নিশীথকে আটকাতে কি হিমশিম খাচ্ছে তৃণমূল? রবীন্দ্রনাথ-উদয়নের জোড়া আক্রমণে শোরগোল উত্তরবঙ্গে উত্তরবঙ্গ রাজ্য June 6, 2020 করোনা ভাইরাসকে আটকাতে লকডাউনের সময় মানুষের পাশে দাঁড়াতে উদ্যোগী শাসক-বিরোধী প্রতিটা রাজনৈতিক দল। প্রত্যেকেই এই সময়কে বেছে নিয়ে নিজেদের জনদরদি নেতা হিসেবে প্রমাণ করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। আর মানুষের দিকে সাহায্যের হাত বাড়ানোর পাশাপাশি একে অপরের বিরুদ্ধে কটাক্ষ করতেও দেখা যাচ্ছে শাসক থেকে বিরোধী দলের নেতাদের। আর এমনই আবহে এবার তীব্র শোরগোল ছড়িয়ে পড়ল কোচবিহার জেলা রাজনীতিতে। গত লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্র দখল করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি সাংসদ হয়েছেন প্রাক্তন তৃণমূল নেতা নিশীথ প্রামানিক। আর বর্তমানে করোনা ভাইরাসের সময় মানুষের দুঃসময়ে তিনি বাড়িতে বসে ছবি আঁকছেন, গান গাইছেন বলে অভিযোগ করে সেই নিশীথ প্রামাণিককে কোণঠাসা করার উদ্যোগ নিল তৃণমূল কংগ্রেস। একদিকে রাজ্যের উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ এবং অন্যদিকে দিনহাটা তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহ, এই দুই ব্যক্তি এখন সেই নিশীথ প্রামাণিককে কোণঠাসা করার প্রচেষ্টা চালাতে শুরু করেছেন। যার ফলে শোরগোল পড়ে গিয়েছে কোচবিহার জেলা রাজনীতিতে। এদিন এই প্রসঙ্গে সাংবাদিক সম্মেলন করে কোচবিহারের বিজেপির সাংসদের বিরুদ্ধে সরব হন রাজ্যের উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তিনি বলেন, “দানের জন্য সদিচ্ছা থাকা চাই। শুধু ভিডিওতে ছবি তুলে মানুষকে বিভ্রান্ত করা, এটাকে মানুষের পাশে দাঁড়ানো বলে না। এমপি ঘরে বসে ছবি আঁকেন, স্যানিটাইজার তৈরি করছেন। এই যদি একজন এমপির কাজ হয়, তাহলে তিনি বাইরে কখন বেরোবেন! ওর কেন্দ্রে সাতটা বিধানসভার এলাকা আছে। কোথায় কি হচ্ছে, কোনো খোঁজ নেই। শুধু বিবৃতি দেওয়া আর ভিডিও করাই ওনার কাজ।” আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - একইভাবে নিশীথ প্রামাণিকের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন দিনহাটার তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহ। তিনি বলেন, “এই দুর্দিনে মানুষের পাশে না দাঁড়িয়ে প্রচারের আলোয় আসার জন্য চালের বস্তা ঘাড়ে নিয়ে ভিডিও করে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করছেন। কেউ না থাকলেও তার ছবিগুলো যিনি তুলেছিলেন, তিনি তো চালের বস্তা নিয়ে যেতে সাহায্য করতে পারতেন। তা না করে ভিডিও তুলে উনি নিজেকে মহান দেখাতে চাইছেন। ত্রাণের বিকল্প গান হতে পারে না। এমপি কিছু করুন বা না করুন, লকডাউনটা উনি খুব ভালো করে মানছেন।” আর কোচবিহারের বিজেপির সাংসদের রাস্তায় না নামায় নিয়ে যেভাবে তৃণমূলের দুই হেভিওয়েট নেতা তাকে কটাক্ষ করলেন তাতে কিছুটা হলেও চাপে পড়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি। তবে রবীন্দ্রনাথবাবু থেকে শুরু করে উদয়নবাবু একথা বললেও নিশীথ প্রামাণিকের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, তৃণমূলের পক্ষ থেকে তাকে ত্রাণ দিতে দেওয়া হচ্ছে না। এদিন কোচবিহারের বিজেপি সাংসদ বলেন, “পুলিশ প্রশাসন বেরোতে না দিলে কি করা যাবে! ফলে যেভাবে মানুষের মনে সাহস যোগানো যায়, সেই চেষ্টা করছি।” তিনি আরও বলেন, “সুকৌশলে যেভাবে মানুষের কাছে ত্রান পৌঁছে দেওয়া যায়, সেই কাজ আমি করছি। আমাদের সাংগঠনিক পদ্ধতিতে এসব করছি। প্রকাশ্যে ত্রাণ নিয়ে পৌঁছলাম, ত্রানের সঙ্গে ছবি দিলাম, সেটা কোনো কথা নয়। ওরা কি বললেন, তাতে আমার কিছু যায় আসে না।” একইভাবে রবীন্দ্রনাথ ঘোষ এবং উদয়ন গুহ নিশীথ প্রামাণিককে কটাক্ষ করলেও, তার পাল্টা জবাব দিয়েছেন কোচবিহার জেলা বিজেপির সভানেত্রী মালতি রাভা রায়। এদিন তিনি বলেন, “এমপিকে আক্রমণ করে যারা গরম গরম কথা বলছেন, তারা এমন ছবি এঁকে বা গান দিয়ে দেখান দেখি।” আর এখানেই প্রশ্ন উঠছে কুচবিহারের রাজনৈতিক মহলে। লোকসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল দাবি করেছিল – এই জেলায় কোথাও বিজেপির চিহ্ন নেই! অথচ এখন বিজেপি সাংসদকে আক্রমন করছেন একযোগে দুই হেভিওয়েট নেতা! তাহলে কোথাও গিয়ে কি নিশীথ প্রামানিক তৃণমূলের বড়সড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠছেন? সব মিলিয়ে এখন ত্রাণ দেওয়া নিয়ে শাসক-বিরোধী তরজায় রীতিমত উত্তপ্ত কোচবিহার জেলা রাজনীতি। আপনার মতামত জানান -