এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > রাজ্য সরকারের এই পদক্ষেপে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের তৃণমূলে ফেরার জল্পনা আরও তীব্র হল

রাজ্য সরকারের এই পদক্ষেপে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের তৃণমূলে ফেরার জল্পনা আরও তীব্র হল

একসময় বান্ধবী বৈশাখী বন্দোপাধ্যায়কে নিয়ে তৃণমূল দলের শীর্ষ নেতৃত্বের আপত্তির কারণে দীর্ঘদিনের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ত্যাগ করেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। মন্ত্রিত্ব থেকে মেয়র পদে ইস্তফা দিয়ে তিনি বুঝিয়ে দেন, তার কাছে বন্ধুত্বের সম্পর্ক সব থেকে আগে।পরবর্তীতে রাজ্যে তৃণমূলের বিরোধী শক্তি হিসেবে পরিচিত বিজেপিতে নাম লেখান শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়।

তবে বিজেপিতে যোগদানের পর থেকেও সময় খুব একটা ভালো যায়নি শোভনবাবুর। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সেই শোভন-বৈশাখী জুটিকে উদ্দেশ্য করে “ডাল-ভাত” উক্তি থেকে শুরু করে বিজেপিতে যোগদানের পর রাজ্যে প্রথম আসা শোভন চট্টোপাধ্যায়কে আমন্ত্রণ জানালেও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমন্ত্রণ না জানানো নিয়ে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়। পরবর্তীতে দিল্লিতে গিয়ে মুকুল রায়ের সঙ্গে শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় দেখা করলেও বিজেপির কোনো কর্মসূচিতে তাদের দেখা যায়নি। যা নিয়ে বিভিন্ন সময় রাজ্য রাজনীতিতে ছড়িয়ে পড়েছে জল্পনা।

 

অনেকের মনেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে, শোভন চট্টোপাধ্যায় আদৌ কি বিজেপিতে আছেন! নাকি রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস নিয়েছেন! আর এহেন একটা পরিস্থিতিতে এবার ভাইফোঁটার দিনে সকলের জল্পনা বাড়িয়ে দিয়ে কালীঘাটে নিজের প্রাক্তন নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের বাড়িতে গিয়ে ফোঁটা নিতে দেখা গেল শোভন চট্টোপাধ্যায়কে। যেখানে শোভনবাবুর সঙ্গে কালীঘাটের বাড়িতে উপস্থিত হতে দেখা যায় বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। বিজেপি নেতা হয়ে নিজের প্রাক্তন নেত্রীর বাড়িতে কেন এভাবে ফোটা নিতে গেলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়! তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন একাংশ।

তবে বিজেপির তরফে অনেকেই দাবি করেন, এই ভাইফোঁটা সামাজিক ইস্যু। তাই সেক্ষেত্রে তিনি ফোটা নিতে যেতেই পারেন। এর সঙ্গে রাজনীতিকে গোলালে চলবে না। কিন্তু বিজেপি নেতারা চাপে পড়ে যে সাফাই দিন না কেন, যে তৃণমূলের প্রতি বিতশ্রদ্ধ হয়ে শোভন চট্টোপাধ্যায় বিজেপিতে নাম লিখিয়েছিলেন, সেই বিজেপিতেও দীর্ঘদিন ধরে নিষ্ক্রিয় থেকে ভাইফোঁটার দিনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে তাঁর যে বিজেপির কাছে প্রবল অস্বস্তির কারণ, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত ছিল রাজনৈতিক মহল।

এবার রাজনৈতিক মহলের প্রত্যাশা অনুযায়ী সমীকরণ যে বদলেছে তা টের পাওয়া গেল এ দিনের ঘটনায়। শুক্রবার শোভন চট্টোপাধ্যায়কে রাজ্য সরকার তাঁর ওয়াই ক‍্যাটাগরির নিরাপত্তা ফিরিয়ে দিল। আর এই ঘটনা থেকে পরিষ্কার হয়ে গেছে, শোভন চট্টোপাধ্যায়ের তৃণমূল দলে ফেরা এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

 

গত বছরেই রাজ্য সরকার শোভন চট্টোপাধ্যায়ের নিরাপত্তা কমিয়ে নিয়েছিলেন। মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পর শোভন চট্টোপাধ্যায় পুরোপুরি পরিত্যাগ করেন রাজ্য সরকারের নিরাপত্তা বলয়। কিন্তু শুক্রবার সেই নিরাপত্তা বলয়ে আবারও একবার প্রবেশ করলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। রাজনৈতিক মহলের মতে ঘটনা থেকে পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে একটাই বিষয়, শোভন মমতার দূরত্ব আর নেই।

 

শোভনের ঘটনা নিয়ে এবার বিজেপি সত্যি সত্যিই বিড়ম্বনায় পড়েছে। রাজনীতির প্রেক্ষাপট অনুযায়ী বিজেপি কিন্তু একটু একটু করে শাসকদলের কাছে পিছিয়ে পড়ছে বলে মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। বেশ কিছুদিন যাবৎ বিজেপির হাত থেকে পশ্চিমবঙ্গের পৌরসভা, পঞ্চায়েতগুলি আবার হাতছাড়া হয়ে চলেছে। এবার শোভনও হাতছাড়া হবার অপেক্ষায়। এই সমস্ত ঘটনাগুলি একসূত্রে গাঁথা হলে দেখা যাবে, 2021 এর রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটা উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে চলেছে জনমানসে সমস্ত ঘটনাগুলি। প্রশ্ন উঠছে তাহলে কি বিজেপির সংগঠন পশ্চিমবঙ্গে পোক্ত হয়নি? লোকসভা ভোটে 18 টি আসন প্রাপ্তিও তাঁদেরকে কি পিছিয়ে দিল দলবদল এর খেলায়? তৃণমূল কি কিছুটা এগিয়ে গেল বিজেপির থেকে?

এই ঘটনায় রাজনৈতিক মহলে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। তবে বিজেপির পক্ষ থেকে নিরাপত্তা ফেরানোর ঘটনাটিকে সৌজন্যে প্রদর্শন বলে দাবি করা হয়েছে। তবে বিজেপি সূত্রের খবর, বিজেপি পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে ইতিমধ্যে চিন্তাভাবনা শুরু করে দিয়েছে ।অন্যদিকে রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে কি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য আবার একটি উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক সমীকরণ দেখার অপেক্ষায়? তবে এ নিয়ে এখনো পর্যন্ত শোভন চট্টোপাধ্যায় বা বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকাশ্যে কোনো বিবৃতি দেননি।

তবে শোভন-বৈশাখী পুরনো দলের শীর্ষ ব্যক্তিদের সঙ্গে সামাজিকতার সম্পর্ক যেভাবে ঝালিয়ে নিয়েছিলেন ভাইফোঁটার দিন এবং পরবর্তীতে আজ শোভন চট্টোপাধ্যায় যে উপহার পেলেন রাজ্য সরকারের তরফ থেকে, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে বেশ গুঞ্জন শুরু হয়েছে। আপাতত সমগ্র পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেছে রাজ্যের ওয়াকিবহাল মহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!