এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > নদীয়া-২৪ পরগনা > শাসকদলের প্রতিষ্ঠা দিবসে দলীয় নেতাদের তোলাবাজি নিয়ে বিস্ফোরক হেভিওয়েট মন্ত্রী!

শাসকদলের প্রতিষ্ঠা দিবসে দলীয় নেতাদের তোলাবাজি নিয়ে বিস্ফোরক হেভিওয়েট মন্ত্রী!

দলের প্রতিষ্ঠা দিবসের দিনও গোষ্ঠীকোন্দলের থেকে মুক্তি মিলল না তৃণমূলের। এদিন দলীয় আভ্যন্তরীন দ্বন্দ্বের অভিযোগ উঠল ভাঙড় তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। তৃণমূলের ২১ তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষ্যে রেজ্জাকপুত্র তথা দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদ সদস্য মুস্তাপ আহমেদ তাঁদের অফিসে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

সেই অনুষ্ঠানেই রাজ্যসরকারের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও উদ্যান পালন দপ্তরের মন্ত্রী এবং ভাঙড়ের বিধায়ক আব্দুর রেজ্জাক মোল্লা গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা প্রকাশ্যেই স্বীকার করে নেন এবং একইসঙ্গে দলের এক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে তোলাবাজি এবং সিন্ডিকেটরাজ্যের গুরুতর অভিযোগও তোলেন তিনি।

পরোক্ষভাবে আরাবুল ইসলাম এবং ব্লক সভাপতি ওহিদুল ইসলামের দিকে অভিযোগের আঙুল তোলেন তিনি,এমনটাই অভিমত বিশ্লেষকদের। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রেজ্জাক মোল্লা সাফ কথায় তোলাবাজি করা,সিন্ডিকেটরাজ চালানো এবং কাটমানি নেওয়া নেতাদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখার পরামর্শ দেন।

পাশাপাশি ভাঙড়ের রাস্তাঘাটের বেহাল দশার কথা স্বীকার করে নিয়ে তিনি আশ্বাস দেন নতুন বছরে জামিরগাছি থেকে নিউটাউন অব্দি বাগজোলা খালপাড় সড়কের মেরামতি করার। ভাঙড়-লাউহাটি এবং ভাঙড়-বোয়ালঘাটা রাস্তার প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ শুরু হয়েছে বলেও জানালেন তিনি। এছাড়া ভাঙড়ে হিমঘর করার প্রতিশ্রুতিও দিলেন তিনি এদিন।

রেজ্জাক মোল্লার দলের বিরুদ্ধেই তোলাবাজির অভিযোগের বিরুদ্ধে সরব হতে দেখা যায় আরাবুল ইসলামকে। গর্জে উঠে বলেন,”যারা অভিযোগ করছে তারাই নিজেরা তোলাবাজ। তোলাবাজি করার জন্য তারা বিভিন্ন জায়গায় অফিস খুলছে। ওদের পিছনে লোক নেই।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিন তৃণমূলের অন্য এক ব্লক স্তরের নেতা হাবিবুর রহমান বিশ্বাসও নামোল্লেখ না করে ভাঙড়ের প্রাক্তন বিধায়ক আরাবুল ইসলাম ও তৃণমূলের ব্লক সভাপতি ওহিদুল ইসলামকে হুমকি দিয়ে বলেছেন,তিনি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কথামতো তোলা তুলতে পারেন নি বলেই ষড়যন্ত্র করে তাকে দল থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে গোপনে।

পাশাপাশি ২০১৬ সালে ভাঙড়ের জনপ্রিয় নেতা রেজ্জাক মোল্লাকে হারানোর অনেক চেষ্টা করেছিলেন বলেও আক্রমণ শানান তিনি। হাবিবুর সাহেবের এই অভিযোগের বিরুদ্ধে সরব হন হাকিমুল ইসলাম। বলেন,হাবিবুর রহমান জমি আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থাকায় তাকে দলে ডাকা হয়নি।

প্রসঙ্গত,নিউটাউন সংলগ্ন হাতিশালা সিক্সলেন মোড়ে প্রায় ২০০ মিটারের মধ্যে তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসে মোট তিনটি অনুষ্ঠান হয়। মুস্তাক আহমেদের অনুষ্ঠানের পাশাপাশি আরো দুটি অনুষ্ঠান হয়। একটি তৃণমূল শ্রমিক সংগঠণের ব্লক সভাপতি জুলফিক্কার মোল্লার ও আরেকটি সংখ্যালঘু সেলের ব্লক সভাপতি হাজি ইসমাইল মোল্লার। একদিকে যখন মঞ্চে উঠে বক্তব্য রাখছেন রেজ্জাক মোল্লা,মুস্তাক আহমেদ,নান্নু হোসেনরা তখনই তার সামান্য দূরেই ভাষণ দিচ্ছেন আরাবুল ইসলাম, ওহিদুল ইসলাম, জুলফিক্কার মোল্লারা।

ভাঙড়ের তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরে যে কতোটা মনোমালিন্য চলছে তার প্রমাণ এদিনের তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে একই জায়গার দলীয় কর্মীদের পৃথক পৃথক আয়োজন। তারপর অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে বিভিন্ন দুর্নীতিমূলক কর্মকান্ডের প্রসঙ্গ তুলে যেভাবে দলের এক গোষ্ঠী অন্য গোষ্ঠীর দিকে অভিযোগের আঙুল তুলল তাতে দলীয় আভ্যন্তরীণ কোন্দলের কথা আর ধামাচাপা থাকল না। গোটা ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে তৃণমূলের নীচুতলার কর্মীদের মধ্যে।

এক কর্মী তো এই প্রেক্ষিতে বলেই ফেললেন,”আমরা বুঝে উঠতে পারছিনা কারা প্রকৃত তৃণমূল। কাদের সঙ্গে থাকবো আমরা।” আসন্ন লোকসভা ভোটের প্রেক্ষিতে দলীয় সংগঠনকে দূর্বল করে দিতে এবং শাসকদলের ভাবমূর্তিকে নষ্ট করতে এই গোষ্ঠীকোন্দল যে সক্রিয় ভূমিকা নিচ্ছে তা নিয়ে সন্দেহ নেই কোনো। এই মুহূর্তে ভাঙড় তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে লাগাম টানতে দলনেত্রী কী পদক্ষেপ নেন সেটাই দেখার!

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!