এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > কেমন হল রেড রোডের বহু প্রতীক্ষার দুর্গাপুজোর কার্নিভাল – জেনে নিন

কেমন হল রেড রোডের বহু প্রতীক্ষার দুর্গাপুজোর কার্নিভাল – জেনে নিন

তখন সবে সূর্য অস্ত গেছে। আকাশ কিছুটা লাল। লাল, নীল, সবুজ, হলুদ আলোয় তখন যেন ভেসে যাচ্ছে রেড রোড। গান চলছে, “আমি তোমার ছায়ায় থাকি মা… তোমার চোখের তারায় বাঁচি মা…” এই দৃশ্য আর অন্য কোথাকার নয়। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে পালিত হয় দুর্গা কার্নিভালের। ঘোষণা অনুযায়ী 6 নম্বর পুজো নপাড়া দাদাভাই সংঘের প্রতিমার ঠিক আগেই পুজো কমিটির পক্ষ থেকে মূল মঞ্চের সামনে বেশ কয়েকজন বৃদ্ধা হুইল চেয়ারে করে উপস্থিত হলেন।

আর আশ্চর্যজনকভাবে দেখা গেল, সেই হুইল চেয়ারের সঙ্গে সেগুলির গায়ে একটি করে ত্রিশূল রাখা হয়েছে। আর এই বয়স্কাদের দেখেই মঞ্চ থেকে নিচে নেমে এলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একে একে নিজের মমতাময়ী ছোয়ার মধ্যে দিয়ে বৃদ্ধাদের জড়িয়ে ধরতে দেখা গেল মুখ্যমন্ত্রীকে।

কিন্তু এই উৎসব বিসর্জনের উৎসব হলেও যখন এই ক্লাবের দুর্গা প্রতিমা আসছিল, তখন যেন সাধারণ মানুষের উল্লাসে মনে হচ্ছিল, ফের বোধনের পর্ব শুরু হতে চলেছে। জানা যায়, রাজ্য সরকারের উদ্যোগে এই কার্নিভাল বিকেল সাড়ে চারটায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বেলা দুপুর দু’টোর অনেক আগে থেকেই গোটা রেড রোডে অসংখ্য মানুষের ভিড় জমতে শুরু করে। ঠিক চারটে 50 মিনিটে অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

আর প্রশাসনিক প্রধান অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছানোর পরই সেখানে সস্ত্রীক উপস্থিত হন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকার। তিনি গাড়ি থেকে নামতেই তাকে অভ্যর্থনা জানান মুখ্যমন্ত্রী। আর এরপরই পুলিশকর্মীরা একের পর এক বাইকে চড়ে রাস্তায় স্ট্যান্ড দেখানো দিয়ে শুরু হয় দুর্গা কার্নিভাল। পরবর্তীতে বাংলার কৃষ্টি-সংস্কৃতির অত্যন্ত পরিচিত হিসেবে মহিষাসুরমর্দিনী পালার মধ্যে দিয়ে ছৌ শিল্পীরা সকলের মন কেড়ে নেন। হাততালিতে ফেটে পড়ে গোটা রেডরোড।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

জানা যায়, এই ছৌ নাচ দেখতে বড়ই উৎসুক ছিলেন রাজ্যের রাজ্যপাল জগদীপ ধনকার। তবে মুখ্যমন্ত্রী এবং মন্ত্রিপরিষদেরা যে মঞ্চে বসেছিলেন, সেই মঞ্চের সামনে ছৌ নাচ অনুষ্ঠিত হওয়ায় এবং রাজ্যপাল অন্য মঞ্চে বসে থাকায় তা ঠিকমত দেখা হয়নি তার। যার ফলে উঠে দাঁড়িয়ে সেই ছৌ নিত্য দেখবার চেষ্টা করেন তিনি। পরে নিজের পছন্দমত চেয়ার সেট করে সেই জায়গায় বসে উপভোগ করেন দুর্গা কার্নিভাল।

এদিকে ছৌ নিত্য শেষ হওয়ার সাথে সাথেই গায়ক অভিজিৎ দত্তের ঢাকের বাদ্যির মধ্যে দিয়ে ধীরে ধীরে এগিয়ে আসে শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাব। যে ক্লাবে ঢাকের তালে স্বামীকে সাথে নিয়ে নাচতে নাচতে শোভাযাত্রায় পা মেলাতে দেখা যায় অভিনেত্রী সাংসদ নুসরাত জাহানকে। উপস্থিত ছিলেন এই শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবের অন্যতম কর্তা তথা রাজ্যের মন্ত্রী সুজিত বসুও।

আর এরপর এক ফোটাও চোখের বিরাম পাননি কেউ। একডালিয়া এভারগ্রীন, ঐকতান বালিগঞ্জ সার্বজনীন, কাশি বোস লেনের মত হেভিওয়েট ক্লাবের দুর্গা প্রতিমাগুলো একে একে তাদের শোভাযাত্রা নিয়ে আসতে শুরু করে। রাজ্যের অনেক হেভিওয়েট মন্ত্রী সে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য হোক বা অরূপ বিশ্বাস, অনেককেই বিভিন্ন ক্লাবের সঙ্গে সেই শোভাযাত্রায় পা মেলাতে দেখা যায়।

আর যাদের জন্য এই গোটা অনুষ্ঠান এদিন ব্যাপক সাফল্য পেল, সেই পুলিশ প্রশাসনের কর্মীরা কঠোর পরিশ্রমের মধ্যে দিয়ে ঘেমে নিয়ে এক হয়ে গেলেও অনুষ্ঠান শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের ধৈর্য ছিল চোখে পড়ার মত। সব মিলিয়ে বহু প্রতিক্ষিত রাজ্য সরকারের উদ্যোগে রেড রোডে আয়োজিত দুর্গা কার্নিভাল ব্যাপক সাফল্য পেল বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!