রাজ্যে এখন সুরক্ষিত নয় পুলিশও! তৃণমূল-ঘনিষ্ঠ নেতাদের গুলিতে প্রাণ দিতে হল আইনরক্ষককে নদীয়া-২৪ পরগনা রাজ্য November 5, 2019 স্থানীয় স্তরে সরকার ঘনিষ্ঠ দুষ্কৃতীরা যে কিভাবে সমাজবিরোধী কাজকর্মে লিপ্ত হয়েছে তা শুক্রবারের সন্দেশখালির ঘটনায় প্রমাণিত হল। পুলিশও যে এখন আর নিরাপদ নয়, সে কথা এই ঘটনায় আবারও প্রমাণিত। সাধারণত এরকম দৃশ্য আমরা সেলুলয়েডের পর্দাতেই দেখি। সেইরকমই এবার দেখা গেল সন্দেশখালির বউ-ঠাকুরানীর এলাকায়। আইন রক্ষকদের উপরেই রাতের অন্ধকারে গুলি চললো এবং এক পুলিশ কর্মী সেই গুলিতে প্রাণ হারালেন। আহত হয়েছেন এক এসআই ও এক সিভিক ভলেন্টিয়ার। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার রাতে সন্দেশখালি গ্রাম পঞ্চায়েতের বউ ঠাকুরানী এলাকায় কালী পূজা উপলক্ষে একটি জলসার আয়োজন করা হয়। সেই জলসাকে কেন্দ্র করেই এলাকার কুখ্যাত দুষ্কৃতী লাল্টু সর্দার ও কেদার সর্দারের নেতৃত্বে দুষ্কৃতী দল ওই এলাকার বাসিন্দা বিনন্দ মন্ডলকে মারধর করে। এমনকি তাঁর পেটে ভাঙা কাচের বোতল ঢুকিয়ে দেয়। খবর পেয়ে সন্দেশখালি থানার এসআই অরিন্দম হালদার, ভিলেজ পুলিশ কর্মী বিশ্বজিৎ মাইতি এবং সিভিক ভলেন্টিয়ার বাবুসোনা সিং সহ একটি পুলিশ টিম ওই এলাকায় যায় দুষ্কৃতীদের খোঁজে। ফুলপাড়া এলাকায় পুলিশের বাইক দেখতে পাওয়ার পর রাতের অন্ধকারে দুষ্কৃতীদের পক্ষ থেকে উড়ে আসে ঝাঁকে ঝাঁকে গুলি। সাথে সাথে লুটিয়ে পড়েন বিশ্বজিৎ মাইতি। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় এসআই অরিন্দম হালদার ও সিভিক ভলেন্টিয়ার বাবুসোনা সিং কোনরকমে নিজেদের বাঁচাতে সমর্থ হন। দীর্ঘসময় পুলিশকর্মী বিশ্বজিৎ মাইতি গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ওই স্থানেই পড়ে থাকেন। পরবর্তীতে ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশবাহিনী ও স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে উদ্ধার করে খুলনা হাসপাতালে নিয়ে যায়। সাথে অন্যান্য আহতদেরও নিয়ে যাওয়া হয়। শুক্রবার রাতে বিশ্বজিৎ মাইতিকে কলকাতায় পাঠানো হলে সেখানেই তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। অন্যদিকে, এসআই অরিন্দম হালদার ও সিভিক ভলেন্টিয়ার বাবুসোনা সিং মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে বলে জানা গেছে। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - পুলিশের দাবি, দুষ্কৃতীরা গুলি চালানোর পাশাপাশি পুলিশের দুটি বাইক জ্বালিয়ে দিয়েছে। রাতেই বসিরহাট পুলিশ জেলার এসপি কংকরপ্রসাদ বারুই এর নেতৃত্বে বিশাল পুলিশবাহিনী এলাকায় চিরুনি তল্লাশির পর দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে, লাল্টু সর্দার ও কেদার সর্দার। এই ঘটনায় এখনো এলাকায় উত্তেজনা অব্যাহত। পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, এলাকার পরিস্থিতি আপাতত নিয়ন্ত্রণে। তবে অন্যদিকে, স্থানীয় বাসিন্দাদের পক্ষ থেকে প্রাপ্ত সূত্র অনুসারে হামলাকারী 2 দুষ্কৃতী তৃণমূল ঘনিষ্ঠ বলে জানা গেছে। তাই স্থানীয় বাসিন্দাদের মনে তাদের শাস্তি নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। এই ঘটনায় শুধু সন্দেশখালি নয়, রাজনৈতিক মহলেও তুমুল আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। তবে এখনো পর্যন্ত এই ঘটনায় শাসক পক্ষ থেকে কোন বিবৃতি জারি করা হয়নি। অন্যদিকে, বিরোধী পক্ষের দাবি এ রাজ্যে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বাড়াবাড়ি চরমপর্যায়ে পৌঁছেছে। যার ফলস্বরুপ সন্দেশখালি ঘটনা চোখে আঙ্গুল দিয়ে এ রাজ্যের দুষ্কৃতী দৌরাত্ম দেখিয়ে দিল। রাজ্যের রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, দুষ্কৃতী রোধে প্রশাসনের তরফ থেকে আরো কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। আপাতত সমগ্র পরিস্থিতির ওপর কড়া নজর রাখছে প্রশাসন। আপনার মতামত জানান -