এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > সাবধানতাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে শাসক দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ ভরা বাজারে

সাবধানতাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে শাসক দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ ভরা বাজারে

করোনা সংক্রমণ এড়াতে বর্তমানে রাজ্য জুড়ে চলছে লকডাউন পরিস্থিতি। সারাবিশ্ব যেখানে করোনার ভয়াবহতায় ত্রাহি ত্রাহি রব উঠেছে। ভয়াবহ সংকটের মুখে মানবজাতি। সাধারণ গরিব মানুষদের খাবারের সংস্থান করতে প্রতিটি দেশ, প্রতিটি রাজ্য এই মুহূর্তে সচেতন। মানবিকতার খামতি দেখা দিচ্ছে না কোথাও। সেই পরিস্থিতিতেই সম্প্রতি খানাকুল এলাকায় তীব্র গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব দেখা গেল। সূত্রের খবর, লকডাউনের মাঝেই বাজার এলাকা সরানোকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের দুই দলের মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ শুরু হয়।

উত্তপ্ত হয়ে ওঠে হুগলির খানাকুলের বালিপুর বাজার এলাকা। পরিস্থিতি এতটাই অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে যে, আসরে নামতে হয় পুলিশকে। কিন্তু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গেলে পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমা ও গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের দুই স্থানীয় নেতার বিরুদ্ধে। করোনার সংক্রমণ এড়াতে চলছে লকডাউন পরিস্থিতি। কড়া নির্দেশ জারি করা হয়েছে জনসমাবেশের উপর। কিন্তু সরকারি নির্দেশকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে খানাকুলের বালিপুর বাজারে বেশ কয়েকজন জমায়েত হয়েছিলেন বলে জানা গেছে।

সেই জমায়েত সরাতেই ওই স্থানে হাজির হন স্থানীয় তৃণমূল নেতা শেখ নবী ও তার অনুগামীরা। কিন্তু জমায়েত সরাতে গেলে তাঁরা বাধাপ্রাপ্ত হন আরেক স্থানীয় তৃণমূল নেতা শেখ সাকিম ও তাঁর অনুগামীদের কাছে। শুরু হয় তীব্র সংঘর্ষ, যার জেরে আহত হন শেখ নবীর বেশ কয়েকজন অনুগামী এবং এক সিভিক ভলান্টিয়ার। পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে শীঘ্রই ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছায় পুলিশ। সেই সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে সাকিমের অনুগামীরা গুলি ও বোমা ছোঁড়েন বলে জানা গেছে।

এই মুহূর্তে এলাকায় চরম উত্তেজনা রয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলে পুলিশ পিকেটিং বসানো হয়েছে। অন্যদিকে বোমাবাজি করার অভিযোগে ইতিমধ্যে পুলিশের হাতে ধরা পড়েছেন দুই তৃণমূল কর্মী শেখ সাদ্দাম এবং শেখ রাজেশ। এই ঘটনা প্রসঙ্গে স্থানীয় তৃণমূল নেতা শেখ নবী জানিয়েছেন, লকডাউনের মাঝেই সরকারি নির্দেশ উপেক্ষা করে যে জমায়েত হয়েছিল তা সরানোর জন্যই তিনি এলাকায় গিয়েছিলেন। সে সময় ওই স্থানে হাজির ছিলেন আরেক তৃণমূল নেতা শেখ সাকিম। তাঁকে নবী অনুরোধ করেন বাজার অন্য জায়গায় সরিয়ে নেওয়ার জন্য।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এবং জানা গেছে, তারপরেই শেখ সাকিম হামলা শুরু করে। অন্যদিকে, এই অভিযোগের বিপক্ষে শেখ সাকিমও হামলার অভিযোগ এনেছেন বলে জানা গেছে। শেখ সাকিম এর বক্তব্য হলো, “এলাকায় দাপিয়ে বেরান নবি৷ সকালে বাজার ফাঁকা করে দেন । সকালে এলাকার বাজার স্কুলমাঠে বসানোর কথা বলতে গিয়েছিলাম । আমাদের কোনও কথা না শুনে ওঁরা গুলি চালান ।” যদিও পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর কথা তিনি অস্বীকার করেছেন বলে খবর। পুরো ঘটনা পর্যবেক্ষণ করে হুগলির (গ্রামীণ) পুলিশ সুপার তথাগত বসু জানিয়েছেন, “যারা এই ঘটনায় সঙ্গে যুক্ত তাদের গ্রেপ্তার করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । পাশাপাশি এলাকা পুরো ফাঁকা করে দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ।”

অন্যদিকে, এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিরোধী দল বিজেপিও মুখ খুলেছে। ঘটনা প্রসঙ্গে বিজেপির আরামবাগ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিমান ঘোষ জানিয়েছেন, “এটা তৃণমূলের কালচার । যেখানে কোরোনা নিয়ে গোটা বিশ্ব অস্থির হয়ে যাচ্ছে , সেখানে ওরা বোমাবাজি করছে, মানুষকে সমস্যায় ফেলছে । গুন্ডাগিরি করছে । তৃণমূল আসার পর থেকেই এটা চলছে। এটা নতুন কিছু নয় ।” এই ঘটনায় রাজনৈতিক সমালোচনা শুরু হয়েছে শাসকদল তৃণমূলকে ঘিরে।

এখন যেখানে সারা বিশ্বের কাছে এক সংকটময় মুহূর্ত নিয়ে এসেছে করোনা সংক্রমণ, সেখানে পরিস্থিতির কথা না ভেবে একযোগে এতজনে মিলে যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চালিয়েছে, তা নিয়ে রীতিমত তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যেখানে মুখ্যমন্ত্রী নিজে বারংবার সাবধান করছেন সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য জনসমাবেশ না করতে, বাড়িতে থাকার জন্য, সেখানে কিভাবে একসাথে এত জন মিলে এক জায়গায় জড়ো হয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কথা অবমাননা করে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে লিপ্ত হল? তবে এখনো পর্যন্ত এই ঘটনায় তৃণমূল নেত্রীর কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। পরিস্থিতি বিচার করে নেত্রী কি ব্যবস্থা গ্রহণ করেন সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন সবাই।

আপনার মতামত জানান -

ট্যাগড
Top
error: Content is protected !!