এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > গোয়েন্দা রিপোর্টের অপেক্ষায় আটকে ছিল রথের অনুমতি – আজ প্রধান বিচারপতির এজলাসে নির্ধারিত হবে ভাগ্য

গোয়েন্দা রিপোর্টের অপেক্ষায় আটকে ছিল রথের অনুমতি – আজ প্রধান বিচারপতির এজলাসে নির্ধারিত হবে ভাগ্য

আজ ৭ ডিসেম্বর কোচবিহার থেকে বিজেপির রথের রশিতে প্রথম টান পরবার কথা ছিল। কিন্তু আদালতের নির্দেশে থমকে গেল সেই কর্মসূচি। মাত্র একদিন আগে বৃহস্পতিবার হাইকোর্ট বিজেপি রথযাত্রার অনুমতি খারিজ করে দিল।

একইসঙ্গে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তী বিজেপিকে এই কর্মসূচি পিছিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিলেন । তার বক্তব্য, আগামী ৯ জানুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে। তার আগে কোনোভাবেই বিজেপি রথ যাত্রার কর্মসূচি গ্রহণ করতে পারবে না।

অন্যদিকে, আজ বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ এর হাত ধরে প্রথম রথ চলার কথা ছিল। কিন্তু একদিন আগেই আদালতের নির্দেশে এই অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ বেকায়দায় পড়ল বিজেপি। বিচারপতির নির্দেশে সঙ্গে সঙ্গেই মামলাকারীরা এই মামলায় প্রধান বিচারপতির হস্তক্ষেপ দাবি করেন। কিন্তু প্রধান বিচারপতি জানিয়ে দেন, আজ শুক্রবার তিনি পুরো বিষয়টি শুনবেন। যার ফলে স্বভাবতই কালকের মত আজও সবার নজর দিনভর পড়ে থাকবে হাইকোর্টের রায়ের দিকে।

এদিনের শুনানিতে কোচবিহারের জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের রিপোর্ট আদালতে পেশ করা হয়। যার উপর ভিত্তি করে মূলত নিরাপত্তার অজুহাতে রথযাত্রায় স্থগিতাদেশ দিল আদালত।

পাশাপাশি একই সঙ্গে এই দিন আদালতে গোয়েন্দাদের তরফ থেকে মুখবন্ধ খামে একটি রিপোর্ট বিচারপতিকে দেওয়া হয়। প্রথম দুই রিপোর্ট এর বক্তব্য অনুযায়ী,এ মুহূর্তে রথযাত্রার হলে ‘সাম্প্রদায়িক বিশৃঙ্খলা’ দেখা দিতে পারে। গোয়েন্দাদের মুখ বন্ধ খামের রিপোর্টে এই বিশৃঙ্খলার কারণ দেখানো হয়েছে। যা এতটাই গোপন যে মামলাকারীদেরও দেখানো হয়নি।

এদিকে মামলাকারীদের তরফ থেকে অন্যতম আইনজীবী সপ্তাংশু বসু দাবি করেন, অন্ততপক্ষে কোন তারিখে ওই রিপোর্ট তৈরি হয়েছে তা জানানো হোক। এটি স্রেফ ঘরে বসে বানানো। পাশাপাশি তিনি আরও বলেন,কয়েক দিন আগেই কোচবিহারের মাটিতে সিপিএমের সর্বভারতীয় নেতাদের রাজনৈতিক সমাবেশ হয়েছিল। তারপর তৃণমূল কংগ্রেসের ও জনসভা হয়। তখন যদি কোন সমস্যা না হয় তাহলে বিজেপির রাজনৈতিক কর্মসূচিকে নিয়ে এত সমস্যা হচ্ছে কেন?

অন্যদিকে রাজ্য সরকারের তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত জানান,”এখনো পর্যন্ত কেবলমাত্র কোচবিহারের রিপোর্ট হাতে এসেছে। রাজ্যের মোট ২৪ টি জেলার ৪০ টি আসনের নানা জাতি নানা ধর্মের মানুষ বসবাস করে। যার ফলে হুট করে রথযাত্রা নিয়ে প্রাসঙ্গিক সিদ্ধান্ত নিলে সমস্যা হতে পারে।”

শুনানির শুরুতে বিচারক প্রশাসনের উপর অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, রথযাত্রার জন্য অনুমতি চাওয়া হয়েছিল ২৯ অক্টোবর। তারপর অন্তত চার বার উদ্যোক্তারা প্রশাসনকে স্মারকলিপি দিয়েছে। তাঁর প্রশ্ন, এতদিন কেন প্রশাসন কোনও সিদ্ধান্ত নিল না? কোথায় আটকাচ্ছিল? সরকারি অফিসাররাই কি এই পরিস্থিতি তৈরি করেননি? এভাবে একের পর এক প্রশ্নে তিনি প্রশাসনকে বিদ্ধ করেন। বিচারপতির প্রশ্নের জবাবে প্রশাসনের তরফ থেকে জানানো হয়, এতদিন গোয়েন্দা রিপোর্টের অপেক্ষা করা হচ্ছিল। কেননা এই রথযাত্রার করতে গিয়ে যদি সাম্প্রদায়িক বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতি তৈরি হয় কোন অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটে তাহলে তার দায় কে নেবে?

পুলিশের তার থেকে আইনজীবী আনন্দ গ্রোভার দাবি করেন,”প্রশাসনের তরফ থেকে সাম্প্রদায়িক বিশৃংখলার যে সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছে। মামলা কারীরা তা অস্বীকার করতে পারেননি।”পাশাপাশি তিনি আদালতকে আরও জানান, কিছুদিন আগে ওই উদ্যোক্তাদের তরফ থেকে আয়োজন করা রামনবমী সমাবেশেও অশান্তি হয়েছিল।

অন্যদিকে বিজেপির আইনজীবী অনিন্দ্য মিত্র শুনানির শেষ পর্বে বলেন,”ভারতীয় সংবিধান তৈরি হওয়ার আগে ১৮৬১ সালের পুলিশ আইন অনুযায়ী। প্রশাসনের তরফ থেকে কোন অনুমতি খারিজ করার আগে আবেদনকারীকে ‘শোকজ’ নোটিশ দিতে হয়। প্রশাসন যদি তা না করে অনুমতি বাতিল করে তবে প্রশাসনের সিদ্ধান্ত বাতিল বলে গণ্য হওয়া উচিত।”পাশাপাশি তিনি রাজনৈতিক দলের গণতান্ত্রিক অধিকার নিয়ে সওয়াল করে বলেন,”মিছিল করার জন্য একটা রাজনৈতিক দলকে বারংবার আদালতের দ্বারস্থ হতে হচ্ছে। অথচ সংবিধান অনুযায়ী এটা প্রতিটি রাজনৈতিক দলের গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু প্রশাসন এই সত্যটা মানতে চাইছে না।”

বিচারপতির এই সওয়ালের প্রক্ষাপটে আদালতে তার থেকে জানানো হয়, এই রথযাত্রারর ফলে সাম্প্রদায়িক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়ে যদি কেউ মারা যান বা সম্পত্তি নষ্ট হয় তার দায় কি রাজনৈতিক দলটির নেতারা নেবেন। দীর্ঘ প্রায় ৫১ দিন ধরে যে যাত্রা চলবে তার সিদ্ধান্ত আরও আগে নিয়ে যেতে পারত। আজ উনি হুট করে অনুমতি দেওয়া হয় তাহলে এত পুলিশি নিরাপত্তা কিভাবে আয়োজন করা সম্ভব?

ফেসবুকের কিছু টেকনিকাল প্রবলেমের জন্য সব খবর আপনাদের কাছে পৌঁছেছে না। তাই আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে

 

এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

এ পরিপ্রেক্ষিতে আদালত জানিয়েছেন, সমস্ত জেলার ওদের সঙ্গে আলোচনা করে ২১ শে ডিসেম্বরের মধ্যে প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ৯ জানুয়ারি মামলার পরবর্তী শুনানি। তার আগে উদ্যোক্তাদের তরফ থেকে সমস্ত প্রশ্নের উত্তর স্পষ্ট করতে হবে।কর্মসূচি একদিন আগে আদালতে এহেন সিদ্ধান্তে বিপাকে পড়ল বিজেপি। এই মুহূর্তে পরবর্তীতে বিজেপির রথ যাত্রার কর্মসূচি আদৌ হবে কিনা তা স্পষ্ট করা অসম্ভব।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!