এখন পড়ছেন
হোম > জাতীয় > রামমন্দির সংক্রান্ত জমি কেলেঙ্কারী প্রসঙ্গ কার্যত বিপাকে ফেলছে গেরুয়া শিবিরকে, জল্পনা তুঙ্গে

রামমন্দির সংক্রান্ত জমি কেলেঙ্কারী প্রসঙ্গ কার্যত বিপাকে ফেলছে গেরুয়া শিবিরকে, জল্পনা তুঙ্গে


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – দেশ জুড়ে আজ দুর্নীতি সর্বত্র বলেই মনে করেন সাধারণ মানুষ। আর এবার দুর্নীতির হাত থেকে মুক্তি পেলেন না স্বয়ং ভগবান রামও। সম্প্রতি অযোধ্যা মন্দির তৈরি নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। আগেই অভিযোগ উঠেছিল, অযোধ্যা মন্দির প্রকল্পে যে টাকা দেওয়া হয়েছে সারা ভারত থেকে, তার মধ্যে সিংহভাগ টাকা পৌঁছে যাচ্ছে বিজেপি নেতাদের পকেটে।

যদিও এ ধরনের অভিযোগ উঠলেও তা প্রমাণ হয়নি। কিন্তু এবার দুর্নীতিসংক্রান্ত আরো বড় অভিযোগ উঠল অযোধ্যা মন্দির নিয়ে। জানা যাচ্ছে, অযোধ্যা মন্দির প্রকল্পে দেওয়া একটি সরকারি জমি  নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে এবং এই অভিযোগ মেনে নিয়েছেন অযোধ্যার দশরথ গদ্দি মন্দিরের মোহন্ত ব্রিজমোহন দাস নিজেই।

বেশ কিছুদিন যাবৎ বিজেপি বিরোধীরা সরব হয়েছে রাম জন্মভূমি সংলগ্ন একটি জমির লেনদেন হেতু। অভিযোগ উঠেছে, এই জমির হাতবদলে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। সূত্রের খবর, 18 ই মে দুই ব্যক্তির মধ্যে একটি জমি লেনদেন হয় দু কোটি টাকায়। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, সেই লেনদেন হওয়ার 10 মিনিটের মধ্যে জমিটি রামজন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টকে প্রায় নয়গুণ দামে বিক্রি করা হয়েছে।

স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনা সামনে আসায় বেড়েছে বিতর্ক। জমি বিতর্কে নাম জড়িয়েছে অযোধ্যার মেয়র তথা বিজেপি নেতা ঋষিকেশ উপাধ্যায়ের। জানা গিয়েছে, ফেব্রুয়ারি মাসে রাম জন্মভূমি সংলগ্ন একটি জমির 890 বর্গমিটার কুড়ি লক্ষ টাকায় মহন্ত দেবেন্দ্র প্রসাদাচার্যর থেকে মেয়রের ভাইপো দীপ নারায়ণ কিনে নেয়।

সেসময় জমিটির বাজার মূল্য ছিল 35 লক্ষ 60 হাজার টাকা। তিন মাসের মধ্যে ওই জমিটি রাম জন্মভূমি ট্রাস্টি বোর্ডকে আড়াই কোটি টাকায় বিক্রি করেন তিনি। অথচ দেখা যাচ্ছে, সরকারি নথি অনুযায়ী ওই জমিটি বেচাকেনার আওতায় ছিলনা। সূত্রের খবর, অযোধ্যা জেলার ভূমি রাজস্ব দপ্তরের নথিতে দেখা যাচ্ছে, ওই জমিটি হাত বদল হওয়ার বা ভোগ দখলের অধিকার থাকলেও বিক্রির অধিকার কারোর নেই।

অযোধ্যা ভূমি রাজস্ব দপ্তরের নথি অনুযায়ী জানা যাচ্ছে, রাম জন্মভূমি সংলগ্ন 135, 142, 129 এবং 201 নম্বর ক্রমিকের বিস্তীর্ণ জমির মালিকানা রয়েছে সরকারের হাতে। তবে এগুলো লিজ দেওয়া হয়। সেরকমই বিশ্বনাথ প্রসাদাচার্যকে 135 নম্বর জমির একটি অংশও লিজ দেওয়া হয়েছিল।এবং সেখানে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল যে তিনি শুধুমাত্র ভোগ দখল করতে পারবেন জমিটি, কিন্তু তার মালিকানা তিনি পাবেন না।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

পরবর্তীতে এই জমি পৌঁছে যায় তাঁর উত্তরসূরি দেবেন্দ্র প্রসাদাচার্যের হাতে। এখান থেকেই জমিটি মাত্র কুড়ি লক্ষ টাকায় কেনেন দীপ নারায়ণ। অন্যদিকে দেবেন্দ্র প্রসাদাচার্য এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, সরকারের জোরাজুরিতেই তিনি জমি ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, এই জমির 890 বর্গমিটার দেব নারায়ন এর কাছে কুড়ি লক্ষ টাকায় এবং 370 বর্গমিটারের অন্য একটি জমি বিক্রি করেন জগদীশ বসু প্রসাদকে দশ লক্ষ টাকায় বিক্রি করেন। দেখা যাচ্ছে, সরকারের জমি লিজ নিয়ে তা বিক্রি করে অন্তত 30 লক্ষ টাকা লাভ করেছেন দেবেন্দ্র প্রসাদাচার্য।

অন্যদিকে আবার মেয়রের ভাইপো এই জমি কোটি টাকায় বিক্রি করেন রাম জন্মভূমি বোর্ডের কাছে। এ প্রসঙ্গে বিরোধীদের দাবি, পুরো টাকাটাই মেয়রের ভাইপোর পকেটে ঢুকেছে। অন্যদিকে দশরথ গদ্দির মহন্ত ব্রিজ মোহনদাস জানিয়েছেন, তিনি এই জমি দেখাশুনা করতেন। তাঁকে জমি খালি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন অযোধ্যার সহকারি জেলাশাসক সন্তোষ কুমার সিংহ। সরকারি জমি মন্দির কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলেই তিনি জানতেন। তবে তিনি জানিয়েছেন, জমি যে এভাবে হাতবদল হয়েছে এবং টাকা-পয়সার লেনদেন হয়েছে তা তিনি জানতেন না।

এতদিন বেআইনিভাবে কোটি কোটি টাকার সরকারি জমি হস্তান্তর হচ্ছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে, তা নিয়ে অবশ্য অযোধ্যার জেলাশাসক এবং রাম জন্মভূমি ট্রাষ্ট্রের অন্যতম সদস্য অনুজ কুমার ঝা জানিয়েছেন, এ ধরনের কোনো অভিযোগ তিনি পাননি। সেক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠেছে, বেআইনি কাজের ক্ষেত্রে সরকারের তরফ থেকে কেন অভিযোগ দায়ের করা হবেনা? তারও বিশেষ সদুত্তর পাওয়া যায়নি জেলা শাসকের কাছ থেকে।

সব মিলিয়ে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, অযোধ্যায় রাম মন্দির সংক্রান্ত ব্যাপারটি প্রথম থেকেই অত্যন্ত স্পর্শকাতর ছিল। তবে বর্তমানে রাম মন্দির নির্মাণের সঙ্গে যেভাবে দুর্নীতি জড়িয়ে পড়ছে, তাতে কার্যত গেরুয়া শিবিরকেই প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে। আপাতত এই জমি কেলেঙ্কারি নিয়ে বড়োসড়ো বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে গেরুয়া শিবির বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!