এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > পুরভোটের আগেই সাংবাদিক সম্মেলনে উত্তপ্ত মন্তব্য বিজেপি নেতার, নিশানায় উর্দিধারী পুলিশ

পুরভোটের আগেই সাংবাদিক সম্মেলনে উত্তপ্ত মন্তব্য বিজেপি নেতার, নিশানায় উর্দিধারী পুলিশ

রাজ্যের পুরভোট আপাতত পাখির চোখ বিজেপি শিবিরের কাছে। আগামী দিনের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি এই মুহূর্তে সম্পূর্ণ মনোনিবেশ করেছে আগামী দিনের পুরসভার নির্বাচন ঘিরে। এই পুর নির্বাচন জেতার জন্য ইতিমধ্যে বিজেপি শিবিরে তুমুল ব্যস্ততা শুরু হয়ে গেছে। গত লোকসভা নির্বাচন মিটতেই দেখা গিয়েছিল রাজ্যজুড়ে গেরুয়া হাওয়া। এবার সেই হাওয়াকেই আবারও পশ্চিমবঙ্গের পালে লাগানোর জন্য উঠে পড়ে লেগেছে পদ্ম শিবির। অন্যদিকে, রাজ্যের শাসক দল তথা তৃণমূল শিবিরও পিছিয়ে নেই। তবে পুর নির্বাচনের প্রাক্কালে ইতিমধ্যে রাজ্য বিজেপি শিবির থেকে শাসকদলের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ নিয়ে এলো।

সম্প্রতি এক সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় অভিযোগ জানিয়েছেন, শাসক দল পুর নির্বাচন জেতার জন্য বিভিন্নভাবে বিজেপি শিবিরকে কোণঠাসা করার চেষ্টা চালাচ্ছে। শাসক দলের হাতিয়ার- মিথ্যা মামলা এবং পুলিশের অত্যাচার। এদিন কৈলাস বিজয়বর্গীয় সরাসরি পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন। তিনি বলেছেন, রাজ্যের পুরসভা নির্বাচনের আগে সম্ভাব্য বিজেপির প্রার্থী এবং উল্লেখযোগ্য কর্মকর্তাদের রাতের অন্ধকারে জোর করে বিনা অভিযোগে তুলে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। তাঁদের মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন আটকে রেখে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে কোন মামলা রুজু না করেই।

এছাড়াও শাসকদল জোরজবরদস্তি বিজেপি শিবির থেকে লোক টানার চেষ্টা করছে নিজেদের দলে। এ প্রসঙ্গে এদিন কৈলাস বিজয়বর্গীয় সরাসরি অভিযোগের তীর নিশানা করেছেন বিধাননগরের পুলিশ কমিশনারের দিকে। তিনি নাম করেই হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ‘এরকম হলে ব্যবস্থা নিতে আমরা দেরি করবো না।’ এদিন রাজ্য পুলিশের একাংশের বিরুদ্ধে কৈলাস বিজয়বর্গীয় ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তিনি রীতিমত ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘শাসকদলের হয়ে কাজ করে রাজনীতি করছেন পুলিশ আধিকারিকরা। যাঁরা এসব করছেন শুনে রাখুন, বাংলা থেকে তৃণমূল সরকার চলে যাবে। বিজেপি ক্ষমতায় আসবে। তখন ওই সমস্ত পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এদিন কৈলাস বিজয়বর্গীয় রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনে বলেন, পশ্চিমবঙ্গে কোনোভাবেই শাসকদল অবাধ নির্বাচন হতে দেবে না। সামনেই রাজ্যের দোরগোড়ায় পুরসভা নির্বাচন এবং কলকাতা কর্পোরেশনের নির্বাচন আছে। এই দুই নির্বাচনের কথা মাথায় রেখেই ইতিমধ্যে প্রস্তুতি শুরু করেছে রাজ্যের রাজনৈতিক দলগুলি। এই পরিস্থিতিতে কৈলাস বিজয়বর্গীয় জানান, ‘স্থানীয় প্রশাসনে নির্বাচন বাংলায় কীভাবে হয় তা আমরা আগেই দেখেছি।’

অন্যদিকে এদিন সাংবাদিকদের মধ্য থেকে প্রশ্ন তোলা হয় প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বিজেপি শিবিরে সক্রিয়তা সম্পর্কে। এ প্রশ্নের উত্তরে কৈলাস বিজয়বর্গীয় রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ এবং বিজেপি নেতা মুকুল রায়কে উল্লেখ করে মন্তব্য করেন, ‘এ বিষয়ে দলের দুই শীর্ষনেতা দিলীপদা ও মুকুলদা কিছু ভাবনা-চিন্তা করেছেন। সেটা নিয়ে আমরা বৈঠকে আলোচনা করব।’ উল্লেখ্য এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে কৈলাস বিজয়বর্গীয় সাথে একই মঞ্চে ছিলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ এবং দলের জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য মুকুল রায় প্রমুখরা।

অন্যদিকে, কৈলাস বিজয়বর্গীয়র সাংবাদিক সম্মেলনের পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, যে রাজনৈতিক দলই পশ্চিমবঙ্গে আসুক না কেন, বিরোধীদের টার্গেট সব সময় উর্দি পরা পুলিশই হয়। তবে এ প্রসঙ্গে রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি, এই মুহূর্তে সংশোধনী নাগরিকত্ব আইন এবং জাতীয় নাগরিকপঞ্জি নিয়ে বিজেপি শিবির সারাদেশে যথেষ্ট কোণঠাসা অবস্থায় রয়েছে। তাই পশ্চিমবঙ্গের আসন্ন পুর নির্বাচন ঘিরে তাঁদের মনে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। যে কারণে এই ধরনের মন্তব্য আসছে পদ্ম শিবির থেকে। তবে এই মুহূর্তে বিজেপি শিবির তাঁর সংগঠনকে মেপে নেওয়ার কাজে নেমেছে। আপাতত আগামী দিনের পরিস্থিতি কি হতে চলেছে সেদিকে নজর রাখছে ওয়াকিবহাল মহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!