এখন পড়ছেন
হোম > জাতীয় > এবার আদালত অবমাননার দায়ে রাহুলকে নোটিস পাঠাল শীর্ষ আদালত

এবার আদালত অবমাননার দায়ে রাহুলকে নোটিস পাঠাল শীর্ষ আদালত

এবারের নির্বাচনের আগে নরেন্দ্র মোদির ‘ট্যাগলাইন’ ছিল ‘ম্যায় ভি চৌকিদার হু’ – আর নরেন্দ্র মোদিকে বেলাইন করতে গিয়ে পাল্টা রাহুল গান্ধী ‘ট্যাগলাইন’ বানান ‘চৌকিদার চোর হ্যায়’ – এতদূর পর্যন্ত বোধ হয় ঠিকই ছিল রাজনৈতিক যুদ্ধের পরিমন্ডলে। কিন্তু তারপরে রাহুল গান্ধী যেটা করলেন – তাতে বোধহয় নিজের রাজনৈতিক ‘বালখিল্যতা’ আবারো প্রকট করে দিলেন বলেই ধারণা রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের! একই সঙ্গে, তাঁর কথায় ‘অনুপ্রাণিত’ হয়ে যে সব বিরোধীরা ‘চৌকিদার চোর হ্যায়’ বলে সোল্লাসে প্রচার চালাচ্ছিলেন দেশের প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তাঁদেরও বোধ হয় ঠেলে দিলেন ব্যাকফুটে।

প্রসঙ্গত, রাহুল গান্ধী উঠেপড়ে লেগেছিলেন – নরেন্দ্র মোদী রাফাল চুক্তিতে দেশের বৃহত্তম আর্থিক কেলেঙ্কারি করেছেন বলে প্রমান করতে। এর আগে, কখনও সংসদে, কখনও বা সাংবাদিক বৈঠকে – একাধিক নথি দেখিয়ে প্রমান করতে চান তাঁর তত্ব। কিন্তু, কোথাও তিনি ‘সলিড প্রুফ’ দিতে পারেননি, উল্টে প্রতি জায়গাতেই তাঁকে কার্যত নাকানি চোবানি খেতে হয়েছে ও শেষপর্যন্ত নিজের বক্তব্য থেকে সরে আসতে হয়েছে। শেষে মরিয়া হয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করলে – সেখানেও বিশেষ সুবিধা করতে পারেননি – কাজেই সবাই যখন ধরে নিয়েছিল এবার বোধহয় হতোদ্যম হয়ে – রণে ভঙ্গ দেবেন রাহুল গান্ধী, তখনই তিনি নতুন কিছু নথি নিয়ে পুনরায় মামলা করেন সুপ্রিম কোর্টে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

রাষ্ট্রের সুরক্ষার কথা তুলে, দেশের সর্বোচ্চ আদালতকে ওই নথি গ্রহণ না করতে অনুরোধ করা হয় কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে। কিন্তু, নিরপেক্ষ বিচারের স্বার্থে, সুপ্রিম কোর্ট সেই নথি ও মামলা – উভয়ই গ্রহণ করেন। আর এরপরেই সোল্লাসে সাংবাদিক বৈঠ করে রাহুল গান্ধী জানিয়ে দেন, সুপ্রিম কোর্টও মেনে নিয়েছে ‘চৌকিদার চোর হ্যায়’ – যা তিনি দীর্ঘদিন ধরেই দাবি করে আসছিলেন। রাহুল গান্ধীর এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপি নেত্রী তথা সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী মীনাক্ষী লেখী রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করেন। এনিয়ে রাহুল গান্ধীর কাছ থেকে লিখিত জবাব তলব করে শীর্ষ আদালত, আর এদিন তার জবাব দেন তিনি।

সেখানে রাহুল গান্ধী দেশের সর্বোচ্চ আদালতকে জানান, নির্বাচনী সভা করার সময়ে উত্তেজনার বশে ওই মন্তব্য করেছিলাম। বিরোধীরা আমার ওই মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করেছে। কখনওই একথা বলতে চাইনি যে সুপ্রিম কোর্টে বলেছে, ‘চৌকিদার চোর হ্যায়’, গোটা বিষয়টির জন্য আমি দুঃখিত।

এর রেস্ মিটতে না মিটতেই আমেঠির সভায় রাহুল বলেছিলেন রাফাল ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীকে সুপ্রিম কোর্টও চোর বলেছে। রাহুলের এই মন্তব্যের পরই তাঁর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করেন এক বিজেপি সাংসদ। সেই মামলায় রাহুল হলফনামা দিয়ে সুপ্রিম কোর্টের কাছে তাঁর মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়ে নেন। তারপর এদিন তাঁকে অপরাধমূলক অবমাননার নোটিস পাঠিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ফলে দেশের শীর্ষ আদালত সম্বন্ধে এমন বেফাঁস মন্তব্যের জেরে ভোটের মধ্যে যথেষ্ট বেকায়দায় পড়লেন কংগ্রেস সভাপতি।

এদিকে রাহুল গান্ধীকে এই সমস্যা থেকে বাঁচাতে কংগ্রেসের তরফে অভিষেক মনু সিংভি ইতিমধ্যেই বোঝানোর চেষ্টা করেছেন চৌকিদার চোর হ্যায় নেহাতই একটি রাজনৈতিক স্লোগান। সুপ্রিম কোর্টের কাছে এ নিয়ে দল বিস্তারিতভাবে বুঝিয়ে চিঠি দিয়েছে। দরকারে আরও সবিস্তারে কংগ্রেস এ বিষয়ে জানাতে প্রস্তুত।

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, নির্বাচনী পারদ যেখানে রোজই উর্ধমুখী তীব্রভাবে – সেখানে নিজের কথার জালেই জড়িয়ে গিয়ে বিজেপি শিবিরের কাছে কার্যত মাথা ঝুঁকিয়ে ‘অনুতাপ’ প্রকাশ করতে হওয়ায় ভোটযুদ্ধে বহু যোজন বোধহয় পিছিয়ে পড়লেন রাহুল গান্ধী! কেননা, এখন যে কোন জনসভায় ‘চৌকিদার চোর হ্যায়’ আওয়াজ তুলতে গেলে তা কার্যত ‘বুমেরাং’ হয়ে যাবে তাঁর কাছে। আর তাই সব মিলিয়ে কার্যত খুশির হাওয়া গেরুয়া শিবিরে।

 

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!