এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > ‘দাদা’ মুকুল রায়ের ‘পরামর্শে’ মারাত্মক আইনি প্যাঁচ সব্যসাচী দত্তের, অস্বস্তি বাড়ল তৃণমূলের

‘দাদা’ মুকুল রায়ের ‘পরামর্শে’ মারাত্মক আইনি প্যাঁচ সব্যসাচী দত্তের, অস্বস্তি বাড়ল তৃণমূলের


দীর্ঘদিন ধরেই তাকে নিয়ে জল্পনা চলছে। সম্প্রতি বিধাননগর পৌরসভার মেয়র তথা তৃণমূল বিধায়ক সব্যসাচী দত্তকে মেয়র পদ থেকে অপসারণের জন্য সেই বিধাননগর পৌরসভার কাউন্সিলররা তার বিরুদ্ধে একটি অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেন। জানা গেছে, আগামী 18 জুলাই এই সব্যসাচী দত্তের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনতে বিধাননগর পৌরসভার কমিশনার একটি বৈঠক ডেকেছেন। এমনকি এই ব্যাপারে একটি নোটিশ দিয়েও সকলকে তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

আর এবার সেই নোটিশকে চ্যালেঞ্জ করেই ফের দলের বিরুদ্ধে হেঁটে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করলেন বিধাননগর পৌরসভার মেয়র সব্যসাচী দত্ত। সূত্রের খবর, শুক্রবার বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়ের এজলাসে সব্যসাচীবাবু এই মামলা দায়ের করেন। যেখানে তিনি তার 89 পাতার একটি আবেদনে জানান যে, পুরসভার কমিশনার বিশেষ বৈঠক ডেকে নোটিশ দিয়েছেন। কিন্তু তার কোনো আইনি বৈধতা নেই। 27 জুন থেকে ছুটিতে থেকেও তিনি কিভাবে সেই নোটিশে সই করলেন! তা নিয়েও প্রশ্ন তুলতে দেখা গেছে বিধাননগর পৌরসভার মেয়রকে।

পাশাপাশি বেশ কিছু কাউন্সিলরের বিরুদ্ধেও এদিন অভিযোগ তুলতে দেখা গেছে সেই সব্যসাচী দত্তকে। যেখানে তিনি বলেন, 2015 সালে বিধাননগর মিউনিসিপালিটি, রাজারহাট গোপালপুর মিউনিসিপালিটি এবং মহিষবাথান 2 নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা মিলে বর্তমান বিধাননগর মিউনিসিপাল কর্পোরেশন তৈরি হলেও দেখা যায়, পুরনো রাজারহাট গোপালপুর এলাকায় বহু অবৈধ নির্মাণ হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই সেখানে পুর আইন মানা হয়নি। আর এই ধরনের বেআইনি কাজে মদত দেওয়া কাউন্সিলররাই আমাকে সরাতে চান।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

তবে মেয়র হিসেবে তাঁর বিরুদ্ধে আনা অনাস্থার নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে 24 ঘন্টার মধ্যেই সেই নোটিশকে সব্যসাচী দত্ত চ্যালেঞ্জ করায় এর পেছনে অন্য রাজনৈতিক অভিসন্ধি খুঁজে পাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। একাংশের মতে, সব্যসাচী দত্তর বিরুদ্ধে যেদিন এই নোটিশ আনা হয়েছিল, সেদিন দুপুরেই সেই সব্যসাচী দত্তের সল্টলেকের বাড়িতে উপস্থিত হতে দেখা গিয়েছিল বিজেপি নেতা মুকুল রায়কে। যেখানে প্রায় মিনিট 35 ধরে সব্যসাচী দত্ত এবং মুকুল রায়ের মধ্যে বৈঠক হয়।

আর এরপরই বাইরে বেরিয়ে এসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিজেপি নেতা মুকুল রায় বলেন, “সব্যসাচী আমার ভাইয়ের মত। ওর বিরুদ্ধে অনাস্থা নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তাই স্ট্র্যাটেজি আলোচনা করতে এসেছিলাম।” পাল্টা সব্যসাচী দত্তও বলেন, “মুকুলদা আইনটা ভালো বোঝেন। তাই ওনার সঙ্গে আলোচনা করলাম। ওনাকে নোটিশও দেখিয়েছি।” আর এই ঘটনার পরই সেই নোটিশকে চ্যালেঞ্জ করে সব্যসাচী দত্তের আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার ঘটনায় বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের হাত রয়েছে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞদের একাংশ।

এদিকে বিধাননগর পৌরসভার মেয়র তথা তৃণমূল বিধায়ক সব্যসাচী দত্তের এহেন আচরণ নিয়ে পাল্টা তাঁর বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে তৃণমূল। এদিন এই প্রসঙ্গে তৃণমূল মহাসচিব তথা শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “সব্যসাচী যা করছেন, তা ঠিক করছেন না। আমরা দলের তরফে নজর রাখছি। উনি কেন মামলা করতে গেলেন, আমরা জানি না। দলের ভাবমূর্তি যদি কেউ নষ্ট করার চেষ্টা করেন, তাহলে দলের নিয়মেই তাকে শাস্তি পেতে হবে।” রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, বারে বারেই সব্যসাচী দত্ত দলের বিরুদ্ধে পা বাড়াচ্ছেন।

আর এবার তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবের নোটিশ জমা পড়ায় পাল্টা দলের বিপক্ষে হেঁটে তৃণমূলকে প্রবল অস্বস্তিতে ফেলে দিলেন বিধাননগর পৌরসভা মেয়র। তবে এর পরিপ্রেক্ষিতে এখন তৃণমূল ঠিক কি পদক্ষেপ নেয়, সেদিকেই তাকিয়ে সকলে। যদিও, রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, সব্যসাচী দত্তের বিজেপি যোগ এখন সময়ের অপেক্ষা – সেখানে তিনি সরাসরি গেলে তাঁর বর্তমান দল তাঁর বিধায়ক পদ কেড়ে নিতে পারে। তাই মুকুল রায় এমনভাবে ঘুঁটি সাজাচ্ছেন যাতে সব্যসাচী দত্তকে বহিস্কার করতে বাধ্য হয় তৃণমূল। আর তিনিও আইন বাঁচিয়ে বিধায়ক পদ রেখেই বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!