এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > বর্ধমান > শাসকদলের কাছে চিহ্নিত হয়ে যাওয়ার ‘ভয়’, বিজেপির স্টিকার লাগাতে বা পতাকা তুলতে রাজি নন কর্মী-সমর্থকরা

শাসকদলের কাছে চিহ্নিত হয়ে যাওয়ার ‘ভয়’, বিজেপির স্টিকার লাগাতে বা পতাকা তুলতে রাজি নন কর্মী-সমর্থকরা


দলের হাইকমান্ডারের নির্দেশকে উপেক্ষা করে নিজেদের ঘরে দলীয় পরিচয়পত্র লাগানোর ঝুঁকি নিচ্ছেন না পশ্চিম বর্ধমানের বিজেপি কর্মীরা। সম্প্রতি দলের কর্মী সমর্থকদের লোকসভা ভোটের প্রেক্ষিতে উজ্জীবিত করতে বাড়িতে বাড়িতে ‘আমার পরিবার বিজেপি পরিবার’ স্টিকার লাগানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন খোদ বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ।

সর্বভারতীয় সভাপতির যুক্তি ছিল,এটা করলে দলের কর্মী সমর্থকদের চাঙ্গা করার পাশাপাশি তাঁদের চিহ্নিত করতেও সুবিধা হবে যার ফলে কোনো সমস্যা হলে সহজেই তাঁদের পাশে দাঁড়ানো যাবে। সেই পরিকল্পনা মতো রাজ্য থেকে প্রায় এক লক্ষ স্টিকার পাঠানো হয়েছিল পশ্চিম বর্ধমানে। কিন্তু এভাবে দলীয় কর্মী সমর্থকদের চাঙ্গা করা যাবে না বরং বিপদ বাড়বে বলেই মনে করছেন দলের অনেকেই।

তৃণমূল শাসিত বাংলায় বিজেপির জন্যে পরিস্থিতি এতোটাই প্রতিকূল যে হাতে গোনা কয়েকজন ছাড়া বাড়িতে পদ্মফুলের ঝান্ডা তুলতে ভয় পাচ্ছেন প্রায় সবাই। দলের একাংশের মতে,অমিত শাহ একরম সিদ্ধান্ত নিয়ে লোকসভা ভোটের মুখে বাংলার বিজেপি সমর্থকদেরই বিপাকে ফেললেন। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশ অমান্য করার জেরে জেলা নেতৃত্ব সমস্যায় পড়লেন,তা বলাবাহুল্য। এ নিয়ে রাজ্যনেতৃত্বের কাছে তাকে কৈফিয়ত দিতে হতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।

বিজেপির নেতৃত্বের একাংশের মতে,পশ্চিম বর্ধমানে বিশেষ করে আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রে দলের বেশ কিছু সমর্থক ও কর্মী রয়েছেন। কিন্তু দক্ষ সংগঠকের অভাবে দলের একতা বজায় রাখা যাচ্ছে না। গোষ্ঠীকোন্দলের মতো সমস্যাগুলো মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে বারবার। তাছাড়া লোকসভা ভোটের মুখে এখন দলীয় অন্দরে প্রার্থী নির্বাচন নিয়েও মতানৈক্য শুরু হয়েছে।

দলের এক গোষ্ঠী আসানসোল লোকসভা আসনে প্রার্থী বদলের কথা বললে অন্য গোষ্ঠী তা সমর্থন করছে না। একই অবস্থা দুর্গাপুরের বিজেপি সংগঠনেরও। তবে সেখানের দলীয় সংগঠনের অবস্থা আসানসোলের মতো দূর্বল নয়। তবুও সংগঠনকে কাজে লাগানোই বড় চ্যালেঞ্জের হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এই অবস্থায় কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মতে বাড়িতে বিজেপির স্টিকার না লাগিয়ে অন্যভাবে দলের সংগঠনকে মজবুত করার পক্ষপাতী অনেকেই।আসানসোলের এক বিজেপি নেতা বলেন,’অনেকেই স্টিকার বা দলীয় পতাকা নিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু, কেউ তা লাগাচ্ছেন না। সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর তা ব্যর্থ হলে কর্মীদের মধ্যেও ভুল বার্তা যায়।’

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

একই বক্তব্য অন্য এক স্থানীয় বিজেপি নেতারও। তিনিও দলীয় সংগঠনকে চাঙ্গা করতে অমিত শাহের এই দলীয় কর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে স্টিকার লাগানোর এই পরিকল্পনাকে সমর্থন করলেন না।তিনি জানান,এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সর্বভারতীয় সভাপতির আরেকটু বিবেচনা করার দরকার ছিল।

যুক্তি,বিজেপির স্টিকার বাড়িতে লাগানো হলে তৃণমূল সহজেই বিজেপি কর্মীদের চিহ্নিত করতে পারবে। তাতে বিরোধীদের দলে টানার জন্য চাপ সৃষ্টি করতে সুবিধা হবে তাঁদের। এতে বিজেপি কর্মী সমর্থকদের মনোবলে আঘাত আসবে। এই মুহূর্তে দলীয় কর্মীদের নিরাপত্তা দেওয়া যেখানে জেলা নেতৃত্বদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জের সেখানে দলকে চাঙ্গা করতে অমিত শাহের এই সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক বলেই মনে করছেন তিনি।

তবে বিজেপির জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের গলায় শোনা গেল আবার অন্য সুর। তাঁর বক্তব্য,কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশ মেনে অনেকেই দলীয় পতাকা এবং স্টিকার বাড়িতে লাগাচ্ছেন। তৃণমূল যতোই হুমকি দিক না কেন বিজেপিকে দমাতে পারবে না। শুধু এই জেলা নয় গোটা রাজ্যেই বিজেপিকে ভয় দেখাতে তৎপর শাসকদল।

তবে বিজেপির এই অভিযোগ মানতে নারাজ জোড়াফুল শিবির। তৃণমূল নেতা প্রবোধ রায় জানান,’মিথ্যা অভিযোগ করে লাভ নেই। স্টিকার লাগানোর মতো লোক না পেয়ে ওরা অজুহাত খাড়া করছে।’

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!