প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – পরিস্থিতি যাই হোক না কেন খবরের শিরোনামে ফের শাসক দলের গোষ্ঠী সংঘর্ষের অভিযোগ। রেশন দেওয়াকে কেন্দ্র করে উত্তাপ বাড়ল পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বরে। শুশুনিয়া পঞ্চায়েতের তুল্ল্যা গ্রামে শুক্রবার রাতে তৃণমূলের দুই দলের বিবাদের জেরে এই সমস্যা বলে মনে করা হচ্ছে। ভাঙচুর হয়েছে বাড়ি, মোটরবাইক। দুই মহিলা-সহ জনা দশেক আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ। ঘটনায় তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য গ্রামীণ বিবাদের জেরে এই ঘটনা বলে দাবি করেছেন।
পুলিশ এখনও পর্যন্ত চারজনকে গ্রেফতার করেছে বলে খবর।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার দুপুরে। এলাকার এক রেশন ডিলারের বিরুদ্ধে পরিমাণে জিনিস কম দেওয়া, কেরোসিনের দাম বেশি নেওয়া, গ্রাহকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার-সহ নানা অভিযোগ পেয়ে সে দিন দুপুরে মন্তেশ্বরের খাদ্য আধিকারিক, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ ভাণ্ডারপুরে ওই দোকানে যান। তখন বহু উপভোক্তা ডিলারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখান।

বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, ওই বিক্ষোভের সময়ে স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান পার্থ ঘোষের সঙ্গে ঘটনাস্থলে যান তুল্ল্যা গ্রামের বাসিন্দা, অঞ্চল যুব তৃণমূল নেতা নাসিরউদ্দিন খান ওরফে বিপু। নাসিরউদ্দিনের অনুগামীরা দু’জনকে মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেন বলে অভিযোগ। অভিযোগ, নাসিরউদ্দিনের অনুগামীরা তৃণমূলেরই অন্য গোষ্ঠীর কর্মী-সমর্থকদের বাড়িতে হামলা চালান। এমনকি, এক অন্তঃসত্ত্বাও মারের হাত থেকে রেহাই পাননি বলে অভিযোগ। গোলমালের সময়ে এলাকাতে গুলি চলেছেও বলে কেউ কেউ মনে করছেন।

নাসিরউদ্দিন অবশ্য সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেন, কিছু বহিরাগত তৃণমূলের পতাকা নিয়ে গ্রামে অশান্তি পাকিয়েছে। তাঁর বাড়িতেও ভাঙচুর, ট্রাক্টরে আগুন লাগানো হয়েছে বলে তাঁর দাবি। যদিও মন্তেশ্বরের তৃণমূল বিধায়ক সৈকত পাঁজার বক্তব্য, “পরিকল্পিত ভাবে এক দল লোক আমাদের কর্মীদের উপরে হামলা চালিয়েছে।”
যদিও ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের’ তত্ত্ব মানতে চাননি তৃণমূলের মন্তেশ্বর ব্লক সভাপতি আজিজুল হক। দলের নেতা তথা জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি দেবু টুডুরও বক্তব্য, “গ্রামীণ বিবাদকে ঘিরে এই ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ ব্যবস্থা নিচ্ছে।”

অপর দিকে ব্লক কার্যকরী সভাপতি আহমেদের অভিযোগ, “দলের নাম করে কেউ যদি দুর্নীতিকে আড়াল করতে চায়, তার প্রতিবাদ আমাদের কর্মীরা বারবার করবেন। তা করতে গিয়েই আক্রান্ত হয়েছেন আমাদের কর্মীরা।” জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) ধ্রুব দাস বলেন, “বচসা থেকে মারপিটের ঘটনায় চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুরু হয়েছে।” কেউ আবার বলছেন এই ঘটনা উদ্দেশ্য প্রণোদিত, পরিকল্পিত। মহকুমা রেশন ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সুশীল ঘোষ অবশ্য দাবি করেন, “মন্তেশ্বরের ওই রেশন ডিলার যে দামে কেরোসিন কিনেছিলেন, সেই দামেই বিক্রি করছিলেন। কিছু লোক তাঁকে পরিকল্পিত ভাবে হেনস্থা করার চেষ্টা করছে।”