এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > সব্যসাচী দত্তকে দল থেকে বহিস্কারের জন্যই কি বৈঠক? জোর জল্পনা

সব্যসাচী দত্তকে দল থেকে বহিস্কারের জন্যই কি বৈঠক? জোর জল্পনা

ঘটনাটা সূত্রপাত হয়েছিল অনেক দিন আগে। যখন হঠাৎ করেই এক রাতে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন সেকেন্ড-ইন-কমান্ড এবং বর্তমানে বঙ্গ বিজেপির চাণক্য মুকুল রায় তার বাড়িতে চলে যায়। বেরিয়ে আসার পর যখন তাকে প্রশ্ন করা হয় বিধাননগর পৌরসভার চেয়ারম্যান তথা হেভিওয়েট ওই তৃণমূল বিধায়কের বাড়িতে মুকুলবাবু কি করছিলেন! উত্তরে হাসিমুখে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিমায় মুকুলবাবু বলেন, “আমাদের পারিবারিক বন্ধুত্ব। আগে প্রায়ই ওর বাড়িতে খেতে চলে আসতাম। আজকেও সেরকম এসেছিলাম।” কি খেলেন!

এই প্রশ্নের জবাবে মুকুল রায় বলেন, “লুচি খেলাম, আলুর দম খেলাম, মিষ্টি খেলাম।” আর এরপর থেকেই শুরু হয়ে যায় বিতর্ক। বস্তুত তৃণমূল থেকে বেরিয়ে এসে মুকুল রায় বলেছিলেন, তৃণমূল দলে সকলে হাপাচ্ছে। শ্বাস প্রশ্বাসের কষ্ট হচ্ছে। সকলে ভাবছে কোন দিন বাইরে বেরিয়ে এসে একটু বুক ভরে নিঃশ্বাস নেব।”

আর সেই পাল্টে আসাটা যে দল বদল করে বিজেপিতে চলে আসা সেই বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। আর তাই এহেন মুকুল রায়ের সব্যসাচী দত্তের বাড়িতে যাওয়া স্বভাবতই প্রশ্ন তোলে তার নিজের দল তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতি সব্যসাচী বাবুর নিষ্ঠা নিয়ে। কিন্তু এরপর হুগলি নদীতে অনেক জল গড়িয়ে গেলেও সব্যসাচীবাবু কিন্তু দলবদল করেননি।

কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, সুজিত বসু প্রমুখ তাকে সঙ্গে নিয়ে মিটিং করে বলেন, সব্যসাচী দলে ছিল, দলে আছে এবং দলেই থাকবে। কিন্তু এরপরও বিতর্ক পিছু ছাড়েনি সব্যসাচী দত্তের। কখনও পছন্দের গান ভারত মাতা কি জয় বলা, আবার কখনও বা লোকনাথ পুজোয় ফের মুকুলবাবু সঙ্গে বসে খিচুড়ি খাওয়া। একের পর এক প্রশ্নের বেড়া জালে জড়িয়ে পড়তে থাকেন তিনি।

আর এরই মধ্যে সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে যেখানে 42 আসন বিশিষ্ট পশ্চিমবঙ্গের 18 টি আসন লাভ করে 23 টি আসন পাওয়া তৃণমূল কংগ্রেসের ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছে গেরুয়া শিবির, সেইখানে বরাবরের রাজনীতিতে তার বিরোধী বলে পরিচিত কাকলি ঘোষ দস্তিদারকে তার কেন্দ্র থেকে অনেকটাই ভোটে লিড দিতে দেখা যায় সব্যসাচী বাবুকে। যার ফলে রাজনৈতিক বিশ্লেষণও চলে প্রচুর। পরবর্তীতে নির্বাচন পরবর্তীকালে কাউন্সিলরদেরকে নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় নেত্রী ধমক দেন বিধাননগরের মেয়রকে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

জানা যায়, কার যত রাখঢাক না করেই সব্যসাচী দত্তকে তিনি বলেন, “তুই বিজেপিতে চলে যাচ্ছিস না কেন!” আর এরকম খবর ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথেই রাজনৈতিক মহলের আনাচে কানাচে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়। যদিও সব্যসাচী বাবু এই ব্যাপারে কোনো সত্যতা স্বীকার করেননি। কিন্তু গত শুক্রবার বকেয়ার দাবিতে বিদ্যুৎ দপ্তরের কর্মীদের সংগঠনের তীব্র হাঙ্গামা বাধে।

পুলিশের সঙ্গে আইএনটিটিইউসি কর্মী-সমর্থকদের ব্যাপক বচস শুরু হয়। যার জেরে ভেঙ্গে যায় বিদ্যুৎ ভবনের প্রবেশদ্বার। আর এদিনের সেই বিক্ষোভ কর্মসূচির নেতৃত্বে ছিলেন সব্যসাচী দত্ত। ব্যারিকেড ভেঙে বিদ্যুৎ ভবনের ভিতরে ঢুকে বিদ্যুৎমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিক্ষোভকারীরা। আর তাদেরকে রীতিমত সঙ্গ দেন বিধাননগরের মেয়র তথা তৃণমূল বিধায়ক সব্যসাচী দত্ত। বিক্ষোভের পর বিদ্যুৎ ভবনের সামনে তিনি অবস্থানে বসে পড়েন।

জানা যায়, এদিন এই প্রসঙ্গে পুলিশকে তীব্র ভৎসনা করে বিধাননগরের মেয়র বলেন, “রাজ্য সরকারের কিছু পুলিশ বন্ধু এসেছেন আমাদের আটকাতে। আমরা শুধু একটাই আহ্বান জানাই যখন আপনারা ডিউটি সেরে বাড়ি যাবেন বা থানায় যাবেন গিয়ে বলবেন পাখাটা চালান। দেখবেন পাখাটা চলছে না। আপনার কর্মচারীটি বলবেন জল দেবো স্যার, ফ্যান চলছে না। আর বাড়ি গেলে বউ যখন বলবে বিদ্যুতের বিল দিতে হবে, তখন পকেটে হাত দিয়ে দেখবেন পকেটটা ফুটো হয়ে গেছে। আর নইলে কাটমানি নিতে হবে।”

স্বভাবতই সব্যসাচীর এহেন বিবৃতিতে এবং আচরনে অস্বস্তি বাড়ছে রাজ্যের শাসকদলের অন্দরে। বর্তমানে তার অবস্থান নিয়ে রীতিমত সরগরম রাজ্য রাজনীতি। সূত্রের খবর, রবিবার তৃণমূল ভবনে বিধাননগর পৌরসভা সমস্ত প্রতিনিধিদেরকে নিয়ে একটি সভা ডেকেছেন কলকাতা পৌরসভার মেয়র তথা রাজ্যের পুর এবং নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।

কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে সেই বিধাননগর পৌরসভার মেয়র হওয়া সত্ত্বেও এই সভায় সব্যসাচীবাবুকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলে খবর। যা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। ওয়াকিবহালদের একাংশের মতে, এদিনের এই সভা থেকে সব্যসাচীবাবুর বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা এমনকি তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হতে পারে।

অনেকে বলছেন, সব্যসাচী দত্তের মেয়রের পদ যাওয়া এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। তাই তৃনমূলের সব্যসাচী দত্ত যে রীতিমতো তৃণমূল কংগ্রেস এবং নেতৃত্বদেরকে বেগ দিচ্ছেন তা বলাইবাহুল্য। সব মিলিয়ে রবিবারের সভায় সব্যসাচী দত্তকে নিয়ে তৃনমূলের তরফে কোনো বড়োসড়ো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় কিনা, এখন সেই দিকেই তাকিয়ে সকলে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!