এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > আরএসএসের সুরেই সুর মেলালেন অধীর, জল্পনা তুঙ্গে

আরএসএসের সুরেই সুর মেলালেন অধীর, জল্পনা তুঙ্গে


লোকসভায় তিনি কংগ্রেসের দলনেতা। প্রখর তৃণমূল বিরোধী হলেও বিজেপি বিরোধিতায় তার একমাত্র হাতিয়ার হবে বলে মনে করেছিল রাজনৈতিক মহল। কিন্তু বাংলার সাংসদ হয়ে, লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা হিসেবে তিনি যে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে বিন্দুমাত্র ছেড়ে দেবেন না, তা ফের আরও একবার প্রমাণ করে দিলেন কংগ্রেসের অধীর চৌধুরী।

সংসদে যেমন বিজেপি বিরোধিতায় সরব হতে দেখা যাচ্ছে তাঁকে, ঠিক তেমনই এবার আরএসএসের সুরেই সুর মিলিয়ে পশ্চিমবাংলায় তৃণমূল কংগ্রেসকে সরাতে রাষ্ট্রপতি শাসনের পক্ষে সওয়াল করতে দেখা গেল লোকসভার কংগ্রেসের দলনেতাকে। যে ঘটনা এবার রাজ্য রাজনীতিতে তুমুল জল্পনা সৃষ্টি করেছে। কেননা বিজেপি বিরোধীতায় যখন সমস্ত রাজনৈতিক দল এক হতে চাইছে, তখন রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে সরাতে আরএসএসের সুরে সুর মিলিয়ে অধীর রঞ্জন চৌধুরী ঠিক কি বার্তা দিতে চাইলেন! তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে শুরু হয়েছে গুঞ্জন। কিন্তু ঠিক কী ইস্যুতে রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে এহেন মন্তব্য করলেন অধীর চৌধুরী!

বস্তুত, গত মঙ্গলবার বিজয়া দশমীর দিনে মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জে নিজের বাড়িতে খুন হতে হয় এক শিক্ষক, তার ছেলে এবং তার সন্তানসম্ভবা স্ত্রীকে। তবে আশ্চর্যজনক ভাবে এত বড় খুনের ঘটনা ঘটে গেলেও এখনও পর্যন্ত এই ব্যাপারে কোনো কিনারাই করতে পারেনি পুলিশ। ইতিমধ্যেই এই ব্যাপারে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সরকারকে কিছুটা হলেও বিরম্বনায় ফেলেছেন রাজ্যের রাজ্যপাল জগদীপ ধনকার। যা নিয়ে পাল্টা রাজ্যপালকে সংযত হওয়ার বার্তা দিয়েছেন তৃণমূল মহাসচিব তথা শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। যার ফলে বর্তমানে রাজ্যপাল বনাম নবান্নের সম্পর্কের তিক্ততা এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আরও বাড়তে শুরু করেছে বলে বিশ্লেষকদের।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

আর এই পরিস্থিতিতে জিয়াগঞ্জের এই ঘটনা নিয়ে নিহত শিক্ষককে নিজেদের কার্যকর্তা বলে দাবি করে রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি তুলেছেন আরএসএসের সিনিয়র নেতা এবং আন্তর্জাতিক কার্যনির্বাহী সভাপতি অলোক কুমার। তিনি বলেন, “আমি অবাক হই পশ্চিমবঙ্গে আইনের শাসনভার ভারতীয় সংবিধান অনুসারে কি চলতে পারে না! এই বিষয়টি কেন্দ্রীয় সরকারকে বিবেচনা করার সময় এসেছে। অবিলম্বে বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসন আরোপের বিষয়টি বিবেচনা করুক কেন্দ্র।”

পাশাপাশি সম্প্রতি রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবিতে তারা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব হবে বলেও জানিয়ে দিয়েছেন বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসু। আর এবার সায়ন্তন বসু এবং আরএসএসের সুরে সুর মিলিয়ে লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা বলেন, “পরিস্থিতি বিবেচনা করে যদি সেটা যুক্তিযুক্ত হয়, তাহলে অবশ্যই রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা উচিত।”

পাশাপাশি অধীর রঞ্জন চৌধুরী এই ব্যাপারে বিজেপিকেও কিছুটা কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দেন। তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৈঠকের পর সারদা তদন্ত থমকে গিয়েছে। তাই বিজেপি নেতারা রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে যতই অভিযোগ করুক, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কিছু হবে না। মুখ্যমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রী মধ্যে চুক্তি হয়েছে।”

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এদিন অধীর রঞ্জন চৌধুরী নিজের বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে এক ঢিলে দুই পাখি মারার চেষ্টা করলেন। একদিকে যেমন রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির কথা বলে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে চাপে রাখতে চাইলেন তিনি, ঠিক তেমনই বিজেপি এবং কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদির চুক্তি হয়েছে বলে রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসনের ব্যাপারে কেন্দ্রের উদ্দেশ্যে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন তিনি। তবে শেষ পর্যন্ত রাজ্যের শাসকদলের চাপ বাড়িয়ে অধির রঞ্জন চৌধুরির এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হয় কিনা, এখন সেদিকেই তাকিয়ে সকলে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!