শাসকদলের দুর্নীতি ঢাকতেই কি বিরোধীদের অ্যাকাউন্টে টাকা দেওয়া হচ্ছে? এবার বিস্ফোরক অভিযোগ! কলকাতা রাজ্য June 20, 2020 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – কথায় আছে, কর্তার জন্য মারে হাঁস, আর গুষ্টিসুদ্ধ খায় মাস। ভয়াবহ দুর্যোগ আমপানে অনেক মানুষের বাড়িঘর ভেঙে পড়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে সেই সমস্ত মানুষদের বাড়িঘর করে দিতে তাদের কুড়ি হাজার টাকা করে আর্থিক সাহায্য দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্তদের ব্যাংক একাউন্টে সেই টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও, তা এখন চলে যাচ্ছে তৃণমূল, সিপিএম এবং বিজেপি নেতাদের অ্যাকাউন্টে। ইতিমধ্যে এই ব্যাপারে নানা পঞ্চায়েত প্রধান থেকে শুরু করে নানা জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। আর এবার হাবরা 2 ব্লকের গুমা 2 পঞ্চায়েতে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের বদলে নেতাদের অ্যাকাউন্টে টাকা দেওয়ার অভিযোগ উঠল। যার জেরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্থরা টাকা পাচ্ছেন না। তার বদলে সেই টাকা চলে যাচ্ছে এই পঞ্চায়েতের তৃণমূল, সিপিএম এবং বিজেপি সদস্যদের কাছে। ইতিমধ্যেই এই ব্যাপারে গ্রামবাসীদের পক্ষ থেকে তদন্তের দাবি করা হয়েছে। পাশাপাশি সেই একই দাবি করতে দেখা গেছে ভারতীয় জনতা পার্টিকেও। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - বলা বাহুল্য, এতদিন তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে দুর্যোগের টাকা আত্মসাৎ করে নেওয়ার অভিযোগ তুলেছিল বিরোধীরা। কিন্তু এবার এই পঞ্চায়েতে শাসক-বিরোধী নির্বিশেষে সকল সদস্যদের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকার রীতিমতো নয়া বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। তবে বেশ কিছু পঞ্চায়েত সদস্য ইতিমধ্যেই বিডিওকে চিঠি দিয়ে তারা এই টাকা ফেরত দিতে চান বলে জানিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু কেন এমনটা হচ্ছে? ক্ষতিগ্রস্তরা টাকা না পেয়ে কেন পঞ্চায়েত সদস্যদের অ্যাকাউন্টে টাকা যাচ্ছে? এদিন এই প্রসঙ্গে সিপিএমের পঞ্চায়েত সদস্য গৌতম দাস টাকা ফেরতের কথা বলে দাবি করেন, শাসক দলের নেতা-কর্মীরা নিজেদের দুর্নীতি অন্যের ঘাড়ে চাপাতেই তাদের পঞ্চায়েত সদস্যদের নাম ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় ঢুকিয়ে দিয়েছে। একইভাবে বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্য সচ্চিদানন্দ মন্ডলের অ্যাকাউন্টেও ক্ষতিপূরণের টাকা ঢুকেছে। এদিন এই প্রসঙ্গে বিজেপির অশোকনগর বিধানসভা কেন্দ্রের আহ্বায়ক স্বপন দে বলেন, “আমাদের একজন সদস্যের ব্যাংক একাউন্টে টাকা ঢুকেছে। সেটি পঞ্চায়েত থেকে সাম্মানিক পাওয়া অ্যাকাউন্ট। তিনি টাকা ফেরতও দিচ্ছেন।” তাহলে কি তালিকা তৈরিতে গলদ ছিল? এদিন এই প্রসঙ্গে প্রধান জেসমিন গাজীর স্বামী মনির গাজী বলেন, “আমাদের দলের যাদের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকেছে, কেউ টাকা তোলেনি। এখন ইন্টারনেটের যুগ। চক্রান্ত করে আমাদের পঞ্চায়েত সদস্য এবং কর্মীদের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে এই ব্যাপারে অশোকনগরের তৃণমূল বিধায়ক ধীমান রায় বলেন, “উপ-প্রধানের ব্যাংক একাউন্টে কোনো টাকা ঢোকেনি। তার দুই ভাই প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত। তাই তারা টাকা পেয়েছেন। দলের পঞ্চায়েত সদস্য যাদের একাউন্টে টাকা ঢুকেছে, তারা বিডিওর কাছে চিঠি দিয়ে ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন, তারা টাকা ফেরত দিতে চান।” কিন্তু এত বড় ঘটনা ঘটবে কেন? যেখানে সরকারের পক্ষ থেকে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা অনুযায়ী সাহায্য করা হচ্ছে, সেখানে কেন বেছে বেছে জনপ্রতিনিধিদের অ্যাকাউন্টে সেই টাকা যাচ্ছে? প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্থরা তাহলে তো দিনকে দিন বঞ্চিত হচ্ছেন। এতটা গলদ আসছে কোথা থেকে? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যে যাই বলুক না কেন কিছুটা হলেও তো দুর্নীতির গন্ধ এই ঘটনা থেকে পাওয়া যাচ্ছে। এতদিন এই বিষয়ে তৃনমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলত বিরোধীরা। কিন্তু এবার যেভাবে দলমত নির্বিশেষে জনপ্রতিনিধিদের অ্যাকাউন্টে ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা চলে যাচ্ছে, তাতে মানুষ যে এখন বড় অসহায়, তা একপ্রকার স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। এখন জনপ্রতিনিধিরা টাকা ফেরত দেওয়ার পর তা প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের অ্যাকাউন্টে যায় কিনা এবং কতদিন এইভাবে চলতে থাকে, তার দিকেই নজর থাকবে সকলের। আপনার মতামত জানান -