পুরভোটের মুখে তৃণমূল শিবিরে ব্যাপক ধ্বস, বড় সংখ্যার তৃণমূল নেতা-কর্মীদের যোগ বিজেপিতে নদীয়া-২৪ পরগনা রাজ্য March 5, 2020 2019 এর লোকসভা নির্বাচনের পর দেখা গিয়েছিল, বিভিন্ন দল থেকে নেতাকর্মীরা বিজেপিতে যোগদান করছেন। তবে সম্প্রতি দেখা যাচ্ছিল বিজেপি থেকে ক্রমাগত নেতা এবং কর্মীরা বেরিয়ে গিয়ে অন্য দলে যোগদান করছেন। স্বাভাবিকভাবেই এই দলবদল এর ঘটনাগুলি বিজেপি শিবিরে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছিল। তবে এদিন সম্পূর্ণ উল্টো ঘটনা ঘটলো হাবরা ও অশোকনগর বিধানসভা এলাকায়। এই দুই বিধানসভায় বেশ বড় সংখ্যার তৃণমূল নেতা-কর্মী-সমর্থকরা যোগ দিলেন এদিন বিজেপিতে। উল্লেখ্য, আর কিছুদিনের মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গে শুরু হতে চলেছে পুরসভার নির্বাচন আর সেই সন্ধিক্ষণে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে প্রবেশ খুব স্বাভাবিক ভাবেই বিজেপিকে বেশ কিছুটা এগিয়ে রাখল বলে দাবি রাজনৈতিক মহলে। এই ঘটনায় বিজেপি শিবিরে স্বভাবতই খুশীর হাওয়া। সূত্রের খবর, পুরসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে তৃণমূল শিবিরে এবার বড়োসড়ো ধ্বস। জানা গেছে, এ দিন হাবরা ও অশোকনগর বিধানসভা এলাকা থেকে প্রায় 600 জন তৃণমূল নেতাকর্মী যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে। বারাসাত সুভাষ ইনস্টিটিউট হলে এক অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে তৃণমূল কর্মীরা বিজেপিতে যোগদান করেন। তাঁদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন বিজেপির বারাসাত সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শংকর চ্যাটার্জী। এই দলবদলকারীদের মধ্যে রয়েছেন উল্লেখযোগ্যভাবে হাবরা টাউন তৃণমূল এর কার্যকরী সভাপতি পরেশ দাস। এই ঘটনা সামনে আসার সাথে সাথেই তৃণমূলের অন্দরে শুরু হয়েছে চাপানউতোর। জানা গেছে, পরেশ দাস এর নেতৃত্বেই হাবরায় এত বিপুল তৃণমূল কর্মী সমর্থক রাতারাতি বিজেপিতে যোগদান করলেন। অন্যদিকে, অশোকনগর টাউন তৃণমূল এর সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম চক্রবর্তীর নেতৃত্বেও বেশকিছু তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা যোগ দিলেন বিজেপিতে বলে জানা গেছে। তবে শোনা যাচ্ছে, তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে সিপিএমের বেশকিছু নেতাকর্মীও এদিন বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে বিজেপির বারাসাত সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শংকর চ্যাটার্জী জানিয়েছেন, “যাঁরা আমাদের দলে নাম লেখাল, তাঁদের মধ্যে তৃণমূলের কয়েকজন কার্যকর্তা রয়েছে । এর ফলে আমাদের দল আরও শক্তিশালী হবে । তৃণমূল তাঁদের সব ভালো নেতৃত্বকে খোয়াল৷” মূলত নাগরিকত্ব ইস্যু নিয়ে তৃণমূলের দ্বিচারিতাকেই শংকর চ্যাটার্জ্জী দায়ী করছেন এই দলবদল এর কারণ হেতু। তিনি এদিন তৃণমূলের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে বলেন, “তৃণমূলে তোষণের রাজনীতি চলছে । সেখানে কোনও ভালো লোকের জায়গা নেই । মূলত শাসকদলের সিএএর বিরোধিতার কারণেই তাঁরা যোগ দিলেন গেরুয়া শিবিরে৷” তবে এদিন বারাসাতের সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শংকর চ্যাটার্জী দাবি জানান, আগামী দিনে আরও তৃণমূল নেতাকর্মী এসে বিজেপিতে যোগ দেবেন সে ব্যাপারে নিশ্চিত। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - আরো বেশি সংখ্যক তৃণমূল নেতাকর্মীদের বিজেপিতে যোগদানের ব্যাপারে তিনি এদিন জানান, “জ্যোতিপ্রিয়র ব্যবহার, বডি ল্যাঙ্গুয়েজ ও CAA নিয়ে মিথ্যাচারের জন্য শাসকদলের একাধিক নেতা-কর্মী ক্ষিপ্ত । হাবরা বিধানসভা এলাকা থেকে হাজারের বেশি যোগদানের কথা ছিল । কিন্তু রাত থেকেই পুলিশ দিয়ে নাকা চেকিং করে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক । তার ফলে অনেকের পক্ষেই যোগ দেওয়া সম্ভব হয়নি । তবে, আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই জ্যোতিপ্রিয়র গড় থেকে দু-হাজারেরও বেশি নেতা ও কর্মীকে যোগদান করাব৷” এ প্রসঙ্গে শংকরবাবু সরাসরি রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন। শুধু এই বলে এখানেই শংকরবাবু থামেননি। তিনি যে পরবর্তীতে হাবড়া পৌরসভা দখলের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাও জানিয়ে দিয়েছেন। অন্যদিকে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগদান করে পরেশ দাস জানিয়েছেন, “নীতিগত বিরোধের কারণেই তৃণমূল ছাড়তে বাধ্য হলাম । সিএএ ও এনআরসি নিয়ে দ্বিচারিতা চলছে । 2005-2006 সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই অনুপ্রবেশকারী নিয়ে সবর হয়েছিলেন লোকসভায়। এখন তিনি উলটো কথা বলছেন । তাঁর প্রতিবাদ জানাচ্ছে সাধারণ মানুষ ৷” বর্তমানে কিছু সময় ধরে বিজেপিতে ভাঁটার টান এলেও সম্প্রতি হাবরা ও অশোকনগরে যে বিপুল কর্মী যোগদান করলেন এদিন বিজেপিতে, তার ফলে বিজেপি শিবিরে আবারও জোয়ারের টান বলে দাবি করছে রাজনৈতিক মহল। পুরসভার নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে ইতিমধ্যে তৃণমূল সরকার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। আর তারই মাঝে তৃণমূল শিবির থেকে এভাবে ব্যাপক আকারে দলবদল এর ধাক্কা যথেষ্ট চাপে ফেলবে শাসক দলকে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। অন্যদিকে, হাবরা পুরসভায় যে বিপুল দলবদল হল তার প্রভাব আগামী দিনের পুরসভা নির্বাচনের ওপর বিপুলভাবে পড়বে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। আপনার মতামত জানান -