এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > বামফ্রন্ট > রাজ্যের প্রাক্তন হেভিওয়েট মন্ত্রীকে শাস্তি দিয়েও, অনুগামীদের ক্ষোভের আশঙ্কায় পিছু হঠছে দল!

রাজ্যের প্রাক্তন হেভিওয়েট মন্ত্রীকে শাস্তি দিয়েও, অনুগামীদের ক্ষোভের আশঙ্কায় পিছু হঠছে দল!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – একসময় পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গরবেতার বেতাজ বাদশা ছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী ও সিপিএম নেতা সুশান্ত ঘোষ। কিন্তু রাজনৈতিক পালাবদলের পর তাঁর কর্তৃত্ব চলে যায়। কঙ্কাল কাণ্ডে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। জেলে কিছুটা সময় কাটিয়ে তিনি ফেরেন। এরপর রাজনৈতিক কর্মকান্ড থেকে নিজেকে কিছুটা গুটিয়ে নিয়ে মনোনিবেশ করেন গ্রন্থ রচনায়। ‘ বামফ্রন্ট জমানার শেষ ১০ বছর ‘ নামের একটি গ্রন্থ লেখেন। এই গ্রন্থে তিনি দলের বিরুদ্ধে একাধিক বিতর্কিত কথা বলেছেন তথা বিষেদাগার করেছেন। তাই তাঁকে দল থেকে বহিষ্কারের দাবি ওঠে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মাত্র তিন মাসের সাসপেনশন অর্ডার দেওয়া হয় দলের পক্ষ থেকে।

প্রাক্তন মন্ত্রী সুশান্ত ঘোষের জনপ্রিয়তার কথা চিন্তা করেই দলের পক্ষ থেকে তার জন্য ছোট শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁকে তিন মাসের সাসপেনশন অর্ডার দিতেই দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন তাঁর বেশ কিছু অনুগামী ও দলের একটি অংশ। এতেই বোঝা যায়, রাজনৈতিক ক্ষমতা না থেকেও জনপ্রিয়তায় এখনও তিনি দলের অন্যন্য বহু নেতার থেকেই বহুদূর এগিয়ে আছেন। তাই এবার তাঁকে তিন মাসের সাসপেনশন থেকে মুক্তি দিয়ে কিভাবে সিপিএম দলের সাংগঠনিক কাজে তথা প্রত্যক্ষ রাজনীতির ময়দানে ফিরিয়ে আনা হবে সেই নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে সিপিএম দলের মধ্যে।

প্রসঙ্গত, প্রাক্তন মন্ত্রী সুশান্ত ঘোষ যখন কঙ্কাল কাণ্ডে গ্রেফতার হয়েছিলেন তখন থেকে তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ আনা হয়েছিল। কখনো তার বিরুদ্ধে আর্থিক তছরূপী, কখনো দলের প্রতি নিষ্ক্রিয়তা, কখনো শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছিল। এমনকি কঙ্কাল কাণ্ডে অভিযুক্ত এই নেতা গড়বেতায় ফিরে এলে, বহু সিপিএম কর্মীর মৃত্যু ঘটতে পারে এমন আশঙ্কাও করা হয়েছিল। পশ্চিম মেদিনীপুর সিপিএম জেলা কমিটি তাঁর বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছিল। আলিমুদ্দিন এর পক্ষ থেকেও তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। কিন্তু শেষপর্যন্ত কার্যকর করা যায় নি। তাঁর বিরুদ্ধে উত্থাপিত কোন অভিযোগই শেষপর্যন্ত ধোপে টিকতে পারে নি।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

দোর্দন্ডপ্রতাপ এই প্রাক্তন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে তেমন কোনো শাস্তি মূলক ব্যবস্থা গ্রহন করতে পারেনি দল। শুধুমাত্র তাঁর ‘বামফ্রন্ট জমানার শেষ ১০ বছর’ বইটি লেখার জন্য তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তি মূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও, সিপিএম দলের পক্ষ থেকে তাঁর জনপ্রিয়তা ও সাংগঠনিক দক্ষতার কথা বিবেচনা করেই তাঁকে লঘু শাস্তি দেবার ঘোষণা করা হয়। তাঁকে তিন মাসের জন্য দল থেকে বহিষ্কার খবর ছড়িয়ে পড়তেই, প্রতিবাদের ঝড় ওঠে সমর্থকদের সোশ্যাল মিডিয়ায়। তাঁর বিপুল সমর্থকদের সম্মিলিত প্রতিবাদে শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত বদলের পরিকল্পনা নিতে বাধ্য হচ্ছেন সিপিএম শীর্ষ নেতৃত্ব।

প্রসঙ্গত গত শুক্রবার সিপিএম রাজ্য কমিটির বৈঠকে যখন প্রাক্তন মন্ত্রী সুশান্ত ঘোষের বিরুদ্ধে শাস্তি মূলক ব্যবস্থা গ্রহণের কথা আলোচনা করা হচ্ছিল। সেই সময় কোন সিপিএম সদস্যই তাঁর বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ তোলেনি। এরপর তিন মাসের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর বাম দলের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়ে সিপিএম দলের একাংশ কর্মী। তাঁদের দাবি ছিল সুশান্ত ঘোষকে সিপিএম দলে পুনরায় পূর্ণ মর্যাদা, সন্মান দিতে হবে এবং সংগঠনের কাজে পূর্ণভাবে নামাতে হবে।

শুক্রবারের এই বৈঠকে সুশান্ত ঘোষ জানিয়েছেন, কি কারণে তিনি এই বইটি লিখেছিলেন। তাঁর বইয়ে পার্টির বিরুদ্ধে বেশ কিছু আপত্তিকর কথা ছিল। এ বিষয়ে তিনি জানান, ” পার্টি যা ভাল মনে করেছে তাই করেছে। আমি পার্টিতে ছিলাম, আছি ও ভবিষ্যতেও থাকব। ’’ এরপরে যখন তাকে তিন মাসের সাসপেনশন অর্ডার শোনানো হলো তখন তিনি জানান, ” নীতি ও আদর্শের জন্য সব কিছু ত্যাগ করা যায়, কিন্তু কোনও কিছুর জন্য নীতি ও আদর্শকে ত্যাগ করা যায় না।’’

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!