এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > রাজ্যপালের লাগাতার আক্রমণ! জবাব দিলেন মমতা! প্রশাসনিক বনাম সাংবিধানিক প্রধানের তরজা প্রকাশ্যে!

রাজ্যপালের লাগাতার আক্রমণ! জবাব দিলেন মমতা! প্রশাসনিক বনাম সাংবিধানিক প্রধানের তরজা প্রকাশ্যে!


পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালের কুর্সিতে বসার পর থেকেই রাজ্য সরকারের বিভিন্ন আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকার। কখনও আইন-শৃঙ্খলা আবার কখনও বা শিক্ষাঙ্গনে অশান্তি, বিভিন্ন বিষয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে মন্তব্য করে শোরগোল তুলে দিয়েছেন তিনি। তবে করোনার সময় যেখানে বিরোধী এবং সরকারের মধ্যে তরজা ঠিকমত লক্ষ করা যাচ্ছে না, সেখানে সাংবিধানিক প্রধান এবং প্রশাসনিক প্রধানের বিরূপ মন্তব্য করা যাবে না বলেই আশা করেছিল গোটা বাংলা।

কিন্তু সেই আশার মুখে কার্যত জল ঢেলে দিয়ে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গত বেশ কিছুদিন ধরে রাজ্য সরকারকে অস্বস্তিতে ফেলে দেওয়ার মত মন্তব্য করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকার। রেশন ব্যবস্থায় অনিয়ম থেকে শুরু করে কেন্দ্রের পাঠানো প্রতিনিধি দলের প্রতি রাজ্যের অসহযোগিতা নিয়ে সরব হয়েছেন তিনি। বিভিন্ন বেসরকারি সংবাদমাধ্যমেও বিবৃতি দিতে গিয়ে এই ব্যাপারে রাজ্যের অস্বস্তি বাড়িয়ে দিয়েছেন রাজ্যপাল।

তবে এতদিন সরকার পক্ষের বিভিন্ন মন্ত্রীরা রাজ্যপালের এই মন্তব্যের বিরোধিতা করলেও, এবার রাজ্যপালকে চিঠি লিখে তার কড়া জবাব দিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজ্যপালের উদ্দেশ্যে এই চিঠি দেওয়ার পরেই কার্যত প্রমাণিত হয়ে গেছে যে, রাজ্যের সাংবিধানিক বনাম প্রশাসনিক প্রধানের তরজা কোন পর্যায়ে পৌঁচ্ছেছে। সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার রাজ্যপাল জাগদীপ ধনকারকে একটি চিঠি লিখেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

যেখানে তিনি বলেন, “আপনি হয়ত ভুলে গিয়েছেন, আমি ভারতের গর্বিত এক রাজ্যের নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রী। আপনি হয়তো ভুলে গিয়েছেন যে, আপনি একজন মনোনীত রাজ্যপাল। আপনি আমার সরকার বা মন্ত্রিসভার সদস্যদের পরামর্শ নাও গ্রহণ করতে পারেন। কিন্তু 1949 সালের 31 মে সংবিধান সভায় দাঁড়িয়ে বাবাসাহেব আম্বেদকর যে কথা বলেছিলেন, তা আপনার উপেক্ষা করা উচিত নয়।”

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংবিধানের কথা তুলে ধরে যে রাজ্যপাল সব সময় সরকারকে সংবিধানের সবক শেখান, সেই রাজ্যপালকেই বোঝানোর চেষ্টা করলেন যে, আপনি সংবিধানটা মেনে চলুন। এদিকে রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রীর মোবাইলে যে মেসেজ করেছেন, তা তুলে ধরে চিঠিতে নিজের কথা তুলে ধরেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

প্রসঙ্গত, গত 22 এপ্রিল বুধবার সকাল সাতটার সময় মুখ্যমন্ত্রীকে একটি টেক্সট ম্যাসেজ করেন রাজ্যপাল। যেখানে তিনি লেখেন, “আপনার গতকালের জবাব দেখে আমি ভীষন অবাক হয়েছি। তাতে আমার পদের অবমাননা হয়েছে। আমরা দুজনেই সাংবিধানিক পদে রয়েছি। এটা কারও জমিদারি নয় যে, তার খেয়ালখুশিমত সব চলবে।” আর এই মেসেজ চিঠিতে তুলে ধরে এদিন রাজ্যপালকে চিঠি দিয়ে এর পরিপ্রেক্ষিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “যে নজিরবিহীন ভাষা ও মেজাজ আপনি মেসেজে করেছেন, তা আরও একবার এখানে তুলে ধরা দরকার। মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে এই ধরনের শব্দ আপনি কিভাবে ব্যবহার করতে পারেন! এবার আপনি নিজেই বিচার করুন, আপনি সংবিধানসম্মত কাজ করছেন কিনা। আপনি যেভাবে আমাকে আক্রমণ করছেন, সরকারের মন্ত্রীদের সমালোচনা করছেন, সাংবাদিক বৈঠক করে সরকারের সমালোচনা করছেন, যে ভাষায় চিঠি লিখছেন, তা কতটা রাজ্যপাল সুলভ।”

এদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একথা বলার পর রাজ্যপাল যে তাকে ছেড়ে দেবেন, এমনটা নয়। আর তাই তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যপালকে চিঠি দেওয়ার পরপরই পাল্টা এই ব্যাপারে মন্তব্য করেছেন রাজ্যপাল। যেখানে তিনি জানিয়ে দিয়েছেন যে, রাতেই তিনি যা বলার বলবেন। বাকিটা শুক্রবার দিন সকালে তিনি জানাবেন। আর করোনার মত ভয়াবহ মহামারীর সময়কালে যেখানে বিরোধীরাও সরকারের সঙ্গে এতটা তরজায় লিপ্ত নয়, সেখানে রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান এবং সাংবিধানিক প্রধানের এই তরজা চিন্তার ভাঁজ বাড়াচ্ছে প্রতিনিয়ত।

একাংশের মতে, সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে রাজ্যপাল প্রশাসনকে পরামর্শ দিতেই পারেন। কিন্তু তিনি যেভাবে প্রতিনিয়ত প্রশাসনের বিরুদ্ধে আক্রমণ করছেন, তা সত্যিই নজিরবিহীন। অন্যদিকে রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের আক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে যেভাবে এদিন মুখ্যমন্ত্রী তাকে কড়া চিঠি দিলেন, তা আরও নজিরবিহীন বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এখন গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, তার দিকেই নজর থাকবে রাজনৈতিক মহলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!