প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – রাজ্যের পুলিশ প্রশাসন প্রতিহিংসাপরায়ণ ভাবে বেছে বেছে বিজেপি নেতা কর্মীদের গ্রেপ্তার করছে। বিজেপির পক্ষ থেকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ওঠা এই অভিযোগ নতুন কিছু নয়। সম্প্রতি বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহের সাথে থাকা হালিশহরের প্রাক্তন তৃণমূল উপপ্রধান তথা বর্তমান বিজেপি নেতা রাজা দত্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

যার পরেই নানা মহলের তরফে অভিযোগ উঠতে থাকে, আসলে তৃণমূলের পক্ষ থেকে বিজেপিকে চাপে ফেলার জন্যই বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই ধরনের গ্রেপ্তার করা হল। তবে যে বিজেপি নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, এবার তার বিরুদ্ধে উঠল একাধিক বিস্ফোরক অভিযোগ। জানা গেছে, বিজেপি নেতা রাজা দত্তের বিরুদ্ধে মারধর, অস্ত্র আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে।

তবে অতীতেও রাজা দত্ত সম্পর্কে পুলিশের কাছে রিপোর্ট খুব একটা ভালো নেই। তৃণমূলে থাকার কারণে এই রাজা দত্তকে এক সময় পুলিশ চেয়েও গ্রেপ্তার করতে পারেনি। কিন্তু পরবর্তীতে তিনি দলবদলের পর বিজেপিতে যোগদান করার সাথে সাথেই তাকে বাগে আনার চেষ্টা করে প্রশাসন। এবার অর্জুন সিংহের সঙ্গে এক গাড়িতে দেখা যাওয়ায় সেই রাজা দত্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

তবে বিজেপির পক্ষ থেকে এই ব্যাপারে প্রশাসনের বিরুদ্ধে দলতন্ত্রের অভিযোগ করা হলেও, তাতে পাত্তা দিতে নারাজ তৃণমূল কংগ্রেস। ইতিমধ্যেই এই ব্যাপারে প্রশাসনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন ব্যারাকপুরে বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহ। তিনি বলেন, “পুলিশ এবং তৃণমূল যৌথভাবে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়ছে। রাজনৈতিকভাবে আমাদের সঙ্গে লড়তে না পেরে দলের নেতাদের জেলে ভরে ময়দান ফাঁকা করতে চাইছে।”

যদিও বা অর্জুন সিংহের এই মন্তব্যকে গুরুত্ব দিতে নারাজ নৈহাটির তৃণমূল বিধায়ক পার্থ ভৌমিক। এদিন তিনি বলেন, “আইন আইনের পথে চলবে। তোলাবাজ, দুর্নীতিগ্রস্তদের নিয়ে বিজেপি নিজেদের ঘর সাজাতে চাইছে।” তবে রাজা দত্তকে নিয়ে দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যে তরজা সমানভাবে চললেও, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তৃণমূল এবং বিজেপি হল, একই মুদ্রার এপিঠ আর ওপিঠ। কেননা যারা এতকাল তৃণমূলে থেকে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে, এখন তারাই বিজেপির প্রভাব বৃদ্ধি হওয়ার সাথে সাথে ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগ দিচ্ছেন। ফলে মানুষ কোন দলের উপর ভরসা রাখবেন, তা একটা বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে সকলের কাছে।

আর এই পরিস্থিতিতে রাজা দত্তের মত এককালের দাপটে তৃণমূল নেতা এবার বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর তিনি গ্রেপ্তার হওয়ায় বিজেপির পক্ষ থেকে প্রতিহিংসাপরায়ণ আচরণের অভিযোগ করা হলেও, অনেকেই রাজা দত্তের গ্রেপ্তারে খুশি। সাধারণ মানুষ বলেছেন, এককালে এলাকার ত্রাস ছিল এই রাজা দত্ত। ফলে তাকে গ্রেপ্তার করে ভালই করেছে প্রশাসন। কিন্তু গোটা ঘটনাকে নিয়ে যেভাবে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে, তাতে রীতিমত বীতশ্রদ্ধ জনসাধারণ।