সন্দেশখালি কান্ডে নতুন তথ্য - মোদির সভাতে যাওয়ায় স্কুল পড়ুয়াদেরও হুমকি তৃনমূলের? জাতীয় নদীয়া-২৪ পরগনা রাজ্য June 11, 2019 শাসকের যখন শেষের সময় আসে, তখন যে তারা কতটা ভয়ঙ্কর ও স্বৈরাচারী হয়ে উঠতে পারে তা সন্দেশখালির ঘটনা থেকেই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর থেকেই রাজ্যে তৃণমূলের ভরাডুবি এবং বিজেপির উত্থানে আতঙ্কিত শাসক দল তৃণমূলের সমর্থকরা বিভিন্ন জায়গায় বিরোধীদের ওপর আক্রমণ চালাতে থাকে বলে অভিযোগ ওঠে। আর যার পরিনামে গত শনিবার বিকেলে তৃণমূল এবং বিজেপির সংঘর্ষে সন্দেশখালির ভাঙিপাড়া গ্রামে দুজন বিজেপি এবং একজন তৃণমূল কর্মীর মৃত্যু হয়। যে ঘটনায় এখন উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি। কিন্তু এই সন্দেশখালির নৃশংস ঘটনা ঘটার পরই শাসকের প্রতিহিংসার রূপ ফুটে উঠতে শুরু করেছে। জানা গেছে, গত লোকসভা নির্বাচনের আগে টাকিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আসার সময় এই ভাঙিপাড়া গ্রামের প্রায় 30 জন স্কুল পড়ুয়া প্রধানমন্ত্রীকে দেখতে গিয়েছিলেন। অভিযোগ, এরপরই সেই 30 জন পড়ুয়ার অভিভাবককে শাসক দলের কর্মী-সমর্থকরা নিজেদের পার্টি অফিসে ডেকে পাঠায়। কেন তারা প্রধানমন্ত্রীর সভায় গেল, তা নিয়ে জানতে চাওয়া হয়। কিন্তু সেই অভিভাবকেরা শাসকদলের এই চোখ রাঙানিকে উপেক্ষা করে তাদের পার্টি অফিসে যায়নি। আর ভোটের পর সন্দেশখালি গ্রামে নৃশংস খুনের পেছনে সেই পড়ুয়াদের প্রধানমন্ত্রী সভায় যাওয়াটাই কি মূল কারণ হয়ে দাঁড়াল, এখন এই প্রশ্নই ঘোরাফেরা করছে সর্বত্র। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - এদিন এই প্রসঙ্গে নিহত বিজেপি কর্মী প্রদীপ মণ্ডলের পাড়ার কয়েকজন গ্রামবাসী বলেন, “আমাদের ছেলেরা স্কুলে পড়ে। তারা নিজেদের বন্ধুদের সঙ্গে গত 15 তারিখে প্রধানমন্ত্রীকে দেখতে গিয়েছিল। তারা তো দেশের প্রধানমন্ত্রীকে দেখতে যেতেই পারে। কিন্তু কি করে বুঝব এটা নিয়েও শাসকদলের লোকজন বাড়িতে এসে আমাদের হুমকি দিয়ে যাবে! ওরা বলেছিল ভোট পার হলে বুঝে নেব। আমাদের গ্রামের ওপর এখন তৃণমূলের নেতাদের খুব রাগ।” এদিকে নির্বাচনের দিন এই ভাঙিপাড়া গ্রামের 100 টি বাড়ির বাসিন্দারা যাতে ভোট দিতে না পারে, তার জন্য সকলকে হুমকি দিয়ে গিয়েছিল তৃণমূল বলেও অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। অনেকে বলছেন, অদৃষ্টের কি নিষ্ঠুর পরিহাস! একসময় রাজ্যের গণতন্ত্রকে রক্ষার কথা বলে যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শাসন ক্ষমতায় এসেছিলেন, তার আমলেই এখন প্রধানমন্ত্রীর সভা দেখতে যাওয়ায় চরম মাশুল দিতে হল সন্দেশখালির মানুষদের। তাহলে কি গণতান্ত্রিক রাজ্যে এখন গণতন্ত্রই উবে গেল! যেখানে প্রতিটা ব্যক্তির নিজ নিজ স্বাধীনতা রয়েছে, সেখানে স্কুলে পড়া বাচ্চারা যদি তাদের প্রধানমন্ত্রীকে দেখতে যায়, তাহলে তার জন্য তৃণমূলের হুমকির মুখে কেন পড়তে হবে! তবে সন্দেশখালির গ্রামবাসীরা তৃণমূলের বিরুদ্ধে এই বিস্ফোরক অভিযোগ করলেও তা সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করেছেন উত্তর 24 পরগনা জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। এদিন তিনি বলেন, “বিজেপি কাজই হচ্ছে এলাকাকে অশান্ত করা। তাই এখন চাপা সন্ত্রাস আর অভিভাবকদের পার্টি অফিসে ডাকার মত আষাঢ়ে গল্প তৈরি করছে। ওরা যাই করুক, সাধারণ মানুষ এর জবাব দেবে।” বিশেষজ্ঞদের মতে, গণতন্ত্রে সাধারণ মানুষই যে শেষ কথা বলে তা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে তৃণমূল। আর তাইতো এবারে বাংলায় তাদের ভরাডুবি আর বিজেপির উত্থান ঘটেছে। তবে ফলাফল প্রকাশের পর যেভাবে সেই গণতান্ত্রিক রায়কে মেনে নিতে না পেরে শাসক দলের নেতারা বিভিন্ন এলাকাকে উত্তপ্ত করে চলেছে এবং তাদের ফতোয়া জারি করছে, তাতে বাংলার মেকি গণতন্ত্র নিয়ে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। আপনার মতামত জানান -