এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > রাজভবন-নবান্ন সংঘাত চূড়ান্ত পর্যায়ে? ধনকরকে লেখা মমতার ৯ পাতার কড়া চিঠি নিয়ে তীব্র জল্পনা!

রাজভবন-নবান্ন সংঘাত চূড়ান্ত পর্যায়ে? ধনকরকে লেখা মমতার ৯ পাতার কড়া চিঠি নিয়ে তীব্র জল্পনা!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল পদে বসার পর থেকেই রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে সোচ্চার হতে দেখা যায় রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরকে। যাকে ঘিরে রাজ্য বনাম রাজ্যপালের সংঘাত বিভিন্ন সময় চরমে উঠেছিল। প্রভাব পড়েছিল সাংবিধানিক কাঠামোতে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে মাঝে মধ্যেই পৌঁছে যায় যে, রাজ্য বনাম রাজ্যপালের সংঘাতে তৃণমূল-বিজেপি দ্বন্দ্ব অনিবার্যভাবেই এসে পড়ে। যেখানে তৃণমূলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, রাজ্যপাল বিজেপির মুখপাত্র হয়ে কাজ করছেন।

অন্যদিকে সাংবিধানিক প্রধানের মতই কাজ করছেন রাজ্যপাল বলে পাল্টা দাবি করা হয় গেরুয়া শিবিরের তরফ থেকে। তবে করোনা পরিস্থিতির মাঝে সেভাবে রাজ্য বনাম রাজ্যপালের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসেনি। কিন্তু এবার রাজ্যের সর্বোচ্চ পুলিশ আধিকারিকের প্রতি রাজ্যপালের আক্রমণের জবাব দিতে দেখা গেল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। যেখানে ডিজিপিকে নিয়ে রাজ্যপালের মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফে নয় পাতার একটি চিঠি লেখা হল রাজ্যপালের উদ্দেশ্যে। স্বভাবতই রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান রাজভবনের উদ্দেশ্যে এই চিঠি লেখায় নতুন করে রাজভবন বনাম নবান্নের সম্পর্কের তিক্ততা তৈরি হবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

বস্তুত, রাজ্যপালের মসনদে বসার পর থেকেই জাগদীপ ধনকর রাজ্য প্রশাসনের নানা ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছিলেন। পুলিশ প্রশাসন শাসক দলের অঙ্গুলিহেলনে কাজ করছে বলেও মাঝেমধ্যে অভিযোগ করতে দেখা গিয়েছিল তাকে। কিন্তু শুক্রবার এক টুইটে রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্রকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন তিনি। যেখানে তিনি বলেন, “আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে মোটেই উদ্যোগী নন ডিজিপি।” তার ভূমিকা দুর্ভাগ্যজনক বলেও উল্লেখ করেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান।

স্বাভাবিকভাবেই রাজ্যের রাজ্যপালের এই আক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে কিছুটা হলেও অস্বস্তিতে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেননা তিনি রাজ্যের পুলিশমন্ত্রী। ডিজিপিকে আক্রমণ করে তাকেও যে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হল, তা বুঝতে বাকি ছিল না প্রশাসনিক প্রধানের। আর তারপরেই এবার রাজ্যপালকে নয় পাতার কড়া চিঠি দিয়ে সেই ডিজিপির পাশে দাঁড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

কিন্তু রাজ্যপালের উদ্দেশ্যে লেখা চিঠিতে ঠিক কী কী বিষয় তুলে ধরেছেন মুখ্যমন্ত্রী? জানা গেছে, রাজ্যপালকে লেখা চিঠিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উল্লেখ করেছেন যে, তার সরকার জনগণের দ্বারা নির্বাচিত। কিন্তু রাজ্যপাল পদ সম্পূর্ণরূপে মনোনীত। তাই আইন মেনে সাংবিধানিক প্রধানের কাজ করা উচিত। প্রশাসনিক কাজে অযাচিতভাবে কোনো ভুমিকা নেওয়া মোটেই কাম্য নয়।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যপালের উদ্দেশ্যে এই ধরনের মন্তব্য এবং কড়া চিঠি এবার নতুন করে রাজ্য বনাম রাজ্যপালের সংঘাতকে তীব্র করবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিধানসভা নির্বাচনের আগে এইভাবে যদি প্রশাসনিক এবং সাংবিধানিক দুই পক্ষের মধ্যে তরজা চরমে উঠতে শুরু করে, তাহলে তার প্রভাব যে বঙ্গ রাজনীতিতে ব্যাপকভাবে পড়বে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

এদিন এই গোটা বিষয়ে রাজ্যপালকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, “রাজ্যপাল যে কত অপদার্থ, তা প্রমাণ হয়ে গেল। ওনার কাজ মুখ্যমন্ত্রীকে পরামর্শ দেওয়া। তা না করে নিজের রাজ্যে সমালোচনা করছেন। উনি আসলে একটি রাজনৈতিক দলের অনুগত। রাজ্যপালের আসনের গরিমা উপলব্ধির মত বোধ বা স্পৃহা ওনার নেই।” বিশ্লেষকদের মতে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চিঠিতে উল্লেখ করেছেন, তার সরকার নির্বাচিত – একথা অত্যন্ত বাস্তব।

কিন্তু সংবিধানের একটি রাজ্য পরিচালনার ক্ষেত্রে সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে রাজ্যপালের পরামর্শ যে রাজ্য সরকারকে শুনতে হবে তা উল্লেখিত আছে। সেদিক থেকে রাজ্যপাল রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তোলার পর যেভাবে তাকে পাল্টা চিঠি দিয়ে আক্রমণ করা হল সরকারের তরফে, তা সংবিধানকে লঙ্ঘন করল বলেই দাবি বিশেষজ্ঞদের।

তবে তৃণমূলের পক্ষ থেকে অবশ্য বলা হচ্ছে, একজন মানুষ সাংবিধানিক পদে থেকে কিভাবে একটি সরকারের ক্রমাগত বিরোধিতা করতে পারেন! তাই প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের পুলিশের দিকে রাজ্যপালের এহেন প্রশ্ন তোলার পরিপ্রেক্ষিতে এই চিঠি দিয়ে তার জবাব দিয়েছেন।  সব মিলিয়ে এখন গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই কড়া চিঠির পর রাজভবনের তরফে কি প্রতিক্রিয়া আসে, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!