এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > পুরসভা নির্বাচনের আগে এবার কাউন্সিলরদের উদ্দেশ্যে কড়া বার্তা অভিষেকের

পুরসভা নির্বাচনের আগে এবার কাউন্সিলরদের উদ্দেশ্যে কড়া বার্তা অভিষেকের

পশ্চিমবঙ্গে এবার শুরু হতে চলেছে পুরসভার নির্বাচন আর কিছুদিনের মধ্যেই। আশা করা হচ্ছে, নির্বাচন কমিশন পুরসভা নির্বাচনের দিন খুব শীঘ্রই ঠিক করে দেবে। কিন্তু তার আগে থেকেই পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের মতন করে দল গোছাতে ব্যস্ত। তবে শুধু পুরসভা নির্বাচনই নয়, এর পরেই আসছে বিধানসভা নির্বাচন। আর সেদিকে তাকিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের রণকৌশল ঠিক করতে শুরু করেছে এখন থেকেই। তবে একথা ঠিক আগামী দিনের পুরভোট পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক দলগুলির কাছে বলা যায় অ্যাসিড টেস্ট।

আর সেই সূত্রেই নির্বাচনী রণকৌশল সাজাতে এবং দলীয় কার্যবিধি ঠিক করতে মঙ্গলবার দুপুরে তপসিয়ায় তৃণমূল ভবনে বৈঠকে বসেছিলেন যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীসহ তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বরা। এদিন বৈঠকে যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় পরিষ্কার করে কলকাতার কাউন্সিলরদের জানিয়ে দিলেন, পুরসভা নির্বাচনে যেন কোনভাবেই সাধারণ ভোটারদের ভোট দিতে বাধা না দেওয়া হয়। সূত্রের খবর, এদিন বৈঠকে বসে যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট করে কলকাতার কাউন্সিলরদের বলেন, ‘ভোট লুঠ করে জেতার ভাবনা মাথা থেকে বের করে দিন। ভোটে গায়ের জোর দেখাবেন না।’

যুব তৃণমূল সভাপতি এখানেই থামেননি। তিনি আরও সতর্কতাসহ কাউন্সিলরদের বলেন, ‘কেউ যেন ব্যক্তিগত স্বার্থে দলের বদনাম না করেন।’ এদিন দলীয় বৈঠকে তৃণমূলের উচ্চপদস্থ নেতৃত্বরা কাউন্সিলরদের নির্দেশ দিয়েছেন এলাকায় জনসংযোগের জন্য,কাজ করার জন্য। এ ব্যাপারে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন, ‘ভোট ঘোষণা হতে এখনও কিছুদিন বাকি আছে। আপনারা ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে নেমে পড়ুন। কিন্তু সাধারণ মানুষকে ভোট দিতে না দিয়ে জিতবেন এই ধারণা একেবারে ঝেড়ে ফেলুন।’

সূত্রের খবর, গত পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের ভোট লুট করার খবর সংবাদ শিরোনামে উঠে আসে। এ প্রসঙ্গে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, 2019 এর লোকসভা নির্বাচনের ফল ভীষণভাবে প্রভাবিত হয়েছে গত পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের ভোট লুট করার ঘটনায়। সেই ভুল যাতে আগামী পুরসভা নির্বাচন এবং বিধানসভা নির্বাচনে পুনরাবৃত্তি না হয়, সেদিকে বিশেষ নজর দিচ্ছে শাসকদল বলে দাবি রাজনৈতিক মহলের একাংশের। সূত্রের খবর, 2015 সালের পুরভোটে দেখা গিয়েছিল, উত্তরবঙ্গ ও রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলের অধিকাংশ পুরসভায় বিরোধীরা নির্বাচনে অংশগ্রহণই করতে পারেননি।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

শুধু তাই নয়, ভোটের দিনেও শাসকদলের জনপ্রতিনিধিরা রীতিমতো আস্ফালন দেখিয়েছেন। এবার সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তৃণমূলের কাউন্সিলর ও চেয়ারম্যানদের চূড়ান্ত সাবধান করা হয়েছে বলে খবর। এদিন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ভোট কৌঁশলী প্রশান্ত কিশোর, তৃণমূলের মহাসচিব ও শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, কলকাতা প্রাক্তন মেয়র তথা পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় সহ অন্যান্যরা। তবে ভোট লুটের ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের দাবি, তৃণমূল কাউন্সিলরদের মনোভাব হল কোনোভাবে যদি পুরনির্বাচন জিতে যাওয়া যায়, তাহলে পাঁচ বছরের জন্য নিশ্চিন্ত।

তবে এবার এধরনের ঘটনাগুলির উপর রাশ টানতে বদ্ধপরিকর তৃণমূল নেতৃত্ব। জানা গেছে, এর আগে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলা সভাপতিদের নিয়ে যে বৈঠক করেছিলেন, তাতে তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছিলেন ভালো কাজ না করলে কোনোভাবেই নির্বাচনে লড়াইয়ের টিকিট পাওয়া যাবে না। সেই সূত্রে মনে করা হচ্ছে, যেসব কাউন্সিলর বা চেয়ারম্যান গত পাঁচ বছরের জন্য নিজেদের আসনকে সুরক্ষিত করেছেন তাঁরাও যে এবছর নিশ্চিতরূপে নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবেন তার কোন নিশ্চয়তা নেই। অন্যদিকে, দলীয় অন্তর্ঘাত নিয়ে এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল কাউন্সিলরদের সতর্ক করেছেন প্রত্যেকবারের মতন।

তবে তৃণমূলের পক্ষ থেকে ভোট লুটের ব্যাপারে যতই কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক না কেন, অবস্থা যে শোধরাবার নয় সে ব্যাপারে নিশ্চিত করেছেন লোকসভার কংগ্রেস দলনেতা অধীর চৌধুরী। এদিন ভোট লুট এর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি নিয়ে অধীর চৌধুরী তীব্র কটাক্ষ করে তৃণমূল সম্পর্কে মন্তব্য করেন, ‘বিড়াল বলে মাছ খাব না, আঁশ ছোঁব না, কাশি যাব! ভোট লুঠ না করলে তৃণমূল পার্টিটাই উঠে যাবে।’ অন্যদিকে এ ব্যাপারে রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘ভোট লুঠ না করলে যে তৃণমূল হারে তা লোকসভায় প্রমাণ হয়ে গেছে। আর ওরা চাইলেই ভোট লুঠ করতে পারবে না। ময়দানে বিজেপির কর্মীরা থাকবে। ভোটের দিন লুঠের চেষ্টা হলে যা বোঝার ময়দানেই বুঝে নেওয়া হবে।’

রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, আগামী দিনের পুরসভা নির্বাচনকে সেমিফাইনাল ম্যাচ হিসেবে ধরে শাসক শিবির চলতে চাইছে। সে দিক দিয়ে দেখতে গেলে এই নির্বাচনের গুরুত্ব রাজনৈতিক শিবিরের প্রত্যেকের কাছেই যথেষ্ট। আর কয়েক দিনের মধ্যেই হতে চলা রাজ্যের পুরসভার নির্বাচন নিয়ে রাজ্যের প্রধান রাজনৈতিক শিবিরগুলির অন্দরে সাজো সাজো রব। আর তারই পরিপ্রেক্ষিতে এবার রাজনৈতিক দলগুলি নিজেদের জনসমর্থন মেপে নিতে প্রস্তুত হচ্ছে। অন্যদিকে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, বিধানসভা নির্বাচনের আগে পুরসভা নির্বাচন হওয়ায় আগামী দিনের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট কিছুটা হলেও স্পষ্ট হয়ে উঠবে। আর সেই প্রেক্ষাপটকে ঘিরে নিজেদের ছবি ফুটিয়ে তুলতে এই মুহূর্তে চূড়ান্ত ব্যস্ততা প্রতিটি রাজনৈতিক দলের মধ্যে। আপাতত পরিস্থিতি কোন দিকে এগোচ্ছে, সেদিকে নজর রাখবে ওয়াকিবহাল মহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!