প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – রাজ্যে মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অভিযোগ শোনা যায়। রাতে হোক বা দিনে যে কোন সময় মহিলাদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। কলকাতার বুকে এবার শ্লীলতাহানি হল এক যুবতীর। তাই নিয়ে ছড়িয়েছে চাঞ্চল্য। কলকাতার রাস্তায় মহিলারা যে মোটেও নিরাপদ নয়, সে কথা আবারও প্রমাণিত হলো। চলতি মাসের 22 তারিখে সন্ধ্যাবেলায় লেকটাউন এলাকার দক্ষিনদাঁড়ি বাসস্ট্যান্ডে শ্লীলতাহানীর শিকার হলেন কলেজ পড়ুয়া এক তরুণী।

অশ্লীল প্রস্তাব থেকে শুরু করে ক্ষুর দেখিয়ে মেরা ফেলার হুমকি- সবকিছু শুনতে হলো এক সন্ধ্যায়। ঘটনার কিছু অংশ ওই তরুণী মোবাইলে রেকর্ড করেছিলেন সাহস করে। এবং 24 তারিখ রাতে নিগৃহীতা তরুণী তাঁর ফেসবুকে পোস্ট করে দেন ভিডিওটি। যথারীতি সোশ্যাল মিডিয়ায় সাড়া পড়ে যায়। এরপর 25 তারিখ সকালে একটি ডিজিটাল সংবাদপত্রে খবরটি প্রকাশ হয়। জানা গিয়েছে, গাঙ্গুলী বাগানের বাসিন্দা ওই তরুণী 22 তারিখ রাত সাড়ে আটটায় দমদম থেকে 45 নম্বর বাসে উঠেছিলেন বাড়ি ফেরার জন্য।

কিন্তু বাসে উঠে তিনি জানতে পারেন ওই বাসটি গাঙ্গুলিবাগান পর্যন্ত যাবেনা। তখন তিনি নেমে পড়েন দক্ষিনদাঁড়ি বাসস্ট্যান্ডে। সেখানে যখন তিনি অপেক্ষা করছিলেন, তখন আচমকাই একজন অচেনা লোক এসে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করতে থাকে এবং তাঁর সাথে কথা বলার চেষ্টা করে। ঠিক এই সময় ওই তরুণীর পুরুষ বন্ধুটি ওই জায়গায় উপস্থিত হয় এবং বাধা দিতে শুরু করে। সে সময় পুলিশ হাজির হয় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। তরুণীর দাবি, পুলিশ তাঁদের ওই জায়গা ছেড়ে চলে যেতে বলে অভিযুক্তকে কিছু না বলে।

সেসময় তরুণী বাড়ি ফেরার জন্য উবের বুক করে। উবের ধরার জন্য তাঁরা রাস্তার অপর পাড়ে গিয়ে অপেক্ষা করলে সেখানে আবার অভিযুক্ত গিয়ে হাজির হয় এবং আচমকা তরুণীকে আক্রমণ করে শ্লীলতাহানি করে। সেসময় ওই তরুণীর পুরুষ বন্ধুটি বাধা দিতে গেলে তাঁকে ক্ষুর বার করে খুন করার ভয় দেখায় অভিযুক্ত। এরই মধ্যে উবের চলে আসে এবং তরুণী ও তাঁর বন্ধু উবেরে উঠে চলে যায়। পরদিন সকালে তাঁরা লেকটাউন থানায় এসে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। তবে পুলিশের কাছে তরুণী ওই অভিযুক্ত যুবকের কোন সঠিক পরিচয় দিতে পারেনি বলে জানা গেছে। তবে পুলিশের কাছে রেকর্ড ভিডিওটি পেশ করেছে সে এবং এরপর ভিডিও দেখে বিধান নগর থানার পুলিশ বিষয়টি তদন্ত শুরু করে।

গোয়েন্দা বিভাগের মনিটরিং সেল প্রযুক্তিগত সাহায্য নিয়ে উক্ত অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে। প্রসঙ্গত, অভিযুক্ত ব্যক্তি তরুণীর সাথে কথা বলার সময় জানিয়েছিল, সে গড়িয়াহাটের রাসবিহারীর বাসিন্দা। এই সূত্র ধরেই পুলিশের ডিডি টিম অভিযুক্তকে খুঁজে বার করে। গতকাল তাঁকে গ্রেপ্তার করে বৃহস্পতিবার মৃত ব্যক্তিকে বিধাননগর আদালতে পেশ করা হবে বলে জানা গিয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে জানার চেষ্টা চলছে, অভিযুক্ত কেন এরকম করলো এবং অভিযুক্ত মদ্যপ ছিল কিনা সেটাও জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে কলকাতার বুকে জনবহুল রাস্তায় যেভাবে এই কান্ড ঘটে গেল তা অত্যন্ত নিন্দনীয় বলে মনে করছেন নাগরিক সমাজ।