এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > রাজীব কুমারের “জন্য” এবার ছুটোছুটি বেড়ে যাবে সুদীপ্ত থেকে দেবযানীর? কুনাল থেকে মদনের?

রাজীব কুমারের “জন্য” এবার ছুটোছুটি বেড়ে যাবে সুদীপ্ত থেকে দেবযানীর? কুনাল থেকে মদনের?

রাজীব কুমারকে কেন্দ্র করে প্রবল ঘোরালো হচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি। কলকাতা পুলিশের প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার আইপিএস রাজীব কুমার বর্তমানে সিবিআইয়ের খাতায় পলাতক। কিন্তু তাকে ঘিরে সারদা মামলার নথি লোপাট হওয়ার যে সমস্ত ভয়ঙ্কর অভিযোগ সামনে এসেছে, তা প্রতিমুহূর্তে চাপ বাড়িয়ে দিচ্ছে শাসক দলের একাধিক হেভিওয়েট নেতৃত্বদের। তার ওপরে আবার গোদের উপর বিষফোঁড়া আদালত স্থানান্তর।

এতদিন অভিযুক্ত সাংসদ, বিধায়কদের মামলা চালানোর জন্য আলাদা আদালত চলছিল বারাসাতে। কিন্তু সেই এমপি এমএলএদের আদালতে হাজিরা নিয়েও বর্তমানে চরম বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। পরিস্থিতি এতটা বেগতিক হয়েছে প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার সংক্রান্ত মামলাকে কেন্দ্র করেই। আর তার জেরেই সিবিআইয়ের দায়ের করা প্রধান সারদা মামলার সমস্ত রকমের কেস রিপোর্ট নথি সব কিছু বারাসাত থেকে স্থানান্তরিত করে দেওয়া হচ্ছে আলিপুর আদালতে।

আর সেই কারণেই আগামী 24 সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সারদা মামলায়  সকলকে বারাসাতের বদলে আলিপুর জেলা জজের আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।  তালিকায় রয়েছে সুদীপ্ত সেন থেকে শুরু করে দেবযানী মুখোপাধ্যায়, সৃঞ্জয় বসু থেকে শুরু করে মাতঙ্গ সিং, কুনাল ঘোষ, মদন মিত্র প্রমুখ। আর এই সমস্ত হেভিওয়েটদেরকে এবার হাজিরা দিতে হবে আলিপুর জেলা জজকোর্টে। এতদিন তারা বারাসাতে গঠিত এমএলএ, এমপিদের স্পেশাল কোর্টে হাজিরা দিচ্ছিলেন।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এক্ষেত্রে শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআইয়ের মামলায় নয়, রাজ্য পুলিশের কড়া সাজা সংক্রান্ত সকল মামলার শুনানিও এবার থেকে বারাসাতের বদলে আলাদা আলদা আদালতে স্থানান্তরিত করা হবে বলে জানা গেছে কুনাল ঘোষের আইনজীবীর অয়ন চক্রবর্তীর তরফে। যার জেরে এবার থেকে কুণাল ঘোষকে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে যেমন ব্যাঙ্কশাল কোর্ট থেকে শুরু করে আলিপুরদুয়ার, বিধাননগর এমনকি জলপাইগুড়িতেও ছুটতে হতে পারে।

অপরদিকে মদন মিত্রের আইনজীবীর তরফে জানানো হয়েছে, প্রাক্তন মন্ত্রীর মামলা বারাসাত থেকে আলিপুর জজ কোর্টে চলে আসাতে প্রক্ষান্তরে সুবিধাই হবে মদনবাবুর আইনজীবীর। কারণ আলিপুর জর্জ কোর্ট বারাসাতের তুলনায় কাছেই হয় মদন মিত্র ও তার আইনজীবীর বাড়ি থেকে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এই গোটা ঘটনার সূত্রপাত ঘটে গত 17 সেপ্টেম্বর, যেদিন কলকাতা পুলিশের প্রাক্তন কমিশনার রাজীব কুমারের আইনজীবী তার জামিনের জন্য আবেদন করেন বারাসতের বিশেষ আদালতে। এদিন রাজীব কুমারের আইনজীবীর তরফ থেকে প্রথমে তার জামিনের আবেদন করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে সিবিআই পাল্টা রাজীব কুমারের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার আর্জি জানায় বারাসাতের বিশেষ আদালতে।

কিন্তু প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বিচার করার জন্য গঠিত বারাসাতের এই বিশেষ কোর্টের বিচারক সঞ্জীব দারুকা দুই আবেদনকারীকেই জানিয়ে দেয় যে, তার হাতে ম্যাজিস্ট্রেটের সমতুল্য ক্ষমতা নেই। তাই তার পক্ষে আগাম জামিন দেওয়া বা গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার আদেশ দেওয়া কোনো ক্ষমতা নেই।

এমনকি তিনি স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন যে, যদি তার কাছে কোনো গ্রেপ্তার করা অভিযুক্তকে পেশ করা হয়, তাহলে তাকে পুলিশি হেফাজত বা জেল হেফাজত কোথাও পাঠানোর ক্ষমতা নেই সংশ্লিষ্ট বিচারপতির। আর বিচারকের এই উক্তি শুনেই রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়ে যান সিবিআইয়ের আইনজীবী। কারণ সারদা সংক্রান্ত আরসি 4 এবং আরসি 6 রেগুলার কেসের যাবতীয় নথি জমা ছিল বারাসাতের এই বিশেষ আদালতে। তাই স্বাভাবিকভাবেই সিবিআইয়ের আইনজীবীর কাছে প্রশ্ন ওঠে, যদি রাজীব কুমারকে গ্রেফতার করা হত তাহলে তাকে কোন আদালতে হাজির করা হত! তাই এই সমস্ত প্রশ্নের মুখে রীতিমতো বাক্যহারা হয়ে পড়েন সিবিআইয়ের আইনজীবীরা।

এর পরেই বারাসাত বিশেষ আদালতের বিচারক সঞ্জীব দারুকা জানান, সারদা মামলার আরসি 4 সংক্রান্ত সকল নথি তিনি আলিপুর জজকোর্টে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। আর এখন থেকে এই মামলার অগ্রগতি, গ্রেপ্তার এই সমস্ত কিছুই দেখাশোনা করবেন আলিপুর আদালত।

প্রায় দুই বছর আগে মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেন, বিধায়ক, সাংসদদের বিরুদ্ধে যে সমস্ত মামলা রুজু করা হয়েছিল, তার শুনানি একটি বিশেষ আদালতে করতে হবে। আর সেই নির্দেশ মোতাবেক কলকাতা হাইকোর্ট একটি প্রশাসনিক নির্দেশিকা জারি করেন। যাতে স্পষ্ট বলা হয়, এমপি, এমএলএদের সমস্ত মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ হবে বারাসাতে। যার অর্থ অনুযায়ী চার্জ গঠনের পরে মামলাগুলো স্থানান্তরিত হবে ওই আদালতে।

কিন্তু চার্জ গঠনের আগেই আশ্চর্যজনকভাবে সারদা মামলায় অভিযুক্ত সকল বিধায়ক, সাংসদদের মামলা তড়িঘড়ি বারাসাতের ওই বিশেষ আদালতে স্থানান্তরিত করা হয়। এমনকি আশ্চর্যের বিষয়, শুধু সারাদা মামলাই নয়, বিধায়কদের উপরে মারপিট থেকে শুরু করে যাবতীয় ছোটখাটো গন্ডগোলের অভিযোগের শুনানিও বারাসাতের বিশেষ আদালতে চলতে থাকে। বারাসাতের ওই আদালতে কোনো এমপি এমএলএকে গ্রেফতার করার জন্য নির্দেশিকা চাওয়া হয়নি।

কিন্তু গোল বাধে সিবিআইয়ের রাজীব কুমারকে গ্রেফতার করার জন্য আদালতের কাছে নির্দেশ চাওয়াতেই। বাধ্য হয়েই বারাসাত বিশেষ আদালত সিবিআইয়ের ওই গ্রেপ্তারি সংক্রান্ত আবেদনের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে নিজের ক্ষমতা সম্পর্কে জানিয়ে দেন। আর যার পরেই তৈরি হয় প্রবল আইনি সংকট। আর তাই এখন সারদা সহ বিভিন্ন মামলার দায়িত্ব সর্ব ক্ষমতাপ্রাপ্ত আদালতগুলির কাছেই পুনরায় প্রেরন করা হচ্ছে বারাসাত বিশেষ আদালত থেকে। কিন্তু বিভিন্ন আদালতে মামলাগুলো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ায় সাংসদ, বিধায়কদের কতটা অসুবিধা হয় বা মামলার গতি-প্রকৃতি কি রকম প্রভাব ফেলে! এখন সেদিকেই তাকিয়ে বিশেষজ্ঞরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!