এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > “শঙ্খদাকে শুধু কবি বললে ব্যাপারটা একপেশে হয়ে যায়। তিনি আসলে সাহিত্যের অভিভাবক।” – জানালেন শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়

“শঙ্খদাকে শুধু কবি বললে ব্যাপারটা একপেশে হয়ে যায়। তিনি আসলে সাহিত্যের অভিভাবক।” – জানালেন শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – দীর্ঘ ৮৯ বছরের বর্ণময় জীবনের যবনিকাপাত, লোকান্তরে গেলেন রবীন্দ্র-পরবর্তী স্বনামধন্য কবি শঙ্খ ঘোষ। তাঁর মৃত্যুতে সংস্কৃতি জগতে অন্ধকার নেমে এসেছে। কবিকে শ্রদ্ধা জানালেন ও তাঁর স্মৃতিচারণ করলেন সাহিত্য সাধক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। তিনি জানান, দীর্ঘদিনের সম্পর্ক ছিল তাঁর কবি শঙ্খ ঘোষের সঙ্গে। তাঁকে শুধু কবি বললে ব্যাপারটা একপেশে হয়ে যায়। আসলে তিনি ছিলেন সাহিত্যের অভিভাবক। সাহিত্যের সত্যিকারের অভিভাবক সকলে হতে পারে না।

আজ কবি শঙ্খ ঘোষের মৃত্যুতে তাঁর স্মৃতিচারণ করলেন সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় জানালেন, কিছুদিন আগে তিনি ফোন করেছিলেন কবি শঙ্খ ঘোষকে। ফোন ধরতে পারতেন না কবি। কবির মেয়ে জানালেন যে, তাঁর বাবার সঙ্গে তিনি কথা বলিয়ে দেবেন। কিন্তু তাঁর কথা তিনি বুঝতে পারবেন না। এরপর কবিকে ফোন দেয়া হয়েছিল। শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, তিনি কেমন আছেন? কবি শুধু এটুকুই বললেন যে,’ভালো’।

কিন্তু সেটা স্পষ্ট ভাবে বোঝা যায়নি। শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় জানালেন, তিনি শুনেছেন কবির শরীর বিকল হয়ে পড়েছে। তাঁর বাকশক্তি আর আগের মত নেই। শুধু দুটি জিনিস তাঁর সাথে ছিল। যা হলো স্মৃতিশক্তি ও মনোবল। যা ১০০% অটুট ছিল তাঁর। তিনি জানালেন, শঙ্খ ঘোষের মৃত্যুতে তিনি অত্যন্ত ভারাক্রান্ত বোধ করছেন। এই কৃষ্ণ গহ্বর সহ্য করতে পারছেন না তিনি। বহুদিন ধরে দেখেছেন তিনি কবিকে।

একেবারে যুবক বয়স থেকে কবিকে তিনি চেনেন। কবি শঙ্খ ঘোষ ছিলেন শান্ত ও স্থিতধী। কখনো তিনি মেজাজ গরম করতেন না। হাসির কথা শুনলে তিনি খিলখিল করে হেসে উঠতেন, কিন্তু নিজে কথা কম বলতেন। এত পুরস্কার তিনি পেয়েছেন, কিন্তু অহংকার তাঁকে স্পর্শ করতে পারেনি। শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় জানালেন, শঙ্খ ঘোষকে শুধু কবি বললে, ব্যাপারটা একপেশে হয়ে যাবে। আসলে তিনি ছিলেন সাহিত্যের অভিভাবক। সত্যিকারের অভিভাবক সকলে হতে পারে না।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

একবার তিনি দেখেছিলেন যে, এক কনিষ্ঠ কবির কবিতা সংশোধন করে দিচ্ছেন শঙ্খ ঘোষ। এত বড় মাপের কবি এমন কখনোই করেন না। আসলে এটা ছিল তাঁর দায়িত্ববোধ ও স্নেহ। তিনি জানালেন, এতটা বিখ্যাত কবি হলেও বাড়ি গেলে সবার সঙ্গেই দেখা করতেন শঙ্খ ঘোষ। ছুটির দিনে তাঁর বাড়িতে তরুণ কবি ও সাহিত্যিকরা ভিড় করতেন। সময় করে সকলের সঙ্গে কথা বলতেন শঙ্খ ঘোষ।

এতটা স্নেহশীল, প্রশ্রয়দাতা খুব একটা দেখা যায় না। তিনি খুব হৃদয়বান মানুষ ছিলেন। যখনই তাঁর সঙ্গে দেখা হয়েছে, তখনই মন ভালো হয়ে গেছে তাঁর। এই বয়সে কবির করোনা হয়েছে শুনে, তিনি আশঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন। তাঁর শরীর খুব একটা ভালো ছিল না, ফুসফুসের রোগ ছিল। তাই তিনি দুশ্চিন্তায় ছিলেন। এরপর আজ এই খবর পেয়ে তিনি স্তব্ধ হয়ে গেছেন। মনে হচ্ছে তাঁর মাথার উপর থেকে গাছের ছায়া সরে গেছে। কবির না থাকার মধ্যে যে কি বিরাট পার্থক্য, তা বোধ করতে শুরু করেছেন তিনি।

অন্যদিকে, কবি শঙ্খ ঘোষের মৃত্যুতে টুইট করে শোক প্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। টুইট করে তিনি জানিয়েছেন, বর্ষিয়ান কবি ও সাহিত্য একাডেমী, পদ্মভূষণ বিজয়ী কবি শঙ্খ ঘোষের মৃত্যুতে তিনি গভীরভাবে দুঃখিত। তাঁর মৃত্যুতে বাংলা সাহিত্যের অপূরণীয় ক্ষতি হলো। কবির আত্মার শান্তি কামনা করলেন তিনি। অন্যদিকে, তাঁর মৃত্যুতে টুইট করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানালেন যে, বাংলার বিখ্যাত কবি ও সাহিত্য একাডেমী বিজয়ী শঙ্খ ঘোষের মৃত্যুতে তিনি শোকাহত। সমাজের সমকালীন পরিস্থিতিতে তাঁর কবিতার জন্য সকলে তাঁকে স্মরণে রাখবে। তাঁর গভীর সান্তনা কবির পরিবার ও তাঁর অনুগামীদের প্রতি। ওঁ শান্তি।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!