এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > মালদা-মুর্শিদাবাদ-বীরভূম > রবির দেশে মানসিকভাবে শিশু নির্যাতনের অভিযোগ, বড়সড় পদক্ষেপ শিক্ষা দফতরের

রবির দেশে মানসিকভাবে শিশু নির্যাতনের অভিযোগ, বড়সড় পদক্ষেপ শিক্ষা দফতরের

শিশুদের ওপর মানসিক নির্যাতনের ঘটনা প্রায়শই শোনা যায় বিভিন্নভাবে। তাদের বিকৃত মানসিকতার শিকার হতে হয় কখনো ঘরে কখনো বাইরে। যে শিশুদের মনে একটা স্বচ্ছতা থাকে, এইসব ঘটনা ঘটার পরে স্বচ্ছতা দূর হয়ে শিশুদের মনে গভীর ছাপ পড়ে বলে মনোবিদরা মনে করেন। এবার এরকমই একটি ঘটনা ঘটলো শান্তিনিকেতনের মকরমপুরের একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে। কলকাতার বিভিন্ন স্কুলে শিশু নিগ্রহের কথা আমরা আগেই শুনেছি, এবার রবির দেশে এ ধরনের ঘটনা ঘটায় সমাজবিদদের মধ্যে তীব্র সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

সোমবার শান্তিনিকেতনের মকরামপুর এর একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে খুদে ছাত্রীরা স্কুলে আসার পর তাদের প্যান্ট খুলে নেওয়া হয়। এই অবস্থাতেই তাদের ক্লাস করাতে বাধ্য করেন ক্লাস টিচার। এই ঘটনা ছড়িয়ে পড়ার পরেই স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েছে অভিভাবক মহল। স্কুল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, সপ্তাহের দ্বিতীয় দিনে স্কুলে রঙিন ড্রেস পড়ে এসেছিল ওই খুদে ছাত্রীরা। যার ফলে ক্লাস টিচারের ক্ষোভের মুখে পড়ে তারা। ছোট ছোট শিশু গুলো বুঝতে পারে না কি কারনে তাদের এ ধরনের মানসিক নির্যাতনের শিকার হতে হল।

মঙ্গলবার বোলপুরের এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর নিন্দার ঝড় বয়ে গেছে শিক্ষা মহল থেকে সামাজিক স্তর সর্বত্র। রাজনৈতিক মহলেও এই ঘটনা সামনে আসার পর নিন্দার ঝড় বয়ে গেছে। ঘটনায় ক্ষুব্ধ শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে এ ঘটনা সম্পর্কে সম্পূর্ণ রিপোর্ট চেয়ে পাঠান। অন্যদিকে, ওই অভিযুক্ত ক্লাস টিচারের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবি করে অভিভাবকরা স্কুলের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। সোমবার স্কুলে হাজির হন শিক্ষা মন্ত্রীর নির্দেশে বীরভূম জেলা শাসকের নেতৃত্বাধীন একটি তদন্তকারী দল। এই তদন্তকারী দল টি মঙ্গলবার ঠিক কী ঘটেছিল, সে সম্পর্কে সম্পূর্ণ তদন্ত করে শিক্ষামন্ত্রীকে রিপোর্ট দেবেন বলে জানা গেছে‌।

জেলাশাসকের তদন্ত রিপোর্ট আসার পরেই শিক্ষা মন্ত্রী ওই অভিযুক্ত স্কুল শিক্ষকের স্কুল শিক্ষিকার বিরুদ্ধে শাস্তিযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে জানা গেছে। তদন্ত কমিটিতে ডিএম ছাড়াও আছেন শিশু সুরক্ষা কমিশনের আধিকারিকরা। শিক্ষা মন্ত্রী এই ঘটনার সম্পূর্ণ তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন ও শাস্তির কথাও বলেছেন। তবে শুধু যে মুখের কথায় এবার আর কিছু হবেনা তা বিলক্ষন টের পাচ্ছে সরকারী মহল। কারণ এবার নিগ্রহের শিকার নয় নয় করেও প্রায় ৩০ টি শিশু।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

প্রসঙ্গত শান্তিনিকেতনের মকরামপুর এর ওই বেসরকারি স্কুলের নিয়ম অনুযায়ী প্রত্যেক দিন আলাদা আলাদা রঙের ইউনিফর্ম পড়তে হয়। এই নিয়ম অনুযায়ী সোমবার যে রংয়ের ইউনিফর্ম পড়ার কথা তা ওই শ্রেণীর ছাত্রীরা পড়েনি বলে অভিযোগ। সেকারণেই ক্লাসটিচার তাদের পরনের লেগিন্স খুলে নেয়। শুধু তাই নয়, এই অবস্থাতেই তাদের স্কুল করতে বাধ্য করা হয়। এবং স্কুলের শেষে তাদের অভিভাবকদের হাতেও একই অবস্থায় তুলে দেওয়া হয়। আর এরপরই অভিবাবকরা স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েন।

স্কুল কর্তৃপক্ষ পুরো ব্যাপারটিকে শাস্তির মোড়কে মুড়ে যুক্তি দেখানোর চেষ্টা করেছেন এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার। ইতিমধ্যে, স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিবাবকরা দাবি করেছেন ওই স্কুলের প্রিন্সিপালকে অবিলম্বে বরখাস্ত করতে হবে। ঘটনার কথা সামনাসামনি হওয়ার পর বীরভূমের বোলপুরে ছড়ায় চরম উত্তেজনা, যার রেশ এখনো বর্তমান। অন্যদিকে বেশ কিছু মনস্তত্ত্ববিদ দাবি করেছেন, শিশুদের ওপর এ ধরনের ঘটনা ঘটলে তাদের মনে দীর্ঘকালীন ছাপ ফেলে। যার ফলে, তাঁরা বড় হলেও এই ধরনের ঘটনা তাঁদের মনে দীর্ঘকালীন ছাপ ফেলে।

শিশুদের সুরক্ষা স্থান হল দুটি। একটি হচ্ছে তার বাবা-মায়ের আশ্রয়স্থল, অন্যটি যেখানে সে দিনের বেশিরভাগ সময় কাটায় অর্থাৎ স্কুল। সেই স্কুলে যদি এ ধরনের বিকৃত ঘটনা ঘটে, তাহলে শিশুদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায় বলে মনে করছেন মনস্তত্ত্ববিদরা। আপাতত অপেক্ষা দেখার, প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই ধরনের ঘটনা ঘটায় কিরকম শাস্তির মুখোমুখি হবেন ওই স্কুল এবং স্কুল শিক্ষিকা। তবে অভিভাবক মহলে শিশুদের নিরাপত্তা নিয়ে একটা অরম আতঙ্ক গ্রাস করেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!