এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > রাজ্যপালের প্রতিষেধক হিসেবে দিল্লি যাওয়ার প্রস্তুতি, শুভেন্দু রাজভবনে যেতেই তৎপর তৃনমূল!

রাজ্যপালের প্রতিষেধক হিসেবে দিল্লি যাওয়ার প্রস্তুতি, শুভেন্দু রাজভবনে যেতেই তৎপর তৃনমূল!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –  তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই কার্যকর হয় না দলত্যাগ বিরোধী আইন। 2011 সালে তৃণমূল কংগ্রেস প্রথম রাজ্যের ক্ষমতায় বসার পর বিরোধী দলের অনেক বিধায়ক তৃণমূলে যোগদান করেছিলেন। কিন্তু নিয়ম মত একদলের টিকিটে জিতে অন্য দলে যোগদান করতে গেলে তাকে বিধায়ক অথবা জনপ্রতিনিধি পদে ইস্তফা দিতে হয়। কিন্তু তেমন কোনো নীতির ধার ধারেনি শাসকদল। যা নিয়ে বহুবার প্রশ্ন করেছে তৎকালীন বিরোধী দল বাম এবং কংগ্রেস‌। কিন্তু তাকে কার্যত ফু দিয়ে উড়িয়ে দিয়ে একের পর এক বিধায়কদের নিজেদের দলে শামিল করেছে তৃণমূল কংগ্রেস।

বর্তমানে দলত্যাগ বিরোধী আইন নিয়ে সবথেকে বেশি বিজেপির পক্ষ থেকে যিনি প্রশ্ন তুলেছেন, সেই শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরেও অনেক গুরত্বপূর্ণ বিরোধী বিধায়ক যোগ দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসে। তারপর রাজ্য রাজনীতিতে বয়ে গিয়েছে অনেক জল। বর্তমানে সেই শুভেন্দু অধিকারী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিপক্ষ টিম ভারতীয় জনতা পার্টির প্রধান সেনাপতি। পরিষদীয় রাজনীতির ক্ষেত্রে বিরোধী দলনেতা তদন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আর সেই বিরোধী দলনেতার দায়িত্ব পেয়ে 2021 এর বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর থেকেই তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়িয়ে দিচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রাক্তন সতীর্থ। এদিকে বিজেপি 200 আসনের টার্গেট নিয়ে লড়াই করা সত্ত্বেও, 77 টি আসন পেয়ে তাদের বিজয়রথ থমকে গিয়েছে। অন্যদিকে 213 টি আসন পেয়ে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। আর এরপর থেকেই গেরুয়া শিবিরে তৈরি হয়েছে বেসুরো আওয়াজ। অনেকেই দলবদল করতে পারেন বলে গুঞ্জন ছড়িয়েছে।

বিজেপিকে প্রথম ধাক্কা দিয়ে কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক মুকুল রায় যোগ দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসে। আর তারপর থেকেই মুকুলবাবুর নেতৃত্বে গেরুয়া শিবিরের আরও বেশকিছু বিধায়ক তৃনমূল কংগ্রেসে নাম লেখাতে পারেন বলে দাবি করছেন একাংশ। তবে মুকুলবাবু বিজেপিতে যোগ দিতে না দিতেই দল ভাঙার খেলা আটকাতে তৎপর হয়েছেন বিজেপির বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

দলত্যাগ বিরোধী আইন থাকা সত্ত্বেও কেন তা কার্যকর করা হবে না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন তিনি। আর সেই প্রশ্ন তুলে রবিবার রাজভবনে গিয়ে 50 জন বিধায়ককে সাথে নিয়ে রাজ্যপালের কাছে দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকর করার আবেদন করেন বিজেপির বিরোধী দলনেতা। তবে শুভেন্দু অধিকারী যখন তৃণমূলকে জব্দ করতে রাজ্যপালের দ্বারস্থ হয়ে দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকর করার জন্য তৎপরতা গ্রহণ করেছেন, ঠিক তখনই পাল্টা শুভেন্দু অধিকারী এবং বিজেপিকে কাবু করতে মাঠে নামল তৃণমূল কংগ্রেস।

বলা বাহুল্য, সাংসদ পদে ইস্তফা না দিয়েই দলবদল করেছেন শুভেন্দু অধিকারীর পিতা তথা কাথির সাংসদ শিশির অধিকারী এবং বর্ধমান পূর্বের সাংসদ সুনীল মণ্ডল। স্বাভাবিক ভাবেই অন্য দলে যোগদান করার পরেও, তাদের সাংসদ পদ কেন এখনও পর্যন্ত টিকে আছে, তা নিয়ে দীর্ঘদিন থেকেই প্রশ্ন রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের। আর এবার শুভেন্দু অধিকারী দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকর করার জন্য রাজ্যপালের দ্বারস্থ হতেই এই প্রশ্ন তুলে ধরে শিশিরবাবু এবং সুনীলবাবুকে চাপে রাখতে, বিজেপিকে বার্তা দিতে লোকসভার অধ্যক্ষের দ্বারস্থ হলেন তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়।

অর্থাৎ এক্ষেত্রে কাঁটা দিয়ে কাঁটা তুলতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস। শুভেন্দু অধিকারী যদি দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকর করতে এভাবে তৎপরতা গ্রহণ করে, তাহলে তার পরিবারের উপর যে চাপ বাড়বে এবং তিনি যে সমস্ত সাংসদদের গেরুয়া শিবিরে নিয়ে গিয়েছিলেন, তাদের সাংসদ পদ বাতিল করার জন্য যে পদক্ষেপ নেবে তৃণমূল কংগ্রেস, সেই বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করল ঘাসফুল শিবির। জানা গেছে, এদিন শুভেন্দু অধিকারী রাজভবনে পৌঁছানোর পরই লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লার কাছে ফোন করেন তৃণমূলের সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

শিশির অধিকারী এবং সুনীল মণ্ডলের ক্ষেত্রে কেন দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকর হল না! সেই ব্যাপারে লোকসভার স্পিকারের কাছে জানতে চান তৃণমূলের দলনেতা। এদের এই প্রসঙ্গে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “লোকসভার স্পিকার আমাকে বলেছেন, এই বিষয়ে একটি কমিটি করার কথা ভাবা হচ্ছে। সেই কমিটিতে উপযুক্ত তথ্য-প্রমাণ সহ অভিযোগ জমা পড়লে, তা দেখা হবে। তখন ওই দুই সাংসদকে ডাকা হবে। আমাকেও ডাকা হবে। আমি যেন সেই মতো তৈরি থাকি। আমি তৈরিই আছি। আমার কাছে যা নথিপত্র আছে, সব স্পিকারকে দিলে আমাদের দাবির যৌক্তিকতা প্রমাণ হবে।”

পর্যবেক্ষকদের মতে, তৃণমূলের বিধানসভা নির্বাচনের স্লোগান ছিল, খেলা হবে। আর এবার সেই খেলা দেখানো শুরু করল তৃণমূল কংগ্রেস। বিধানসভা নির্বাচনের আগে শিশির অধিকারী এবং সুনীল মণ্ডল গেরুয়া শিবিরে যোগদান করার পরে এই ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেই চুপ থেকেছিল ঘাসফুল শিবির। কিন্তু শুভেন্দু অধিকারী দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকর করার জন্য রাজভবনে যেতেই নীরবতা ভাঙলো তৃণমূল কংগ্রেসকে।

একাংশ বলছেন, তৃণমূল এক্ষেত্রে শুভেন্দু অধিকারীকে বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করল। তৃণমূল নেতৃত্বের পক্ষ বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হল যে, রাজ্যে বিরোধী দল বিজেপির থেকে তৃণমূল কংগ্রেসে যদি কোনো বিধায়ক আসে এবং তাদের বিধায়ক পদ খর্ব করার জন্য যদি দলত্যাগ বিরোধী আইন লাগু হয়, তাহলে তৃণমূল কংগ্রেসও বিজেপিতে যাওয়া সাংসদদের ছেড়ে কথা বলবে না। তবে যাই হয়ে যাক না কেন, সাধারণ মানুষ চাইছেন, নির্বাচনের সময় প্রার্থীর পাশাপাশি সেই প্রার্থী কোন দলের টিকিটে লড়াই করছেন,, সেটা দেখেই ভোটবাক্সে রায়দান করেন।

তারা তাই ভোটের পর সাংসদ ও বিধায়করা দল পরিবর্তন করার পর তাদের জনপ্রতিনিধি পদে ইস্তফা দেওয়া উচিত। এক্ষেত্রে বিধানসভা থেকে লোকসভা সর্বত্র এক নিয়ম থাকার প্রয়োজন বলে মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিড়ালের গলায় ঘণ্টা কে বাঁধবে? বিধানসভা নাকি লোকসভা কোথায় প্রথম দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকর হয় এবং তার ফলে বাতিল হয় সাংসদ এবং বিধায়কদের পদ, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!