এখন পড়ছেন
হোম > অন্যান্য > রাই-কেশব (লাভ স্টোরি ) কলমে – অপরাজিতা = পর্ব ১৩

রাই-কেশব (লাভ স্টোরি ) কলমে – অপরাজিতা = পর্ব ১৩


রনো – ভাবিনি, তবে শেষ দেখে ছাড়বো , ঠিকই বলছে রাহুল। আমাকে না করার কারণ যদি আমার মা হয় তাহলে কোনো কথা আমি শুনবো না। হয় ও হ্যাঁ বলবে  ………………

রাহুল – ইয়েস, ভেঙে পড়লে হবে না। ভাব , ভাব

রনো – আমাকে একটু একা ভাবতে দাও প্লিজ।

প্রিয়াঙ্কা – কিন্তু খাবে না। খেয়ে এসে ভাববে।

রনো – না ভালো লাগছে না।

প্রিয়াঙ্কা – ভালো লাগছে না বললে শুনবো না। আচ্ছা তোমাকে আর যেতে হবে না। আমি খাবার ঘরে পাঠিয়ে দিচ্ছি খেয়ে নিও। আর শোনো কি ভাবলে বোলো।

প্রিয়াঙ্কা আর রাহুল ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো।

বেরিয়ে দেখলো অনিমেষ অদিতি। কি হলো এখনো ওরা কেন এলোনা সেটা জানতে। তাছাড়া শ্রী কি বলেছে সেটাও জানার জন্য মনটা ছটফট করছিলো অদিতি আর অনিমেষের তাই ওরা এসেছে। অনিমেষ ইতিমধ্যেই প্রিয়াঙ্কার কাছে সবটা শুনেছে।

অনিমেষ – কি হলো ওখানে ?

প্রিয়াঙ্কা সব বললো।

অদিতি – আবার প্ল্যান? মানে তোরা এবার কিডন্যাপ করবি ?
রাহুল এবার আমি কিন্তু তোদের নামে পুলিশে রিপোর্ট করবো।

প্রিয়াঙ্কা – কিডন্যাপ? যাহ।

অদিতি – দিদিভাই ওদের তুমি চেনো না, ওরা সব পারে।

রাহুল – আরে, নেড়ে বাবা। কিডন্যাপ নয়

অদিতি – আমি তোদেরকে বিশ্বাস করি না। ক্লোরোফর্মের সময়েই তাই বলেছিলো। কিন্তু আমাকে শুদ্ধ , মেরে ফেলতে ইচ্ছা করছিলো।

প্রিয়াঙ্কা – দেখো কিডন্যাপটা বাড়াবাড়ি হয়ে যাবে।

রাহুল – না গো দিদিভাই, কিডন্যাপ নয়।

অনিমেষ – কিছু হবে না , আমি আছি পাশে। দরকারে আমরাও হেল্প করবো। কি বলো পিয়া? ( প্রিয়াঙ্কাকে অনিমেষ পিয়া বলে ডাকে)

প্রিয়াঙ্কা – সে সব রকমের হেল্প করতে রাজি , তাই বলে কিডন্যাপ?

অদিতি – না আমি নেই, দিদিভাই তুমি মানা করো। যদি পুলিশ কেস হয় কি হবে বুঝতে পারছো। আমাদের ডাক্তারির রেজিস্ট্রেশন বাতিল হয়ে যাবে।

অনিমেষ – এই দাড়াও দাড়াও , বেশ কলেজ স্টুডেন্ট, কলেজে স্টুডেন্ট ফিল হচ্ছে , ভাবলেই রোমাঞ্চ। আমি আছি। আর কে পুলিশ কেস করবে ?

অদিতি – আন্টি, কারণ আন্টি তো আর এত কথা জানবে না।

রাহুল – তোমরা একটু চুপ করবে। কিডন্যাপ করে কি হবে? ও এখন যেমন না বলছে অন্য জায়গাতেই না বলবে। অন্য কিছু ভাবতে হবে।

অদিতি – সত্যি বলছিস ?

রাহুল – হুম।

অনিমেষ – যাহ, নিভে গেলাম তো। কিছু হবে না।

রাহুল – ভেবোনা, কিছু তো হবেই। রনো ঠিক একটা উপায় বের করবে।

রাহুল – ভেবে বলছি রাত্রে। ফোন নাম্বার দাও কনফারেন্সেই কথা হবে।

প্রিয়াঙ্কা – আচ্ছা খেতে চলো এবার।

খেতে গেলো সবাই। রনোকে না দেখতে পেয়ে আন্টি অনেকবার জিজ্ঞাসা করলো কেন এলো না এখানে এসে খেলে ভালো হতো ,ছেলেগুলো খুব ভালোবাসে খেতে। রাহুল রনোর জন্য খাবার আনলো। কিন্তু রনো খেতে পারলো না, শ্রীও ঘর থেকে বের হয়নি। তার নিরামিষ খাবারও ঘরে দিয়ে আসা হয়েছে।

রনোর টেনশন হচ্ছে, সাথে ভয়,দ্বন্দ্ব ,যদি এত করেও কাজ না হয়।যদি রাজি না হয় শ্রী। তাহলে ও নিজেকে…………………….

রাহুল রাত্রে দুবার জিজ্ঞাসা করেছে রানোকে কি ভাবলো , রনো বলেছে কিছু ভাবেনি।

এদিকে রাহুলকে ফোন করে অদিতি অনিমেষ জানতে চেয়েছে কি প্ল্যান হলো। রাহুল জানিয়েছে রনো কোনো কথা বলেনি কি ভাবছে।

কিন্তু রনো তো কিছুই বললো না কি ভাবছে। নানা চিন্তা নিয়ে ঘুমালো সবাই, পরের দিন রবিবার হাসপাতাল নেই।

 


 

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

সকালে রাহুল অদিতিকে কল করে বললো ঘরে রানো নেই, বাইকও দেখতে পাচ্ছে না। অদিতি শ্রীর ঘরে গিয়ে দেখলো শ্রীও নেই।
সবাই একসঙ্গে ভাবছে কোথায় যেতে পারে। রাহুলের মনে পড়লো রনো শ্রীকে কাল বলেছিলো বাক্সটা ফেরত দেবে , লেকে গিয়ে।
অনিমেষকে বললো – চলো, আর অদিতি প্রিয়াঙ্কাকে বললো তোরা লেকে আয়, বাইকে করে অনিমেষ আর রাহুল বেরিয়ে গেলো।

রনো বাইক নিয়ে লেকে গেলো , বাইক রেখে ভেতরে গিয়ে দেখলো শ্রী আগে থেকেই ওখানে গিয়ে বসে আছে। ওর মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে কাল রাত্রে ঘুমায়নি। কেঁদেছে, চোখগুলো লাল হয়ে আছে। রনো গিয়ে ওর পাশে বসলো। শ্রী ওর দিকে তাকিয়ে বললো – বাক্সটা ?

রনো – আনিনি।

শ্রী উঠে যাচ্ছিলো।

রনো – বোসো কথা আছে। শ্রী বসলো না।

রনো আবার বললো – শ্রী বোসো, কথা আছে, আমার দিব্বি।

শ্রী বসলো। রনো – শ্রী কেন এমন করছো ?

শ্রী- আমি কিছু করিনি।

রনো – করেছো, প্রিয়াঙ্কা দি সব বলেছে আমাকে , কেন তুমি না বলছো।

শ্রী ভাবেনি প্রিয়াঙ্কাদি রানোকে সব বলে দেবে, একটু অবাক হলো।

রনো – আমার মা আমাকে কতটা ভালোবাসে আমি জানিনা। বাট আমার মনে হয় আমার মা আমাকে শুধু টাকা রোজকারের মেশিন ভাবে।

শ্রী- তোমার ভুল ধারণা। সব মা তার সন্তানকে ভালোবাসে।

রনো – আচ্ছা , তোমার মা?

শ্রী – আমা… আমার কথা আলাদা।

রনো – তাহলে আমার কথাও।

শ্রী – তোমার মা ভালোবাসে বলেই আমার সাথে তোমার বিয়ে হোক চান না। কেন বুঝছো না, উনি মানবেন না। তোমাদের মধ্যে দূরত্ত্ব বাড়বে।

রনো – আচ্ছা, তাহলে মায়ের ইচ্ছা মতো আমি যাকে পছন্দ করি না, ভালোবাসিনা তাকেই বিয়ে করে আমাকে দেখাতে হবে আমি সুখী। মায়ের পছন্দ নয় তাই আমি যাকে ভালোবাসি তার থেকে দূরে চলে যাবো।তাতে আমি যতই অসুখী হই না কেন? যতই কষ্ট পাই না কেন? তাই তো।

শ্রী- বিয়ে করো ঠিক ভালোবাসবে।

রনো – ওকে তাহলে তুমি বিয়ে করো অন্য কাউকে।ভালোবাসবে তো তুমিও দেন আমি।

শ্রী- আমি দিল্লি চলে যাচ্ছি।

রনো – যাও বিয়ে করে যাও। দিল্লিতে থাকে তেমন ছেলে দেখছি।

শ্রী- কেন বুঝতে পারছো না।

রনো – না আমি বুঝবো না। আমি তোমাকে ছেড়ে থাকতে পারবো না। তুমি বিশ্বাস করো না করো এটাই সত্যি।

শ্রী একটু কড়া হয়ে বললো – আমার পক্ষে তোমার সাথে থাকা সম্ভব নয়। রনো – আচ্ছা আমাকে ভালোবাসতে পারো আর আমার সাথে বিয়ে করে থাকতে অসুবিধা। ওকে আমার সাথে যদি সম্পর্ক নাই রাখতে চাও দেন অন্য কাউকে বিয়ে করো। আমিও করছি বললাম তো।

শ্রী- আমি একা থাকতে চাই। আমি আসছি।উঠে পড়ছিলো শ্রী।

রনো -আমি কিন্তু এখনো উঠতে বলিনি। দিব্যিটা মনে আছে না মনে করবো।

ফের বসে পড়লো।বললো – আমাকে যেতে দিন।

 

রনো – আচ্ছা ফের তুমি থেকে আপনি। তাহলে তাহলে তুমি মানবে না। ওকে

পকেট থেকে একটা চিঠি বের করে শ্রীকে দিলো রনো। তাতে লেখা – “আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। ”

শ্রী – এসব কি?

রনো – আমি এখন এই লেকের জলে ঝাঁপ দিয়ে সুইসাইড করবো ,তাই চিঠিটা তোমাকে দিলাম , যাতে আমার মরার পর পুলিশ এলে তাদেরকে দিতে পারো আর আমার মাকে জানাতে পারো আমি সুইসাইড করেছি।

শ্রী- কেন এইরকম করছো ? কেন বুঝছো না।

রনো – পথে এস , তুমি করে ফের বলছো এবার বলো বিয়ে করবে।

শ্রী- আমার পক্ষে সম্ভব নয়। কেন বুঝছো না।

রনো – বুঝেছি তো তার মানে তুমি চাওনা আমি বেঁচে থাকি। সেই জন্যই – রনো নিজের ঘড়িটা খুলে টেবিলে রেখে বললো এটা ওয়াটারপ্রুফ কিন্তু ডেডবডির হাত থেকে খুলে নেবে ভালো দেখাবে না।আর এই মোবাইল আর ওয়ালেটটা দিয়ে দিও রাহুলকে। জলে পড়লে খারাপ হয়ে যাবে তো তাই। আসছি। ভালো থেকো।

শ্রী- এখানে অনেক লোক রয়েছে ,করো না এমন প্লিজ,

রনো – আমি এখন ঝাঁপ দেব তো লোকে কি করবে ?

শ্রী-দেখো অনেকে আমাকে চেনে , আন্টিকে চেনে।করোনা এমন।

রনো – আচ্ছা তার মানে আমি মরি মরবো, লোকজন সব। তাহলে তো আর বাঁচার কোনো মানেই নেই।

শ্রী – আমি জানি তুমি সাঁতার জানো। দাদু বলেছিলো তোমাদের বাড়ির পাশের পুকুরে সাঁতার কাটতে তুমি আর তোমার কাকু, প্রতিযোগিতা হতো তোমাদের।

রনো বসে পড়লো। রনো ভেবেছিলো এইভাবে শ্রী কে হ্যাঁ বলাবে। যেমন ভাবে রাহুলকে আইডিয়া দিয়েছিলো ছাত থেকে ঝাঁপ দেওয়ার। আর অদিতি হ্যাঁ বলে দিয়েছিলো ভয়ে। কিন্তু হলো না। দাদু সব ঠিক করেছে এটা ভুল করেছে।

রনো – বললো তাতে কি, তবুও ঝাঁপ দেব। জলটা ঠান্ডা। পড়লেই জমে যাবো। আর সাঁতার কাটতে পারবো না। ব্যাস।

শ্রী –  ওই জলে ঝাঁপ দিলে ঠান্ডা লেগে জ্বর হবে ,কষ্ট পাবে কিছুদিন। কেন এসব ছেলেখেলা করছো ? আমি আসছি।

রনো – শ্রীর হাতটা ধরে টেনে বসিয়ে দিয়ে বললো – কি মনে হয় তোমার আমি নাটক করছি। আমি সিরিয়াসলি বলছি। তুমি হ্যাঁ না করলে আমি সুইসাইড করবো শ্রী। ভেবে বলো। মুখ দেখলেই বোঝা যাচ্ছে ও সিরিয়াস।

শ্রী – না

রনো – ওকে,  বলে পকেট থেকে একটা ব্লেড বের করলো।

শ্রী – এতে কি হবে?

রনো –  সুইসাইড করবো হাতের শিরা কেটে, নতুন ব্লেড, একবার চালালেই শেষ। বলেই হাতটা শক্ত করে মুখ করে ব্লেডটা হাতের শিরার উপরে রাখলো।

শ্রী- কি ছেলেমানুষি করছো? কেটে যাবে সত্যি।

রনো – জানি তো। আমি তো ডাক্তার তাই ভেবোনা। কোথায় কাটলে আর বাঁচবো না সেটা জানি। আর সেই ঠিক জায়গাতেই ব্লেডটা ধরেছি।

অনিমেষ রাহুল আগেই পৌঁছেছে। অনিমেষ বললো – হাত কাটার এক্টিংটা রনো ভালোই করছে।

রাহুল – রনো এক্টিং করেনি, দাদাভাই। ও সিরিয়াস। যে জায়গায় ব্লেডটা ধরেছে যদি কাটে সত্যি রিস্ক হয়ে যাবে।

এসে পৌঁছেচে অদিতি প্রিয়াঙ্কাও।

অদিতি দেখে বললো – কি করছে রনো , সত্যিই রিস্ক হয়ে যাবে যদি ওখানে ব্লেড চালায়। বলে রানোদের দিকে যাচ্ছিলো রাহুল আটকালো – বললো – যদি এরপরেও শ্রী না বলে তাহলে অমন মেয়ের জন্য কষ্ট পাওয়ার থেকে রানোর মরে যাওয়া ভালো।

প্রিয়াঙ্কার গায়ে লেগেছে কথাটা। বললো শ্রী রানোকে ভালোবাসে।

রাহুল – তাহলে হ্যাঁ বলবে।

————————————————————————————————————————-

এদিকে রনো শ্রীকে বললো – তুমি হ্যাঁ বলছো না বলছো না।

শ্রী – দেখো আমি।

রনো – হ্যাঁ না না।

শ্রী- না ,তুমি প্লিজ …………………….

রনো – ওকে ,বলে ব্লেডটা হাতে চালিয়ে দিলো রক্ত বের হচ্ছে।

শ্রী চিৎকার করে উঠলো। কেশব, কেশব প্লিজ না। আমি মরে যাবো, করোনা বলে কাঁদতে লাগলো।

রনো – এটা পাশে কেটেছে তুমি হ্যাঁ না বললে এবার আর শুনবো না।

শ্রী- ওর দিকে তাকিয়ে মাথা নাড়িয়ে কিছু একটা বলতে যাচ্ছিলো ।

রনো -থ্যাংক ইউ , ভালো থেকো বলে হাতটা কাটতে গেলো রনো।

শ্রী – কেশব না , হ্যাঁ , হ্যাঁ ব্লেডটা ফেলে দাও।

রনো – ব্লেডটা ধরেই বললো – বিয়ে করবে ?

শ্রী- হ্যাঁ ,

রনো – আর না বলবে না।

শ্রী- না, এবার ব্লেডটা ফেলো।

রনো – আমার কাছে কিন্তু আরো ব্লেড আছে, না করলে কিন্তু আমি আবার। ..

শ্রী- হাঁপাতে হাঁপাতে বললো বলছি তো হ্যাঁ।

রনো ব্লেডটা টেবিলে রেখে দিলো।

শ্রী থরথর করে কাঁপছে এখনো। চোখ দিয়ে জল পড়ছে।

শ্রী রনোর হাতটা দেখছে।

রনো – এমন কিছু কাটেনি। কিন্তু তুমি আজ হ্যাঁ না বললে সত্যি আমি উপরে চলে যেতাম।

শ্রী ওর দিকে একটু রাগ রাগ করে তাকালো। হাতটা নিয়ে মাথায় ঠেকিয়ে কাঁদতে লাহল সাথেই এখনো কাঁপছে। ও যেন ওর উপর দিয়ে কি ঝড় গেলো।

রনো শ্রীকে চেপে জড়িয়ে ধরে বললো এত কাঁপার মতো আমি কিছু করিনি এখনো।

শ্রী কোনো সাড়া দিলো না, রনোকে জড়িয়ে ধরলো। বললো মা তো মানবে না, কি হবে এবার।

রনো – আপাতত জানিনা, ওসব ভাবতে ইচ্ছা করছে না।

শ্রী – ছাড়ো, বাড়ি চলো, ব্যান্ডেজ করতে হবে।

রনো – কিছু করতে হবে না। একটা ব্যান্ডেড লাগালেই ঠিক হয়ে যাবে।

এদিক সেই সময় অনিমেষ, অদিতি রাহুল প্রিয়াঙ্কাও এসে হাজির। রনোকে একটা গালাগালি দিয়ে রাহুল বললো লুকিয়ে এখানে এইসব হচ্ছিলো আমরা জানলে কি বাধা দিতাম বলে রনোকে জড়িয়ে ধরলো রাহুল। কংগ্রাটস ভাই। আমি খুব হ্যাপি তোর জন্য। লাভ ইউ ব্রাদার।

বাকিদের দেখে শ্রীও লজ্জা পেয়ে গেছে। মাথা নিচু করে বসে রইলো। অদিতি জড়িয়ে ধরলো।

রনো – না আমিও ভাবিনি কি করবো।

অদিতি হাতটা দেখা।

রাহুল – পাশে কেটেছে।

প্রিয়াঙ্কা –  একি শ্রী তোর সিঁথিতে তো রক্ত লেগে গেছে। বিয়েটা তো হয়েই গেছে।

রাহুল – ভালো হয়েছে নাহলে হয়তো আবার বলতো না আমি বিয়ে করবো না।

অদিতি এটাকে বিয়ে মানছে নাকি জিজ্ঞাসা কর। নাহলে হয়তো পরে বলবে মানিনা। সবাই সাক্ষী থাকবে। শ্রী বলো।

রনো – না বলবে বলুক। না মানবে না মানুক আমার কাছে কি ওই একটাই ব্লেড আছে নাকি ?

অদিতি – শ্রী- বলো মানছ ?

শ্রী- মাথা নেড়ে হ্যাঁ বললো।

রাহুল – মানে আজ থেকে তোমার হাসব্যান্ড ওয়াইফ। যা খুশি করতে পারিস। লাইসেন্স পেয়ে গেলি।

প্রিয়াঙ্কা – খুব সাহস। এতে হবে না আমরা আমাদের মেয়ের রীতিনীতি মেনে কনে সাজিয়ে সাত পাকে ঘুরিয়ে তবেই বিয়ে দেব। বলে শ্রীর পশে বসলো – শ্রী কে বললো কিরে তাই তো বাবি।

জানিনা বলে শ্রী লজ্জায় মুখটা ঘুরিয়ে নিয়ে প্রিয়াঙ্কাকে জড়িয়ে ধরলো।

রাহুল রনোকে দেখি হাতটা বলে হাতটা নিয়ে রনোর হাত থেকে রক্ত নিয়ে রাহুল অদিতিকে সিঁদুর পরিয়ে দিলো। এটার জন্য অদিতি প্রস্তুত ছিল না।

অদিতি – কি করলি এটা তুই ?

রাহুল – তোকে বিয়ে করে ফেললাম।

অদিতি – রাহুলের সোয়েটারের কলাটটা ধরে বললো – তোর লজ্জা করে না। তুই অন্য লোকের রক্ত দিয়ে আমাকে সিঁদুর পড়ালি। নিজে হাত কেটে পড়াতে পারলি না।

রনো -তুই আমাকে অন্য লোক বললি? আমি তোদের জন্য কি না করেছি।একদম ওর হয়ে নাটক করবি না।

অদিতি  – চুপ কর। এটা বিয়ে ও আমাকে এত ভালোবাসে তো নিজে হাত কেটে কেন আমাকে সিঁদুর পড়ালো না।ব্লেডটা দে ও হাত কেটে আমাকে সিঁদুর পড়াক।

রাহুল – দেখ ফের রক্ত রক্ত কান্ড ঘটবে। আন্টি দুজনের হাত কাটা দেখবে। ভালো হবে না ব্যাপারটা।

অদিতি – দেখুক।আমি সামলাবো। তুই হাত কাট।

প্রিয়াঙ্কা – আচ্ছা শোনো যখন সিঁদুরদান হয়েই গেছে আবার কি দরকার।

রনো – দেখ রক্ত নিয়ে কথা তাতে আমার হোক, ওর হোক কি এসে যায় বল। আর তাছাড়া আমি তো তোদেরকে এক করেছিলাম তাই না রাহুল।

রাহুল – হ্যাঁ সেই জন্যই তো। মানে আমাদের বিয়েটা কিন্তু আরো মজবুত হলো।

অনিমেষ – বাহ্, দুটো বিয়ে হয়ে গেলো তাহলে।

রনো শ্রীর দিকে তাকিয়ে ইশারা করলো।

শ্রী – বললো আন্টি কি বলবে? কি ভাববে ?

প্রিয়াঙ্কা – কিছু ভাববে না আমরা আছি তো?

শ্রী- তবুও। আমি কি বলবো ?

রাহুল – তোমাকে সিরিয়াসলি মেন্টাল ভাবাটা আমাদের রনোর ভুল নয়। কিছু না কিছু নিয়ে টেনশন করতেই হবে না।

শ্রী- মেন্টাল ?

রনো – না মেন্টাল মানে, তুমি উল্টো ভাবছো, আমি তোমাকে বেশি ভাবে সেটা ভাবতাম। মানে ওই কবিরা বেশি ভাবে না তেমন।

রনো রাহুলের দিকে কড়া করে তাকালো। রাহুল জিভ বের করে সরি বললো।

প্রিয়াঙ্কা – আচ্ছা এবার চলো। সবাই বাড়ি এলো।

রনো -আমি আর শ্রী একটু পরে যাচ্ছি তোমরা চলো।

প্রিয়াঙ্কা ধমক দিয়ে বললো – পরে নয় এখুনি। সাহস কম নয়।

রাহুল – সাহসের কি আছে দিদিভাই, নিজেদের বিয়ে করা বৌয়ের সাথে একটু সময় কাটাতে চাইছিলাম এই আর কি। এখানে এত লোকের মাঝে কথা বলা ছাড়া আর কী বা করবো ?

প্রিয়াঙ্কা- চুপচাপ বাড়ি চলো। সবাই বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছি। মা বাড়ি ফিরে এসে না দেখতে পেলে চিন্তা করবে।

—————————————————————————————————————————–

 

আগের পর্ব – রাই-কেশব (লাভ স্টোরি ) কলমে – অপরাজিতা = পর্ব ১২

 

অন্তিম পর্ব শীঘ্রই ——————

 

  

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!