ্ধে। পুলিশের পক্ষ থেকে বিজেপির ছয় কাউন্সিলরকে ইতিমধ্যে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

এরপর বৃহস্পতিবার পুলিশি নিরাপত্তায় রামজীবনপুর পুরসভার ঘরে প্রবেশ করেন পুরপ্রধান নির্মল চৌধুরী। এদিন তিনি সংবাদ মাধ্যমে জানান, ‘আইনের পথেই সিদ্ধান্ত হবে কে পুরপ্রধান আর কে পুরপ্রধান নয়। বেআইনি এই পদ্ধতির বিরুদ্ধে আমরা অভিযোগ করেছিলাম। বর্তমানে পুলিশ দিয়ে কাজকর্ম স্বাভাবিক করার চেষ্টা হচ্ছে।’ স্থানীয় বিজেপি নেতা নন্দ নিয়োগী জানান, ‘আমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিলাম বলে বোর্ড গঠন করেছিলাম। পুলিশ প্রশাসনের অসহযোগিতার কারণেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। এখন পুলিশ যে কাজটা করছে তাতে পরিস্কার রাজ্যে আইনের শাসন নেই। মানুষ দেখছেন।’

লোকসভা নির্বাচনের পরে যেভাবে তৃণমূল ছেড়ে একে একে শাসক শিবির থেকে বিজেপি দলে যোগদান চলছিল, তাতে রাজ্যজুড়ে রীতিমত গেল গেল রব ওঠে। এরপর ময়দানে নামেন ভোট বিশেষজ্ঞ প্রশান্ত কিশোর। তারই মস্তিষ্কপ্রসূত ‘দিদিকে বল’ জনসংযোগ কর্মসূচি এবং এনআরসি নিয়ে বিরোধিতার ফলে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে তৃণমূল রাজ্যে। এমনকি বহু জায়গায়, যেসব পুরসভা পঞ্চায়েত তৃণমূল এর হাত থেকে চলে গেছিল ঘরওয়াপসির ফলে সেগুলি আবার ফেরত আসে। কিন্তু রামজীবনপুর পুরসভায় চিত্রটা সম্পূর্ণ অন্যরকম ছিল। আপাতত আইনের সহায়তায় তৃণমূল রামজীবনপুর পুরসভা দখল করলেও সেটি কতদিন তাঁরা ধরে রাখতে পারবে সে দিকে নজর রাখছে রাজ্যের রাজনৈতিক মহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!