প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –  কি পরিস্থিতি ধারণ করবে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় ইয়াস, তা কেউ জানেন না। যত সময় বাড়ছে, ততই মানুষের অস্থিরতা বাড়ছে। আতঙ্ক বাড়ছে এই ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়কে কেন্দ্র করে। এক বছর আগে যখন করোনা ভাইরাস মারাত্মক আকার ধারণ করেছিল, তখন আছড়ে পড়েছিল ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় আমফান। যার ফলে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। তবে সেই সময় বাড়িতে না গিয়ে সারারাত নবান্নে থেকে গোটা পরিস্থিতির উপর নজর রেখেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

আর তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর একদিকে করোনার দাপট এবং অন্যদিকে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ের আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। বুধবারের মধ্যে তা রাজ্যে আছড়ে পড়তে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। তাই এই পরিস্থিতিতে এক বছর আগেকার মতই দুর্যোগের সময় বাড়িতে বসে না থেকে মঙ্গল এবং বুধবার তিনি নবান্নেই রাত কাটাবেন বলে জানিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বস্তুত, যত সময় যাচ্ছে, ততই আতঙ্ক গ্রাস করেছে রাজ্যের উপকূলবর্তী জেলার মানুষদের মধ্যে। দক্ষিণ 24 পরগনা থেকে শুরু করে মেদিনীপুর, এই সমস্ত জায়গায় ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় দাপটের সঙ্গে আছড়ে পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। আর এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে কোনোভাবেই যে তিনি পালিয়ে যাওয়ার লোক নন, তা আবারও বুঝিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক্ষেত্রে আজ মঙ্গলবার এবং আগামীকাল বুধবার ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ের মুহূর্তে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে সরাসরি নবান্ন থেকে কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে গোটা রাজ্যের খবর তিনি রাখবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন বাংলার প্রশাসনিক প্রধান। যাকে স্বাগত জানাচ্ছে গোটা রাজ্যের মানুষ।

এক বছর আগে এভাবেই যখন আমফান ঝড় তাণ্ডব চালিয়েছিল, তখন নবান্ন থেকে গোটা ব্যবস্থার ওপর নজর রেখেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। আর তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর যেভাবে আবার দুর্যোগ শুরু হয়েছে, তাতে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সকলকে আশ্বাস দিতে চাইছেন তিনি। সূত্রের খবর, আজ এই প্রসঙ্গে নবান্নে একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। যেখানে তিনি বলেন, “আমপান থেকে শিক্ষা নিয়েছি। প্রয়োজনে সেনা নামানো হবে। দুর্যোগ আমাদের হাতে নেই। আটকাতেও পারব না প্রকৃতিকে। তবে আমি পাহারা দেব। পরিস্থিতি যাই হোক, ভরসা রাখুন। 25 এবং 26 তারিখ আমি রাত জেগে পাহারা দেব। আপনারা আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকুন।”

বিশ্লেষকরা বলছেন, তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর প্রতিমুহূর্তে চ্যালেঞ্জের মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে তৃণমূল সরকারকে। একদিকে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সামাল দিতে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছে রাজ্য‌। তার মধ্যে বুধবার ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। সেদিক থেকে তৃতীয় ইনিংস শুরু করা তৃনমূল সরকারের কাছে এই দুর্যোগ আটকানো এখন প্রধান অগ্নিপরীক্ষা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোনোভাবেই যাতে মানুষ অসুবিধায় না পড়েন, তার জন্য সমস্ত রকম চেষ্টা শুরু করেছে রাজ্য প্রশাসন।

বিভিন্ন জেলা প্রশাসনকে সতর্ক থাকার কথা বলা হয়েছে। তবে জেলা প্রশাসন থেকে শুরু করে রাজ্য প্রশাসন যখন দুর্যোগ মোকাবিলা করতে ব্যস্ত, তখন তিনিও যে হাত পা গুটিয়ে বসে থাকবেন না, তা কার্যত বুঝিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক্ষেত্রে এক বছর আগের মতই তিনি এই দুর্যোগ চলার সময় সাধারণ মানুষকে পাহারা দিতে জনগণের পাহারাদার হিসেবে নবান্নে অতন্দ্রপ্রহরীর ভূমিকা পালন করবে জানিয়ে দিলেন বাংলা প্রশাসনিক প্রধান।