শহিদ দিবসের পঁচিশ বছর,অন্যদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বাঁচিয়ে চাকরি থেকে বরখাস্ত-এর ২১ বছর সিরাজুলের কলকাতা রাজ্য July 20, 2018 চলতি বছর ২১ শে জুলাই শহীদ দিবসের ২৫ বছর পূর্ণ হবে। শুনলে অবাক লাগবে যে দিনকে স্মরণ করে আজকের এই বর্ষপূর্তি পালন অনুষ্ঠান সেই ১৯৯৩ সালের ২১ শে জুলাই তারিখে তৎকালীন যুব কংগ্রেস সভানেত্রী তথা বর্তমানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়ে এনেছিলেন পুলিশ কনস্টেবল সিরাজুল হক মণ্ডল। সেইদিন এই সিরাজুল হক মণ্ডল লালবাজারের এক বড়কর্তার দিকে বন্দুক নিশানা করেছিলেন। সেদিনের ঐ ঘটনার পর থেকে সিরাজুল মিঞা ২১ বছর চাকরি থেকে বরখাস্ত। এখনও তিনি কর্মহীন। তাঁর সাথে ঐ সময়ে লালবাজারের বড়কর্তার নির্দেশ অমান্য করেছিলেন এসআই নির্মল বিশ্বাস। জানা যাচ্ছে দীর্ঘ ১৮ বছর আইনি লড়াইয়ের পর তিনি তাঁর চাকরীতে পুনঃবহাল হন। একই কারণে অন্য আরেক পুলিশ কর্মী প্রদীপ সরকারকে কোনো পদোন্নতি ছাড়াই সম্পূর্ণ কর্মজীবন অতিবাহিৎ করতে হয়েছে। প্রসঙ্গতঃ একুশে জুলাই কমিশন সূত্রের খবর অনুসারে, বিচারপতি সুশান্ত চট্টোপাধ্যায়ের কমিশনে সাক্ষ্য দেওয়ার সময় এই পুলিশ কর্মীরা বলেন, সেইদিনে আসলে কী ঘটেছিলো। জানা যাচ্ছে ৯৩ সালের ২১ শে জুলাই ঘটনার দিন দুপুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ব্রেবোর্ন রোডে যান। যুব কংগ্রেস নেত্রীর যাওয়ার পরেই সেখানে বাহিনী নিয়ে হাজির হন লালবাজারের এক বড়কর্তা। এই পুলিশ কর্তা নেত্রীর উদ্দেশ্যে অশালীন মন্তব্য করতে শুরু করেন। এই সময়ে যুব নেত্রী মেজাজ হারালে ঐ পুলিশ কর্তা তাঁকে আক্রমণের নির্দেশ দেন। পুলিশকর্তার নির্দেশে লাঠি চার্জ শুরু হয়। লাঠির আঘাতে দলনেত্রীর মাথা ফেটে যায়। এই লাঠিচার্জের নির্দেশের প্রতিবাদ করেন স্পেশাল ব্রাঞ্চের এসআই নির্মল বিশ্বাস এবং সার্জেন্ট প্রদীপ সরকার। পুলিশকর্তাকে তাঁরা একইসাথে বলেছিলেন , ‘একজন নেত্রীকে কেন এভাবে লাঠিপেটা করছেন? এটা ঘোরতর অন্যায় হচ্ছে।’ এইসময়ে বড়কর্তার মারাত্মক একটি মন্তব্যে মেজাজ হারিয়ে সিরাজুল হক মণ্ডল বড়াকর্তার দিকে বন্দুক (মাস্কেট) তাক করে বলেছিলেন, ‘এই অত্যাচার বন্ধ করুন।’ এরপরে বেশ কয়েক বছর অতিক্রান্ত হয় ৯৭ সালে দেরী করে ডিউটি তে যোগদানের অপরাধে তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।অর্থনৈতিক দৈন্যতার কারণে হাইকোর্টের পর আর মামলা লড়তে পারেননি তিনি। দীর্ঘ ২৫ বছর পরে এদিন সেই সিরাজুল হক মণ্ডল নিজের কথা জানিয়ে বললেন, ”আমার এখনও আট বছর চাকরি ছিল। মুখ্যমন্ত্রী, খাদ্যমন্ত্রী, পুরমন্ত্রীকে আবেদন করেছি। চাকরিটা ফিরে পেলে অভাবটা দূর হত।” প্রদীপ সরকার নিজের সংসারের কথা জানিয়ে বললেন, “২০১৫ সালে অবসর নিয়েছি, মুখ্যমন্ত্রী ছেলেটাকে একটু সাহায্য করলে ভাল হয়।” নির্মল বিশ্বাস রাজ্যের বর্তমান সরকারের প্রতি আনুগত্য দেখিয়ে বললেন, ”এই সরকার চাকরি ফিরিয়ে দিয়েছে। প্রাপ্য পাওনা পেলে মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞ থাকব।” আপনার মতামত জানান -