রাজ্যপালকে আটকাতে এবার অমিত শাহের “শরণাপন্ন” তৃনমূল? জানুন বিস্তারিত কলকাতা জাতীয় রাজ্য November 18, 2019 পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল পদে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই সরকারের অস্বস্তি বাড়িয়ে দিয়েছেন রাজ্যপাল জাগদীপ ধনকার। জিয়াগঞ্জের ঘটনা থেকে শুরু করে দুর্গাপুজো কার্নিভাল, যাদবপুর ক্যাম্পাসে অশান্তি থেকে শুরু করে প্রশাসনিক বৈঠক, প্রায় বিভিন্ন ইস্যুতে সরকারের বিরুদ্ধে মন্তব্য করতে দেখা গেছে তাঁকে। যার পাল্টা সরকারের তরফেও সেই রাজ্যপালকে বিদ্ধ করা হয়েছে। কখনও সুব্রত মুখোপাধ্যায়, আবার কখনও বা পার্থ চট্টোপাধ্যায় এই ব্যাপারে রাজ্যপালকে কটাক্ষ করলেও সম্প্রতি এই বিষয়ে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে পক্ষে মুখ খোলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যেখানে তিনি বলেন, “আমাদের রাজ্যেও একজন আছেন। যিনি সমান্তরাল প্রশাসন চালানোর চেষ্টা করছেন।” আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মন্তব্যেই ছড়িয়ে পড়ে জল্পনা। বিশেষজ্ঞদের একাংশ দাবি করতে থাকেন, নাম না করে হলেও রাজ্যপালকেই এই ব্যাপারে কটাক্ষ করলেন মুখ্যমন্ত্রী। আর পশ্চিমবাংলায় রাজ্যপালের অতিসক্রিয়তাকে দায়ী করে সম্প্রতি শীতকালীন অধিবেশনের আগেই সর্বদলীয় বৈঠকে এই বিষয়টি তুলে ধরেন সংসদে তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে কোথায় আছে, যে ছেলে বেশি দুষ্টুমি করে, সেই ছেলের অভিভাবকের কাছে গিয়েই তার বিরুদ্ধে নালিশ জানাতে হয়। আর তাইতো সর্বদলীয় বৈঠকে এই ব্যাপারে অভিযোগ জানালেও তৃণমূল বরাবর রাজ্যের রাজ্যপালকে বিজেপি ঘনিষ্ঠ বলে অভিযোগ করেছে। আর তাই সেই পরিপ্রেক্ষিতে এবার বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে এই বিষয়টি তুলে ধরলেন তৃণমূলের সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - সূত্রের খবর, রবিবার সরকারের পক্ষ থেকে ডাকা সর্বদলীয় বৈঠকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে এই বিষয়ে প্রশ্ন করেন সুদীপবাবু। তিনি বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জাগদীপ ধনকার সমান্তরাল প্রশাসন চালানোর চেষ্টা করছেন কেন! কেন্দ্রের পক্ষ থেকে কি এই নিয়ে তাঁকে কোনো বিশেষ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে! রাজ্যপাল পদকে আমরা সম্মান করি। কিন্তু জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকা সত্ত্বেও আমাদের বর্তমান রাজ্যপাল যেভাবে সমান্তরাল প্রশাসন চালানোর চেষ্টা করছেন, তা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থী।” আর এরপরই রাজ্যপালের অতিসক্রিয়তা বন্ধ করতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে তৃণমূলের সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “রাজ্যপালকে বারণ করুন। কেন তিনি এরকম করছেন! তার ব্যাখ্যা চান।” জানা গেছে, সুদীপবাবুর এই কথার প্রত্যুত্তরে কোনো জবাব দেননি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। যার ফলে আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনে সংসদেও এই বিষয়টি তুলে সোচ্চার হবে তৃণমূল বলে খবর। আর এতদিন রাজ্যের মধ্যে গোটা ব্যাপারটি সীমাবদ্ধ থাকলেও এখন রাজ্য বনাম রাজ্যপালের সম্পর্কের দূরত্ব তৈরিতে রাজ্যপালকে দায়ী করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে তৃণমূলের এই অভিযোগ এক নতুন মাত্রা পেল বলে মত রাজনৈতিক মহলের। যদিওবা এদিন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে রাজ্যপালকে নিয়ে করা এহেন প্রশ্নে ভাবিত নন রাজ্যপাল জাগদীপ ধনকার। এদিন তিনি বলেন, “আমি এরকম কোনো বিষয়ে জানি না। আর কেউ আমাকে জানায়ওনি। কারও কথার প্রতিক্রিয়া দেওয়াটা আমার কাজ না। তবে যদি কেউ এরকম কোনো নালিশ করে থাকে, সেটা তার ব্যক্তিগত অধিকার। আমি যদি সমান্তরাল প্রশাসন চালাতাম, তাহলে হেলিকপ্টার করে আমার ফারাক্কা যাওয়ার কথা। কিন্তু সেটা হয়নি। গাড়িতে করে 700 কিলোমিটার সফর করতে হয়েছে আমাকে। 50 দিনের বেশি হয়ে গেল রাজ্যের মুখ্যসচিব দায়িত্ব নিয়েছেন। অথচ এখনও আমার সঙ্গে একদিনও দেখা করতে আসেননি। রাজনীতি করা নয়, সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করাটা আমার কাজ। আমি যা করছি সেগুলো শপথ নেওয়ার সময় ঘোষণা করে দিয়েছিলাম।” আর রাজ্যপালের এই বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট যে, তৃণমূলের পক্ষ থেকে এই বিষয়টি নিয়ে সংসদে সরব হলেও তিনি তার অবস্থানে অনড় থাকবেন। ফলে এখন তৃণমূলের পক্ষ থেকে এই ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর শরণাপন্ন হলেও কোনো প্রতিক্রিয়া না পাওয়ায় রাজ্যের শাসক দলের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হয়, সেদিকেই তাকিয়ে সকলে। আপনার মতামত জানান -