এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > কংগ্রেস > রাজ্য সরকারের বন্দিমুক্তির তালিকাতেও জাতি ও ধর্মের স্পষ্ট উল্লেখ, ক্ষুব্ধ বিরোধী মহল

রাজ্য সরকারের বন্দিমুক্তির তালিকাতেও জাতি ও ধর্মের স্পষ্ট উল্লেখ, ক্ষুব্ধ বিরোধী মহল


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – একে করোনা পরিস্থিতি, অন্যদিকে মানবিকতা রক্ষা এই দুইয়ের কারণে রাজ্যের মোট ৬৩ জন বন্দিকে মুক্তি দিল রাজ্য সরকার। গতকাল রাজ্যের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করে এ কথা জানানো হয়েছে। যারা মুক্তি পেয়েছেন তাদের মধ্যে অনেকেই রাজনৈতিক অপরাধ, খুনের মতো গুরুত্তর অপরাধের মামলায় অভিযুক্ত। তবে, তাদের মুক্তির যে সরকারি নির্দেশ জারি করা হয়েছে, সেখানে তাদের জাতি ও ধর্মের স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে। যা অত্যন্ত ক্ষুব্ধ করেছে বিরোধী শিবিরকে।

১৯৭৩ সালে জারি হওয়া ক্রিমিনাল প্রসিডিউর কোড ৪৩২ নম্বর ধারা অনুযায়ী, বন্দীদের মুক্তি দেবার অধিকার রাজ্যের হাতে রয়েছে। ইতিপূর্বেই জনজাতি অধিকার আন্দোলনের নেতা স্ট্যান স্বামী জেলে থাকা অবস্থায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। ৪ ঠা জুলাই করোনা আক্রান্ত হয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভেন্টিলেশন দেওয়া হয়েছিল তাকে। এর পরদিন তার মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে সরব হতে দেখা যায় একাধিক বিরোধী শিবিরকে। এসময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন যে, সকলে মিলে তারা রাস্ট্রপতির কাছে চিঠি লিখেছেন। নির্দিষ্ট কিছু রাজনৈতিক কারণে যাদের অভিযুক্ত করা হয়েছে। তাদের মুক্তি দেয়া হোক। স্ট্যান স্বামীর যেভাবে মৃত্যু হয়েছে, তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। যথাযোগ্য চিকিৎসা তিনি পাননি। ৬০,৬৫ বছরের বেশি সময় ধরে যারা জেলে রয়েছেন। এই অতিমারীর সময়ে তাদের মুক্তি দেওয়া উচিত।

এরপর গতকাল রাজ্যের যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত অভিযুক্ত যাদের বয়স ৬০ বছর পেরিয়ে গেছে, আর যারা ১৪ বছর ধরে জেলে রয়েছেন, এরকম ৬১ জনকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে মুক্তি দেয়া হয়েছে আরো দুজন মহিলাকে। তাদের বয়স ৫৫ বছর। অর্থাৎ মোট ৬৩ জন বন্দিকে মুক্তি দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে যে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে, সেখানে তাদের জাতি ও ধর্মের স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে। যে ঘটনা নিয়ে তীব্রভাবে সরব হয়েছে একাধিক বিরোধী শিবির।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এ প্রসঙ্গে কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য্য জানিয়েছেন যে, সাজা মুকুব করার সময় বন্দীদের ধর্ম বা জাতির পরিচয় উল্লেখ করায় তাঁরা অত্যন্ত বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ। বিচারক যখন বিচার করেন, তখন অভিযুক্তের ধর্মীয় ও জাতিগত পরিচয় দেখেন না তিনি। তাহলে এসব পরিচয় কেন টেনে আনা হবে? আবার, সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী জানিয়েছেন, পরীক্ষায় পাসের ঘোষণা থেকে শুরু করে জেলে বন্দী মুক্তি সবকিছুতেই ধর্মের পরিচয় উল্লেখ করা এখন রাজ্য সরকারের একটা রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এভাবে যদি চলতে থাকে তবে যারা ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করেন, তাদেরকে সুবিধা করে দেয়া হবে।

এ প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য জানিয়েছেন যে, অপরাধীদের কোন জাত-পাত ধর্ম হয় না, এটাই চিরকাল জানা ছিল। বর্তমান শাসক দলের রাজনীতি সেখান থেকে সরে এসেছে। মোমবাতি মিছিলে যারা অংশগ্রহণ করে থাকেন, তাদের এই বিষয়টি খেয়াল রাখা দরকার। অন্যদিকে, এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের মুখপাত্র কুনাল ঘোষ জানিয়েছেন যে, সরকারি অনেক ফর্মে এই ধরনের তথ্যের উল্লেখ থাকে। এর মধ্যে সাম্প্রদায়িকতা খোঁজার চেষ্টা করা ঠিক নয়। এখানে অন্য কারনে মুক্তি দেয়া হয়েছে। জাতি ও ধর্মের ভিত্তিতে তা করা হয়নি।

৬৩ জন বন্দিকে কেন হঠাৎ এভাবে মুক্তি দেয়া হলো? এ প্রসঙ্গে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, করোনা পরিস্থিতিতে মানবিকতা রক্ষার স্বার্থে এই ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। বন্দিমুক্তি নিয়ে স্বরাষ্ট্র সচিবের নেতৃত্বে রাজ্য সেন্টেন্স রিভিউ বোর্ড গঠন করা হয়েছিল। জানা যাচ্ছে, এই বোর্ডের সুপারিশ অনুযায়ী তাদের মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তাদের মুক্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের আচরণ, বয়স, তাদের মানসিকতা বদল, তাদের শারীরিক অবস্থা সহ একাধিক বিষয়ের যাচাই করা হয়েছিল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!