এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > মালদা-মুর্শিদাবাদ-বীরভূম > রাজনৈতিক মঞ্চে বিভিন্ন পদক্ষেপের মাধ্যমে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় প্রদেশ কংগ্রেস

রাজনৈতিক মঞ্চে বিভিন্ন পদক্ষেপের মাধ্যমে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় প্রদেশ কংগ্রেস

এ রাজ্যে প্রদেশ কংগ্রেস যথেষ্ট পিছিয়ে পড়া দল বলেই পরিচিত রাজনৈতিক মহলে। সম্প্রতি উপনির্বাচনে বাম কংগ্রেস জোট গড়ে নির্বাচনী লড়াইয়ে নামলেও সেখানে বিশেষ কোনো নজরকাড়া ঘটনা ঘটেনি। সামনেই রাজ্যের দোরগোড়ায় কড়া নাড়ছে পুরসভা নির্বাচন। আর এই নির্বাচনে আবারও নিজেদের স্থান ফিরে পেতে উঠে পড়ে লেগেছে রাজনৈতিক দল কংগ্রেস। সম্প্রতি দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে দেখা গেছে, কংগ্রেসের ঘাঁটি দিল্লিতেই কংগ্রেস শূন্য হাতে লড়াই শেষ করেছে। তবে কংগ্রেসের দাবি, রাজ্যের ব্যাপার আলাদা। পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনে আবারও উঠে দাঁড়ানোর জন্য মরিয়া চেষ্টা প্রদেশ কংগ্রেসের। সেই লক্ষ্যে মালদায় কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সাংগঠনিক কর্মসূচি রাখা হয়েছিল সম্প্রতি।

এই সাংগঠনিক কর্মসূচিতেই মালদা জেলায় পদার্পণ করেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র এবং রাজ্য কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক গৌরব গগৈ। এদিন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি দলীয় কর্মীদের রাজ্যের মানুষের সাথে জনসংযোগ বাড়ানোর নির্দেশ দেন। তিনি আরো বলেন, তৃণমূল ও বিজেপির যে অশুভ আঁতাত গড়ে উঠেছে তলে তলে সেকথা কংগ্রেসের পক্ষ থেকেই রাজ্যে প্রচার করা হবে। এই মর্মে দলীয় কর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মালদা জেলার টাউন হলে এদিন কংগ্রেস কর্মীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতন। যা দেখে রীতিমত আশার বাণী শোনালেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র।

এদিন সোমেন মিত্র দাবি করেন, প্রদেশ কংগ্রেস একসময় ছিল রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক শক্তি। সময়কালে শক্তি হারালেও আবারও দুর্বলতা কাটিয়ে কংগ্রেসই রাজ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক শক্তি হয়ে উঠতে চলেছে। এদিন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র দলীয় কর্মীদের চাঙ্গা করতে নির্দেশ দেন, প্রতিটি বুথভিত্তিক কংগ্রেস সংগঠনকে আরো শক্তিশালী করতে হবে। মানুষের কাছে কংগ্রেসের গ্রহণযোগ্যতা যাতে বাড়ে, তার জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার চালাতে হবে।

এদিন মালদায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র জানান, ‘কংগ্রেস এমন একটি দল যাকে ধ্বংস করা যায়না।’ তবে এদিন কথায় কথায় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি মেনে নেন এই মুহূর্তে কংগ্রেস দল যথেষ্ট দুর্বল। তবে তিনি কংগ্রেসের জোর ফেরাতে দাবি করেন, ‘মানুষের সমর্থন পেতে আমরা জেলায় জেলায় যাচ্ছি। মানুষ আমাদের দিকে সমর্থনের হাত বাড়িয়ে দিলে কংগ্রেসের সোনার দিন আবারও ফিরে আসবে।’

অন্যদিকে, এদিন সোমেন মিত্র দাবি করেছেন উপ-নির্বাচনে বাম ও কংগ্রেসের জোট নিয়ে যথেষ্ট চিন্তিত ছিল তৃণমূল ও বিজেপি শিবির। যদিও তৃণমূলের পক্ষ থেকে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই জোটকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। সে কথাই মনে করিয়ে এদিন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন, কংগ্রেস এবং বামেরা যে জোট করেছে তা নিয়ে খুব স্বাভাবিকভাবেই চিন্তিত রাজ্যের শাসক দল। এদিকে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন এবং জাতীয় নাগরিকপঞ্জি নিয়ে যে আন্দোলন চলছে দেশজুড়ে তা নিয়ে সোমেন মিত্র এদিন বলেন, ‘দেশজুড়ে যে আন্দোলন চলছে এনআরসি এবং সিএএ সংক্রান্ত তাতে মুখ্য ভূমিকা গ্রহণ করেছে কংগ্রেস।’

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিন তৃণমূলকে কটাক্ষ করে সোমেন মিত্র আরও বলেন, ‘কেউ কেউ ভাবছেন, এনআরসি ও সিএএ নিয়ে আন্দোলনের দায়িত্ব তিনি একাই নিয়ে রেখেছেন। তাই এই ইস্যুতে অন্যান্য বিরোধীরা আন্দোলন করলে তাতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হচ্ছে। কিন্তু তাতে কেউই দমছেন না। আন্দোলন চলছেই।’ এদিন মালদার দায়িত্বপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষক আব্দুল সাত্তার জানিয়েছেন, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন এদিন দলীয় কর্মীদের, যাতে তাঁরা প্রত্যেকের বাড়ি বাড়ি যায় এবং কংগ্রেসের হয়ে পজিটিভ বার্তা দেয়। দলীয় কর্মীরা যাতে সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক শক্তি বিজেপির বিরুদ্ধে বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে কথা বলে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। কারণ কংগ্রেসদল একমাত্র ধর্মনিরপেক্ষ শক্তি সে কথা মানুষকে বোঝাতে হবে।

অন্যদিকে, পুরসভার নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এই মুহূর্তে বিভিন্ন ইস্যু, দুর্নীতি এবং মানুষের বঞ্চনার কথা তাঁদের প্রচারে তুলে ধরা হবে বলে দাবি আব্দুল সাত্তার এর। এ প্রসঙ্গে কংগ্রেসের জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক মোস্তাক আলম জানিয়েছেন, ‘প্রদেশ সভাপতি ও গৌরব গগৈয়ের নির্দেশ অনুযায়ী কংগ্রেস কর্মীরা নিজেদের এলাকায় ঝাঁপিয়ে পড়বেন। বিজেপি ও তৃণমূল যে একই বৃন্তে দু’টি কুসুম তা দুই দলের কার্যকলাপেই প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। বিজেপিকে সমর্থন করা মানে তৃণমূলকে সমর্থন করা। আবার উল্টো দিকটাও একই রকমের সত্যি। এই ব্যাখ্যার মাধ্যমেই বাম-কংগ্রেস জোটের গ্রহণযোগ্যতা মানুষের কাছে তুলে ধরা হবে।’

এদিকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির আসার আগেরদিন চূড়ান্ত উত্তেজনার সৃষ্টি হয় মালদায়। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, তৃণমূল কর্মীরা জোর করে তাদের পতাকা খুলে নিয়েছে। এই ঘটনায় চূড়ান্ত ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ‘কেউ গায়ের জোরে পতাকা খুলে ফেলতে পারে। কিন্তু মানুষের মন থেকে কংগ্রেসকে অত সহজে উপড়ে ফেলা সম্ভব হবে না।’ অন্যদিকে, কংগ্রেসকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, এই মুহূর্তে কংগ্রেস নেতাদের রাজনৈতিক জমি ফিরে পেতে গেলে নিজেদের সংগঠনকে আরো অনেক বেশি শক্তিশালী করে তুলতে হবে।

দেশের সর্বত্র যেখানে কংগ্রেস পিছিয়ে পড়ছে, সেখানে সংগঠন শক্তশালী করার দিকটি অনেক আগেই শুরু করা উচিত ছিল। তবে রাজনৈতিক মহলে কংগ্রেসের ফিরে আসা নিয়ে যথেষ্টই সন্দেহের অবকাশ রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক জমি থেকে কংগ্রেসের নাম অনেক আগেই মুছে গেছে বলে দাবি শাসক মহলের। আগামী পুরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল যেভাবে প্রচার শুরু করেছে এদিন সোমেন মিত্র বক্তব্য তারই ফলপ্রকাশ বলে দাবি রাজনৈতিক মহলের একাংশের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!