এবার কি সরস্বতী পুজোতেও অনুদান? মন্ত্রীর কথায় জল্পনা কলকাতা রাজ্য January 16, 2020 মন্ত্রী সাধন পান্ডের পক্ষ থেকে সরস্বতী পূজা উপলক্ষে পুজো কমিটিগুলোকে পাঁচ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়ার ঘোষণা করা হল। অনেক আগেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে দুর্গাপূজার সময় ক্লাবগুলোকে আর্থিক অনুদান দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছিল পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার। কিন্তু সরস্বতী পুজো করার জন্য আর্থিক অনুদান দেওয়ার এই প্রয়াসকে ক্রেতা সুরক্ষা মন্ত্রীর নতুন উদ্যোগ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। গত বুধবার বহরমপুরের ব্যারাক স্কোয়ার মাঠে অনুষ্ঠিত হওয়া জেলা মেলাতে উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ক্রেতা সুরক্ষা দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী সাধন পান্ডে। এদিন এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসেই অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে তিনি জেলার জনপ্রতিনিধিদের কাছে জানতে চান, এলাকায় কত সরস্বতী পুজো হয়! সেই সময় একজন জনপ্রতিনিধি উঠে দাঁড়িয়ে বলে, 350 টি।” কার্যত এরপরেই মন্ত্রী সাধন পান্ডে মঞ্চে উপস্থিত একজন আধিকারিককে রীতিমতো নির্দেশ দিয়ে বলেন, “বহরমপুরে এত পুজো হয়! ঠিক আছে। 5000 টাকা করে দিয়ে দেবেন।” এক্ষেত্রে অবশ্য এই প্রকল্প সারা রাজ্যের জন্যই করা হবে কিনা, সেই ব্যাপারে কোনো উত্তর দিতে দেখা যায়নি কেতা সুরক্ষা দপ্তরের মন্ত্রীকে। তবে যাই হোক না কেন, বাংলার বিভিন্ন পৌরসভার পাশাপাশি খুব তাড়াতাড়ি মুর্শিদাবাদ জেলাতেও বিভিন্ন পৌরসভার নির্বাচন দোরগোড়ায় এসে পৌঁছে গেছে। আর এরকম মরশুমে মন্ত্রী মশাইয়ের এই ঘোষণা রীতিমতো নির্বাচনী চমক বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - তবে বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, ভারতীয় জনতা পার্টির পক্ষ থেকে তৃণমূল কংগ্রেসকে যেভাবে সংখ্যালঘু সরকারি দল হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়েছিল, তার যথেষ্ট প্রভাব পড়েছিল লোকসভা নির্বাচনে। আর সেই কারণেই লক্ষ্য করা গেছে, মুর্শিদাবাদ জেলাতে প্রথম স্থানে তৃণমূল কংগ্রেস থাকলেও, দ্বিতীয় স্থান কিন্তু দখল করতে সক্ষম হয়ে গিয়েছিল ভারতীয় জনতা পার্টি। এছাড়াও বিভিন্ন রকম পৌরসভা এলাকাগুলোতেও ভারতীয় জনতা পার্টি নির্বাচনে ভোটের নিরিখে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছিল। আর সেই কারণেই সরস্বতী পূজার মরশুমে পুজো কমিটিগুলোর হাতে টাকা তুলে দেওয়ার ঘোষণা আসলে দলের ভাবমূর্তিকে সঠিক রাখার একটি পন্থা মাত্র বলে মনে করছে একাংশ। তবে এই ব্যাপারে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে কিন্তু কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে ছাড়েননি বিরোধী দলগুলো। এই বিষয়ে কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলেন, “জনগনের ট্যাক্সের টাকায় রাজ্য সরকার মেলা এবং খেলা এসব করে মন জয় করতে চাইছে। ওই টাকায় গরিব মানুষের শীতবস্ত্র দিলে ভালো করত।” পাশাপাশি তিনি এও বলেন, “এইসব করে কোনো লাভ হবে না। আগামী দিনে ওরা আরো পিছিয়ে পড়বে।” কিন্তু বিরোধিরা যাই বলুক না কেন, এই ঘোষণার মাধ্যমে মন্ত্রী মশাই যে রীতিমতো আলোড়ন সৃষ্টি করে দিয়েছেন, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বহরমপুরের সবলা মেলা উদ্বোধন করার পরে এদিন কান্দিতেও সবলা মেলার উদ্বোধন করেন রাজ্যের ক্রেতা সুরক্ষা দপ্তরের মন্ত্রী সাধন পান্ডে। এদিন এই অনুষ্ঠানে মন্ত্রীর পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোশারফ হোসেন মন্ডল, রাজ্যের শ্রম প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন, বহরমপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুকুমার অধিকারী ইত্যাদি ব্যাক্তিরা। বিভিন্ন ইস্যুতে সরকারি আধিকারিকদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে দেখা যায় এদিন মন্ত্রী মহাশয়কে। রাজ্য সরকারের চালু করা বিভিন্ন প্রকল্পের সুযোগ সুবিধা সাধারণের কাছে পৌঁছেছে কিনা, সেই বিষয়ে খোঁজখবর নেন মন্ত্রী মহাশয়। খোঁজখবর পর্বে কিছু আধিকারিক রীতিমতো ধমকের মুখে পড়ে। যাতে করে স্বাভাবিকভাবে অস্বস্তিতে পড়ে যায় সরকারি আধিকারিকরা। দিন মন্ত্রী মশাই নির্দেশ দিয়েছেন, জেলায় এক লক্ষ স্বনির্ভর দল গঠন করতে হবে। পাশাপাশি স্বনির্ভর দল গঠনের মাধ্যমে জেলায় অর্থনৈতিক বিপ্লব ঘটতে পারে বলেও জানান মন্ত্রী। ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের তরফ থেকে জাগো প্রকল্পের মাধ্যমে স্বনির্ভর দলগুলিকে সর্বমোট 500 কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়ে দেন মন্ত্রী। তবে অন্যান্য প্রশ্নগুলির পাশাপাশি সর্ব গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসেবে সরস্বতী পূজা আর্থিক অনুদানের ঘোষণাকেই মনে করছে বিশেষজ্ঞরা। যা নিয়ে রীতিমতো আলোড়ন সৃষ্টি হয়ে গেছে রাজনৈতিক পৃষ্ঠভূমিতে। সবলা মেলার পরিপ্রেক্ষিতে একজন আধিকারিক জানিয়েছেন, গত বছর এই মেলায় 13 লক্ষ টাকার বিক্রি হয়েছিল। আর এইবারে সেই লক্ষ্যমাত্রাকে ছাড়িয়ে বিক্রির পরিমাণ আরো বেড়ে যাবে বলে মন্তব্য করেন ওই আধিকারিক। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, যেভাবে একের পর এক প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের স্বনির্ভর দলগুলোর পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে রাজ্য সরকার, তাতে করে গ্রামেগঞ্জে স্বনিযুক্তি প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত মহিলাদের মন জয় করতে সক্ষম হয়েছে রাজ্যের শাসক দল বলে মনে করছে একাংশ। তবে স্বনিযুক্তি বিভাগের মেলায় এসে ক্রেতা সুরক্ষা দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী যেভাবে প্রকল্পের খুঁটিনাটি খুঁটিয়ে দেখলেন এবং নতুনত্ব ঘোষণা করলেন, তাতে করে আগামী দিনে এই কর্মসূচির ফল কি দাঁড়ায়! সেদিকেই লক্ষ্য থাকবে সকলের। আপনার মতামত জানান -