এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > আন্দোলনের ঠিক আগে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে শিক্ষক নেতাদের বৈঠক নিয়ে জল্পনা, জেনে নিন আসল সত্যি

আন্দোলনের ঠিক আগে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে শিক্ষক নেতাদের বৈঠক নিয়ে জল্পনা, জেনে নিন আসল সত্যি


রাজ্যের লক্ষ লক্ষ প্রাথমিক শিক্ষকদের পাখির চোখ এখন পিআরটি স্কেল আদায়। আর সেই লক্ষ্যে একের পর এক আন্দোলন করে রাজ্য-রাজনীতিতে রীতিমত ঝড় তুলে দিচ্ছেন শিক্ষক নেতারা। প্রাথমিক শিক্ষকদের সংগঠন উস্থি ইউনাইটেড প্রাইমারি টিচার্স অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন বা ইউইউপিটিডব্লুএর নেতৃত্ত্বে এর আগে গত ২৯ ও ৩০ শে অক্টোবর শহীদ মিনারের পাদদেশে এক বড়সড় ধর্ণা-আন্দোলন কর্মসূচি নেওয়া হয়।

সেই কর্মসূচির ব্যাপকতা এতটাই ছিল যে, রাজ্যের প্রধান তিন বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি বিজেপি, বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস – এক মঞ্চে এসে শিক্ষকদের সমর্থন জানান। এমনকি, স্বয়ং শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সেই নিয়ে নিজের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে এক বেসরকারি বৈদ্যুতিন চ্যানেলে শিক্ষকদের সরাসরি ‘অযোগ্য’ বলে বসেন। যা রীতিমত আগুনে ঘৃতাহুতির কাজ করে শিক্ষক আন্দোলনে। ধর্ণা-আন্দোলনে যোগ দেওয়া শিক্ষকরা পার্শ্ববর্তী ডোরিনা ক্রসিংয়ে গিয়ে বিক্ষোভ দেখতে থাকেন।

আর সেই নিরীহ শিক্ষক আন্দোলনকে বাগে আনতে রাজ্য সরকার শিক্ষক নেতাদের গ্রেপ্তারির পথে হাঁটে। গ্রেপ্তার হন মোট ১১২ জন শিক্ষক নেতা – আর তারপরেই তাঁদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে লকআপ ও ধর্ণা মঞ্চ থেকে অনশনের পথে যান শিক্ষকরা। শেষ পর্যন্ত রাজ্য সরকার সেই চাপের কাছে নতিস্বীকার করে গ্রেপ্তার করা শিক্ষকদের নিঃশর্ত মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। অন্যদিকে, বিরোধী রাজনৈতিক নেতারা চলতি শীতকালীন অধিবেশনে এই নিয়ে আলোচনার কথা জানানোয় তখনকার মত আন্দোলন তুলে নেন শিক্ষকরা।

এরপরে শিক্ষক নেতারা বিধানসভার বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান ও বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তীর নেতৃত্ত্বে দেখা করেন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর সঙ্গে। সেখানে তাঁরা শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে এক ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের দাবি জানান। যা রাজ্যপাল অত্যন্ত মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং যথাবিহিত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান। এই পরিস্থিতিতে, স্কুলের স্পোর্টসের চাঁদা বয়কটের পথে হাঁটেন শিক্ষকরা – যা রীতিমত চাপ বাড়িয়েছে রাজ্য সরকারের।

ফেসবুকের কিছু টেকনিকাল প্রবলেমের জন্য সব খবর আপনাদের কাছে পৌঁছেছে না – তাই আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে

এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

আর আজ, উস্থির ব্যানারে সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারে জমায়েত করে এক মহামিছিল করে কলকাতা প্রেসক্লাবে গিয়ে এক সাংবাদিক বৈঠক করার কথা শিক্ষকদের। যেখানে, জেলে যাওয়া ১১২ জন শিক্ষককে সংবর্ধনা দেওয়ার পাশাপাশি প্রাথমিক শিক্ষকদের ধর্না, অবস্থানের সময়ে শিক্ষামন্ত্রীর শিক্ষকদের প্রতি উক্তির প্রতিবাদ জানানো এবং তাঁদের ন্যায্য বেতনের দাবির পক্ষে প্রমাণিত কাগজপত্র সাংবাদিকদের দেখানোর কথা। আর এই কর্মসূচিকে সামনে রেখে, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শিক্ষকরা আজ কলকাতামুখী।

কিন্তু, কাকতালীয়ভাবে সেই আন্দোলনের ঠিক প্রাকমুহূর্তে গতকাল সন্ধ্যা থেকে একটি ছবি রীতিমত ভাইরাল হয়ে গেছে নেট দুনিয়ায়। যেখানে দেখা যাচ্ছে, শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দাঁড়িয়ে আছেন ইউইউপিটিডব্লুএর রাজ্য সভাপতি সন্দীপ ঘোষ, রাজ্য সম্পাদিকা পৃথা বিশ্বাস ও অন্যান্য শীর্ষ নেতারা। এই ছবির সঙ্গেই নানা বিভ্রান্তিকর মন্তব্যও প্রকাশিত হতে থাকে। কেউ লিখেছেন ‘সেটেলমেন্ট হয়ে গেল’, তো কেউ লিখেছেন ‘এর পরে ২৩ তারিখের আন্দোলন কি লোক দেখানো’?

আমরা যেহেতু, দীর্ঘদিন ধরেই এই আন্দোলন পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে আপনাদের সামনে তুলে ধরছি – তাই আমাদের কাছেও এই নিয়ে ফোন থেকে মেসেজ আসতে থাকে ঝড়ের গতিতে। আর তাই সত্যিটা জানার জন্য আমরা যোগাযোগ করি উস্থির শীর্ষনেতাদের সঙ্গে। তাঁরা শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে গত ১৯ শে নভেম্বরের কথা স্বীকার করে নেন। কিন্তু, তার সঙ্গে সঙ্গেই রাজ্যের লক্ষ লক্ষ প্রাথমিক শিক্ষকদের স্বার্থে যে লড়াই তাকে ‘সেটেলমেন্ট’-এর মত নিম্নরুচির শব্দ জুড়ে দেওয়া নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানান।

এই প্রসঙ্গে সংগঠনের রাজ্য সভাপতি সন্দীপ ঘোষ ইতিমধ্যেই এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, আমরা মনে করেছি শিক্ষামন্ত্রীর জানা উচিত আমাদের দাবী গুলি কি। না হলে ভবিষ্যতে বলবেন আমি কিছুই জানতাম না। উনি আমাদের দাবিগুলি মন দিয়ে শুনেছেন এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে বলেছেন – ২০০৯-এর দাবি ২০১৮-য় করছেন! আমরা যা বলার বলেছি এবং আমাদের মূল দাবি পে রিভিশনের কথা বারবার উল্লেখ করেছি।

সন্দীপবাবু আরও জানিয়েছেন, উনি (শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়) বলেছেন চেষ্টা করবেন – যতটা করবার করে দেবেন। এবার আমাদের কথা হল ২৩ তারিখের প্রোগ্রাম যে রকম কথা হয়েছিল, সে রকমই হবে – আন্দোলন বন্ধ হবে না। আমরা স্পোর্টসের চাঁদা সম্পর্কেও জানিয়েছি, উনি ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন। সব শেষে বলি ইউইউপিটিডব্লুএ তার অরাজনৈতিক চরিত্র তুলে ধরবে – যে কোনও দল বা নেতার কাছে পিআরটি স্কেল নিয়ে তার সাহায্য চাইবে। আমাদের একটাই লক্ষ্য – যে কোনও মূল্যে রাজ্যের লক্ষ লক্ষ প্রাথমিক শিক্ষকদের জন্য পিআরটি স্কেল আদায় করা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!