এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > ঐতিহাসিক ডিএ মামলার রায় – কি বলছেন কর্মচারী আন্দোলনের রথী-মহারথীরা?

ঐতিহাসিক ডিএ মামলার রায় – কি বলছেন কর্মচারী আন্দোলনের রথী-মহারথীরা?

প্রিয় বন্ধু মিডিয়া এক্সক্লুসিভ – আজ বহু প্রতীক্ষিত ডিএ মামলার রায় দিল স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুন্যাল বা স্যাট। এদিন রায়ে সরকারি কর্মীদের সমস্ত দাবিদাওয়া মেনে নিয়ে সরকারি কর্মীদের মুখে হাসি ফুটিয়ে, তাঁদের পক্ষেই রায় দেয় স্যাট। মামলাকারী দুই সংগঠন কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়ীজ ও ইউনিটি ফোরাম, যে তিনটি মূল দাবি রেখেছিল, তিনটিই আজ মেনে নিল স্যাট।

অর্থাৎ, কেন্দ্রীয় হারে ডিএ, সিপিআই মেনে ডিএ ও বকেয়া ডিএর জন্য এরিয়ার – সবকিছুতেই সিলমোহর দিল স্যাট। আর এর ফলে বড়সড় জয় পেলেন রাজ্য সরকারি কর্মীরা বলেই মনে করছেন সকলে। এই ঐতিহাসিক রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে কি বলছেন সরকারি কর্মচারী আন্দোলনের রথী মহারথীরা? দেখে নিন একনজরে –

স্বাধীনতার পরে রাজ্যের সরকারি কর্মচারীরা আজ পর্যন্ত কোনোদিন কেন্দ্রীয় হারে ডিএ পায় নি। ফলে স্যাটের এই রায় সরকারি কর্মচারী, সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত কর্মচারী, পেনশনার, শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী থেকে শুরু করে পঞ্চায়েত বা পুরসভা কর্মী সকলের কাছেই এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। আমাদের যে যে দাবি ছিল, স্যাট নিজের রায়ে সবকিছুতেই মান্যতা দিয়েছে। ফলে, এটা আমাদের ১০০% জয়। স্যাট নির্দেশ দিয়েছে, আগামী ৩ মাসের মধ্যে এই রায় কার্যকর করতে। কিন্তু কনফেডারেশনের তরফে রাজ্য সরকারের কাছে আমাদের সবিনয় অনুরোধ, দয়া করে আর জেদ করবেন না। আমরা আপনারই কর্মচারী, আপনার রাজ্যের উন্নয়নে কর্মী হিসাবে আমরাই কাজ করি। তাই, ৩ মাস নয়, অর্ডারের কপি হাতে পাওয়ার ৩ ঘন্টার মধ্যে এই সংক্রান্ত জিও প্রকাশ করুন। তাহলেই সাধারণ মানুষ বুঝবেন যে রাজ্য সরকারের সদিচ্ছা আছে।

– সুবীর সাহা, কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়ীজ

এই রায়ের অপেক্ষা দীর্ঘদিন ধরে সরকারি কর্মচারীরা করছিলেন – এই রায় এক ঐতিহাসিক রায়। হাইকোর্টের পর স্যাটেও কেন্দ্রীয় হারে ডিএ ও বছরে দুবার করে ডিএ পাওয়ার যে সাংবিধানিক অধিকার তা আবার প্রতিষ্ঠিত হল। এছাড়াও দিল্লি ও চেন্নাইয়ে কর্মরত একই রাজ্য সরকারের কর্মচারীদের সঙ্গে এই রাজ্যে কর্মরত সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে যে একটা বেতন-বিভেদের ব্যাপার ছিল, তারও স্পষ্ট নির্দেশিকা থাকায় আমরা অত্যন্ত খুশি। এই রায়ের জন্য উদগ্রীব হয়ে সমগ্র কর্মচারী সমাজ দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষা করছিল। আমরা চাইব, রাজ্য সরকার এই রায় মেনে নিয়ে অবিলম্বে কর্মচারীদের বকেয়া ও ন্যায্য প্রাপ্য দিয়ে দেবে। তবে, রাজ্য সরকার যদি এর পরেও এই রায়কে মেনে না নিয়ে লড়াই চালিয়ে যেতে চায়, আমরা সেই লড়াইয়ের জন্যও প্রস্তুত।

– দেবপ্রসাদ হালদার, ইউনিটি ফোরাম

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

স্যাট আজ যে রায় দিয়েছে, তাতে আমরা অত্যন্ত খুশি। সরকারি কর্মচারীদের অধিকার ও দাবি সুপ্রতিষ্ঠিত হল। তবে, আমি মনে করি সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে পোস্টাল ব্যালটে রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা যে ক্ষোভের ঝড় তুলেছিলেন, তারই প্রতিফলন আজকের রায়। কেননা এর আগে এই স্যাটই রায় দিয়েছিল ডিএ সরকারের দয়ার দান, তারাই আজ ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে সাংবিধানিক ও ন্যায্য অধিকার বলে মেনে নিল। রাজ্যের পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিই এই রায় সামনে আনতে সাহায্য করেছে। আজকের রায়ের পরে আমাদের করা ডিএ নিয়ে মামলায় স্যাট এই একই রায় দেবে বলে আমরা আশা করছি।

– দেবাশীষ শীল, সরকারি কর্মচারী পরিষদ

স্যাট ডিএ নিয়ে যে রায় দিয়েছে, তাকে স্বাগত জানাচ্ছি। কিন্তু আদালত শুধুমাত্র নির্দেশ দিতে পারে, দাবি বা অধিকার ‘পাইয়ে’ দিতে পারে না। সেই দাবি ছিনিয়ে নিতে গেলে রাস্তায় নেমে আন্দোলন প্রয়োজন। এই রায় সরকার মেনে না নিলে, কর্মচারী স্বার্থে আগামী দিনে আমরা চারটি বাম সংগঠন রাস্তায় নেমে আন্দোলনের মাধ্যমেই দাবি ছিনিয়ে নেব। তবে, আজকের রায়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে, স্যাট কিন্তু নিজেদের পর্যবেক্ষনে মেনে নিয়েছে, এই রাজ্যে ২০১১ সাল পর্যন্ত কেন্দ্রীয় হার মেনেই প্রায় ডিএ দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, আবার প্রমাণিত হল বাম সরকার সত্যিই কর্মচারী দরদী সরকার ছিল, আর বর্তমান সরকারের আমলে কর্মচারীদের স্বার্থ বারেবারেই বিঘ্নিত হয়েছে বা হচ্ছে।

– বিজয় শঙ্কর সিংহ, কো অর্ডিনেশন কমিটি

তৃণমূল কর্মচারী সংগঠন যাঁরা করেন, তাঁরা সরকারের হয়েই কথা বলেন। কিন্তু আমি বিগত ৪০ বছরের ন্যায় এখনও কর্মচারীদের পাশেই আছি। আমি বরাবরই বলেছি ডিএ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি জনিত ক্ষতিপূরণ, এটা যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক, তাকে দিতে হবে। আমরা বাম জামানায় তীব্র আন্দোলনের ফলেই ৬ মাসের মধ্যে পে-কমিশন চালু করতে সক্ষম হয়েছিলাম। কিন্তু, আজকে আন্দোলন বিমুখ সরকারি কর্মচারীরা যে জায়গায় গিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন, আজকের রায়ের ফলে সেখান থেকে অনেকটাই বেরিয়ে আসা গেছে। যাঁরা বাস্তব জায়গার উপর দাঁড়িয়ে উপলব্ধি করেছেন এবং দীর্ঘ লড়াই করে এই আইনি অধিকার ছিলিয়ে এনেছেন, তাঁদের সকলকেই অভিনন্দন। আদালতের এই রায়কে বাস্তব জায়গায় দাঁড়িয়ে অস্বীকার করার কোনো জায়গা নেই, আদালতের এই রায়কে আমি স্বাগত জানাচ্ছি। কেন্দ্রের অনুদান, জিএসটি ও আভ্যন্তরীন রাজস্ব আদায় আগের থেকে বহুগুন বেড়ে গেছে, একথা স্বয়ং অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন। সুতরাং, আদালতের এই রায়কে সম্মান জানানো উচিত বলেই আমি মনে করি।

– মনোজ চক্রবর্তী, তৃণমূল সরকারি কর্মচারী ফেডারেশন

আজকের রায়ের মোট তিনটি দিক আছে। প্রথমত, মামলাকারী দুই সংগঠন কনফেডারেশন ও ইউনিটি ফোরামকে কর্মচারী স্বার্থে এই আইনি জয় ছিনিয়ে আনার জন্য আমি অভিনন্দন জানাচ্ছি। দ্বিতীয়ত, আদালত নিজের পর্যবেক্ষনে জানিয়েছে ২০১১ সাল পর্যন্ত রাজ্য সরকার সরকারি কর্মচারীদের পাওনা-গন্ডা মেটানোর ক্ষেত্রে একটা নিয়ম মেনেই চলছে। অর্থাৎ, একথা আবারো প্রমাণিত হল, বাম সরকার কর্মচারী স্বার্থেই কাজ করেছে। তৃতীয়ত, আজকের এই জয়, দীর্ঘদিনের কর্মচারী আন্দোলনেরই ফল, লড়াইয়ের জয়। আগামীদিনে এই সরকার যদি এর থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের সঠিক প্রাপ্য ও বেতন দিয়ে দেয় ভালো। নাহলে, আদালত ও রাস্তা – সবজায়গাতেই আন্দোলন চলবে।

– সঙ্কেত চক্রবর্তী, স্টিয়ারিং কমিটি

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!