রাই-কেশব (লাভ স্টোরি ) কলমে – অপরাজিতা = পর্ব ১ অন্যান্য অপরাজিতা গল্পে-আড্ডায় January 1, 2020 পরশু হোলি না? জিজ্ঞাসা করলো রনো। হুম, তাতে কি? উত্তর এলো অদিতির তরফ থেকে। রনো – তাতে কি মানে? রং খেলবো আবার কি ? অদিতি – বেস্ট অফ লাক রনো – বেস্ট অফ লাক মানে? এই তুই খেলবি না? অদিতি – না, আর আমি সেদিন হসপিটালেও আসছি না। রনো – আরে কেন? অদিতি – না স্পেসিফিক কোনো কারণ নেই , কিন্তু আমার ওই রং মেখে সঙ সাজাতে কোনো ইন্টেরেস্ট নেই। আর তাই আমি কোনোদিন খেলিনি, আর খেলতেও ইচ্ছুক নেই। রনো – মোস্ট আনরোমান্টিক পাবলিক, রাহুল কিছু বলে না তোকে ? অদিতি – কি বলবে? ও ২ একবার চেষ্টা করেছিল কিন্তু না পেরে হাল ছেড়ে দিয়েছে। তোরা একসাথে খেল না কে মানা করেছে। আমাকে নিয়ে টানাটানি কেন? রনো – এবারে তোকে মাখবো দাঁড়া। অবশ্য রাহুল যদি রাগ না করে? রাহুল চা টা টেবিলে রেখে বললো – সেন্টু দিস না তো। রনো – ব্যাস রাহুল অনুমতি দিয়ে দিয়েছে। দেন আমি তোকে রং মাখাবোই। অদিতি – পারবি না , শুধু শুধু চেষ্টা করবি, মন খারাপ হবে ছেড়ে দে। রনো – তুই চ্যালেঞ্জ করছিস? অদিতি – হুম, রনো – চল, বেট, ৫০০০ অদিতি ওকে। রাহুল – না ওকে নয়, রনো – তুই চুপ কর। রাহুল – না চুপ করলে হবে না। টাকাটা কমাতে হবে ? অদিতি – কেন? রাহুল – রনো জিতবে না জানি, তবুও জিতলে ওই টাকাটা তো আমার পকেট থেকে যাবে , এমাসে তোর জন্মদিন, ব্লা ব্লা অনেক কিছুতে অনেক খরচ হয়েছে, মাসের প্রায় শেষ এখন এত টাকা দিতে পারবো না। অদিতি কটমট করে তাকিয়ে বললো – মানে কি বলতে চাইছিস? আমি কোনো খরচ করি না সব তুই খরচ করিস। রনো – শান্তি, শান্তি। ওকে , আমি যদি জিতি তোরা আমাকে বিরিয়ানি খাওয়াবি , না জিতলে আমি তোদের। রাহুল – রাজি। অদিতি – না, ৫০০০ টাকাই হবে, আমি দেব যদি না জিতি। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - রাহুল, অদিতি, রনো তিনজনেই একসঙ্গে ডাক্তারি পড়েছে। তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য বিষয় নয়, দরকার ও পড়েনি তাই রাহুল অদিতির সাথে রং খেলেছে কিনা কোনোদিন জানা হয়নি। আর তাছাড়া দাদু যতদিন বেঁচে ছিল দোলে রনো বাড়ি আসতো। ফলে অদিতির রং খেলার ব্যাপারে জানতো না ও। বর্তমানে উত্তরবঙ্গের একটি হসপিটালে চাকরি করে। অদিতি, রাহুল আগে থেকেই ছিল এখানে, রনো কয়েকদিন আগে জয়েন করেছে। অদিতি পেয়িং গেস্ট হিসাবে থাকে মিসেস মুখার্জীর বাড়িতে। রাহুলও একটা বাড়ির একতলায় ভাড়া থাকে। অদিতি মাঝে মাঝে যায় ওখানে। আর এদিকে রনোও ওখানেই থাকছে অন্য একটা ঘরে। আর এখন কাজের ফাঁকে একটু ব্রেক পেয়ে তিনজনে ক্যান্টিনে চা খেতে বসেছে। রাহুল – একটা কথা বলছি রনো -রাগ করিস না। বলছি অদিতিকে রং মাখাবি মাখা, নো প্রব্লেম , কিন্তু অনেকদিন তো হলো এবার একটু কারুর সাথে এন্গেজড হলে হতো না। অদিতি – একটু কেন? পুরোই হবে। বল না মেয়ে দেখছি। রনো – না, আচ্ছা ঘর পেলি? নাহলে ৩১ সে কোথায় যাবো ? বাড়ির মালিক ঘাড় ধরে বের করে দেবে বলেছে তো ? অদিতি – তোরা খেয়ে দিয়ে রাত্রি দুটোর সময় বালতি বাজিয়ে গান করবি, উদ্দাম নাচবি আর তোদেরকে বের করবে না। আমি আমাদের মালকিনকে বলেছি ও ওই আউট হাউস টা ভাড়া দেবে বলেছে তবে নো আলকোহোল, নো সিগারেট , নো জোরে মিউজিক, ডাইনিং হলে এসে খেয়ে যেতে হবে। রাত্রে টাইম এ ঢুকতে হবে – এমার্জেন্সির জন্য যদি দেরি হয় তবে আগে থেকে বলে দিতে হবে, সেক্ষেত্রে দরজা বা খওয়ার আলাদা ব্যাবস্থা হবে। নাহলে মেইন গেটে চাবি দেওয়া থাকবে, ঢুকতে দেওয়া হবে না। রনো – আলকোহল বুঝলাম, কিন্তু সিগারেট কি দোষ করলো? আর রাত্রে টাইম এ ঢুকতে হবে মানে আমরা কি কলেজ পড়ি নাকি? অদিতি – এমার্জেন্সির জন্য যদি দেরি হয় তবে আগে থেকে বলে দিতে হবে বললাম তো। রনো – তুই অন্য জায়গা দেখ। অদিতি – আমাকে কি পেয়েছিস রে? আমি ডাক্তারি ছেড়ে এবার কে ঘর ভাড়া দেবে না দেবে সেটা খুঁজবো ? নাকি আমি ব্রোকার ? রনো – এই তুই কিছু বল। রাহুল – আমি রাজি, অদিতি আর আমি একসঙ্গে থাকতে পারবো। রনো – তোরা এক শহরে রয়েছিস একসঙ্গেই তো থাকতে প্যারিস, এত নাটকের কি দরকার তোদের ? অদিতি – নাটকের কি আছে ? আমার বাড়ি থেকে বিয়ের আগে একসঙ্গে থাকা যাবে না বলে দিয়েছে। আর ওর এখনো দিদির বিয়ে হয়নি সো ওর এখন বিয়ে দেবে না। প্রব্লেম। রনো – যে এত স্ট্রিক, সে দুটোকে একসঙ্গে থাকতে দেবে ? অদিতি – তাতে অসুবিধা নেই,একটু পটাতে হবে। ডাক্তার জানলেই বুড়ি গেলে যাবে। অনেক কিছুতে ছাড় পাবি। রনো – মানে? অদিতি – অরে বুড়ি একা থাকে, বাড়িতে ডাক্তার থাকা মানে? রনো – ও, আর কেউ তোর মতো থাকে না ? অদিতি – না, তবে ডক্টর রনো – একটা ইমার্জেন্সি এসেছে। পিছন থেকে ডাকলো নার্স। কথা তখনকার মতো বন্ধ হলো। রনোরা পরেরদিন গিয়েছিলো অদিতির মালকিনের সাথে দেখা করতে। সব ঠিক হয়ে গেছে। মালকিন জানিয়েছে ৩১ তারিখে যেন সকাল ৯ টার পর আসে কেননা তিনি ৮ টার সময় রোজ মন্দিরে যান পুজো সেরে আসতে আসতে ৯ টাই হয়। রাহুলের রং মাখানোর থেকে ঐদিন অদিতির সাথে কাটানোয় বেশি ইচ্ছা ছিল। কিন্তু হবে না অদিতি বিকেলে ছাড়া বের হবে না। কোনোবারই হয়না। যেহেতু রং মাখে না তাই রাহুলের সাথে একসঙ্গে কিছুতেই থাকবে না। একবার প্রমিস করেও রাহুল অদিতিকে রং মাখাতে গিয়েছিলো পারেনি সেটা আলাদা। তার পর থেকে আর রাহুলকে বিশ্বাস করেনা অদিতি। সেবারে ১৫ দিন কথা বলেনি, বলেছিলো ব্রেক আপ করে দেবে। অনেক করে ক্ষমা চেয়ে তারপর আবার সব ঠিক হয়েছিল। আর যাবে না ওদিকে। বলেছে রাহুল অদিতিকে কিন্তু কাজ হয়নি তবুও রাহুলকে বিশ্বাস করেনা অদিতি। রনো বেট জিতবেই, অদিতিকে রং মাখাবেই। কিন্তু কি করে? ওর বাসাতেই যাবে।যখন মালকিন মন্দিরে যাবে তখনই যাবে ও। কিন্তু রাহুলকে কিছু বলে নি। বলা যায়না রাহুল বলতে না চাইলেও অদিতি সেন্টু দিয়ে বের করে নিতে পারে। রাহুল জিজ্ঞাসা করেছিল কিন্তু রনো শুধু বলেছে ঝোকের মাথায় বলেছিলাম, কিন্তু অদিতি বাড়ি থেকে বের না হলে কি করে হবে,ওর মালকিন আমাকে ঝাঁটা নিয়ে তাড়া করবে ওখানে গেলে। সকল৮ টা বাজছে। আজ ছুটি নিয়েছে, রাহুল তখনও ঘুমাচ্ছে। রনো চুপি চুপি বাইক নিয়ে বেরিয়ে গেলো। পকেটে এক প্যাকেট লাল আবির নিয়ে। রাস্তায় দেখলো মিসেস মুখার্জী মন্দিরের দিকে যাচ্ছে। সো নো প্রব্লেম। রনোকে অবশ্য চিনতে পারেনি কেননা হেলমেট পরে আছে সে। বাড়ির বাইরে বাইক রেখে আস্তে আস্তে ঢুকলো রনো। আরে মেঘ না চাইতেই জল। বাইরে সাদা সালোয়ার পরে জামা কাপড় শুকাতে দিচ্ছে অদিতি। রনো ভেবেছিলো বেল বাজাবে, রনো লুকিয়ে থাকবে ,ফের অদিতি দরজা খুললেই ওকে রং দেবে ,যাই হোক এত ঝামেলা কিছু নেই। চলো , প্যাকেট থেকে রং বের করে দুই হাতে নিলো রনো। অদিতি ওকে দেখেনি সে জামাকাপড় মেলে যাচ্ছে আপন মনে উল্টোদিক হয়ে। দুই হাত দিয়ে দুই গালে রং মাখালো রনো – সাথেই বললো – হ্যাপি হোলি। দেখ আমি বেট। ………………………………………… কথা শেষ হলো না। পিছন থেকে জোরে রনো বলে চেঁচিয়ে উঠলো অদিতি। যাকে রং মাখিয়েছিলো সে নিজের এক গালে হাত দিয়ে দেখেছে তাকে রং মাখানো হয়েছে। তার হাতেও রং। রনো বললো – সরি, আমি অদিতি ভেবেছিলাম, বাই দ্যা ওয়ে হ্যাপি হোলি। ঘুরলো সে রোনোর দিকে। রনোও তাকে দেখতে চাইছিলো কে সে ? তার দুচোখ ভর্তি জল। মুখটা একেবারে ফ্যাকাসে। তার চাউনিতে বোঝা যাচ্ছে যে সে কতটা বিস্মিত। ভাবটা এমন রনো যেন তার মুখে রং নয় আসিড ছুড়েছে। তার সর্বনাশ করে দিয়েছে। শ্রী কিছু হয়নি। সব ঠিক আছে। – অদিতি চলে এসেছে ওদের কাছে। কিন্তু সে যেমন রনোকে দেখছিলো তেমনি দেখছে। দু চোখ বেয়ে জল গড়াচ্ছে। রনো – সরি, আমি সত্যিই বুঝতে …………. কথা শেষ হলো না একটা কড়া থাপ্পড় এসে পড়লো রানোর গালে। সাথেই গালে লাগলো লাল আবির। একটা রাগ রাগ কড়া চোখে ঘৃণা নিয়ে দাঁতে দাঁত দিয়ে কান্না চেপে রেখে দেখছে রনোকে। গালে হাত দিয়ে দেখলো রনো। সেও একরাশ প্রশ্ন উদ্বেগ ,বিশ্বাস,রাগ নিয়ে তাকিয়ে তার দিকে যার কাছে এইমাত্র থাপ্পড় খেলো। ঘুরে চলে যাচ্ছিলো মেয়েটি ,রনো শক্ত করে হাতটা ধরলো। কাছে টেনে নিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে কড়া চোক তাকালো। অদিতি বুঝতে পেরেছে। মেয়েটিও হাতটা ছাড়ানোর চেষ্টা করছে। কথা না বলেও অনেক প্রতিবাদ জানাচ্ছে। কিন্তু না রনো ছাড়বে না। অদিতি – রনো প্লিজ ছেড়ে দে , ওকে যেতে দে। ছাড়ছে না রনো। বিস্ফারিত চোখে তাকিয়ে আছে শ্রীর দিকে। অদিতি এবার রনোর হাত থেকে শরীর হাতটা ছাড়াতে চেষ্টা করছে। বলছে – রনো প্লিজ ছাড়. আন্টি এসে যাবে। সর্বনাশ হয়ে যাবে। হাতটা ছেড়ে দিলো রনো – শ্রী ঘরের দিকে ছুটলো কাঁদতে কাঁদতে। রনো প্লিজ বাড়ি যা , প্লিজ, আমি পরে তোকে সব বললো।- বলে অদিতিও শ্রী শ্রী করে চেঁচাতে চেঁচাতে ছুটলো ভিতরে। ওর সাহস হয় কি করে? রনোকে থাপ্পড় মারে? কেন মারলো ? কি করেছে রনো ?জবাব দিতেই হবে। রনো ছুটলো ঘরের দিকে। …………. পরের অংশ – রাই-কেশব (লাভ স্টোরি ) কলমে – অপরাজিতা = পর্ব ২ আপনার মতামত জানান -