এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > নদীয়া-২৪ পরগনা > রূপকথা লেখা হল আল্লার দরবারে! ধর্মকে সরিয়ে রেখে মসজিদ হল পরিযায়ী শ্রমিকদের কোয়ারেন্টাইন,প্রশংসা সর্বত্র!

রূপকথা লেখা হল আল্লার দরবারে! ধর্মকে সরিয়ে রেখে মসজিদ হল পরিযায়ী শ্রমিকদের কোয়ারেন্টাইন,প্রশংসা সর্বত্র!


সম্প্রতি সারা দেশজুড়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে উঠেছে জোর বিতর্ক। সংক্রমণ ঠেকাতে অচিরেই শুরু হয়ে গিয়েছিল লকডাউন। লকডাউন হবার ফলে সমস্ত জায়গায় কাজকর্ম বন্ধ হয়ে যায়। ফলে প্রায় না খেয়ে দিন কাটাতে শুরু করেন পরিযায়ী শ্রমিকরা। এর পরেই তাঁরা ঘরে ফেরার পথ ধরেন। কারোর কাছে কোন সাহায্য না পেয়ে রীতিমতো পায়ে হেঁটে বিস্তৃত মাইল অতিক্রম করতে শুরু করেন তাঁরা। রাস্তাতেই অনেকে মৃত্যুবরণ করেছে বলেও আমরা খবরে দেখেছি।

অন্যদিকে রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকরা আসার সাথে সাথেই তাই নিয়ে শুরু হয়েছে জোর বিতর্ক। ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের করোনা সংক্রামিতের সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে অনেকটাই। এমনকি এই পরিযায়ী শ্রমিকদের কোয়ারেন্টাইন সেন্টার নিয়েও শুরু হয়েছে বিভিন্ন টালবাহানা। সমাজের অনেক মানুষই এই পরিযায়ী শ্রমিকদের শুধুমাত্র করোনা হবার আশঙ্কায় সমাজে ব্রাত্য করে দিয়েছে অনেকেই। অনেকেই দাবি করছে, বাইরের রাজ্য থেকে এসেও এই পরিযায়ী শ্রমিকরা হোম কোয়ারেন্টাইনের সরকারি বিধি নিষেধ মানছেন না।

যার ফলে সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়ছে অনেকটাই। অন্যদিকে বহু স্কুল এই মুহূর্তে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে পরিণত হয়েছে। যা নিয়ে সম্প্রতি সংসদ মহুয়া মৈত্র সোশ্যাল মিডিয়ায় সওয়াল করেছেন বলে জানা গেছে। ইতিমধ্যেই জেলা প্রশাসনের লোকজন এই বিষয়টি নিয়ে উদ্যোগী হয়েছেন বলে খবর। অন্যদিকে অনেক জায়গায় কোয়ারেন্টাইন সেন্টার খুলতে বাধাও দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। এই অবস্থায় পরিযায়ী শ্রমিকদের কোয়ারেন্টাইন সেন্টার করা নিয়েই উঠে গেছে প্রশ্ন।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এই পরিস্থিতিতে পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য এক অন্যরকম কোয়ারেন্টাইন সেন্টারের ব্যবস্থা করলেন শান্তিপুরের গোপালপুর পুরাতন মসজিদ কমিটি। শান্তিপুরের গোপালপুর পুরাতন মসজিদের বেশ কিছুটা অংশ তাঁরা বিভিন্ন রাজ্য থেকে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের কোয়ারেন্টাইন সেন্টার করার জন্য ছেড়ে দিয়েছেন বলে জানা গেছে। মসজিদেরই অন্য একটি অংশে সরকারি বিধি নিষেধ মেনে নামাজ পড়া হচ্ছে। সূত্রের খবর, এই কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে যাঁরা আছেন, তাঁদের জন্য আলাদা শৌচাগার, আলো এবং পাখার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।

এপ্রসঙ্গে মসজিদ কমিটির সভাপতি রহমত আলী জানিয়েছেন, মানুষ না বাঁচলে ধর্ম পালন কে করবে? পরিযায়ী শ্রমিকরা নিজেদের সংসার অতিবাহিত করার জন্য ওই এলাকা ছেড়ে ভিন রাজ্যে গিয়েছিল। আপাতত তাঁরা যখন সমস্যায় পড়েছে, তা দেখার দায়িত্ব সবার। তাই তাদের জন্য মসজিদের একাংশ ছেড়ে দিয়ে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার করা হয়েছে বলে জানা গেছে। অন্যদিকে সূত্রের খবর, ওই মসজিদে কামালউদ্দিন শেখ নামে একজন নামাজ পড়তে আসেন এবং কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে থাকা পরিযায়ী শ্রমিকদের দেখভাল করেন।

সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে শান্তিপুরের গোপালপুর পুরাতন মসজিদ কমিটি একটি অনন্য উদাহরণ স্থাপন করলেন সমাজের সামনে। যে পরিযায়ী শ্রমিকদের একেবারে অচ্ছুত করে রাখা হয়েছে করোনা বাহক সন্দেহে, সম্প্রতি তাঁদেরকে নিজেদের ধর্মস্থানে স্থান দিয়ে সম্প্রীতির মিলন ছবি প্রকাশ করলেন গোপালপুর পুরাতন মসজিদ কমিটির লোকজন। এই ঘটনা সামনে আসার সঙ্গে সঙ্গে বিশেষজ্ঞদের পক্ষ থেকেও প্রশংসা করা হয় এই সিদ্ধান্তের। অন্যদিকে পরিযায়ী শ্রমিকরাও মসজিদ কমিটির লোকজনের কাছে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বলে খবর।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!