এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > সরকার, প্রশাসনের নাকের ডগায় কিভাবে চলেছে ভ্যাকসিনের ভুয়ো কারবার? প্রশ্ন তুলেছে একাধিক মহল

সরকার, প্রশাসনের নাকের ডগায় কিভাবে চলেছে ভ্যাকসিনের ভুয়ো কারবার? প্রশ্ন তুলেছে একাধিক মহল


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – রাজ্য রাজনীতিতে সম্প্রতি শোরগোল ফেলে দিয়েছে ভুয়ো ভ্যাকসিনের কারবার। সরকার, প্রশাসনের নাকের ডগায় বসে, তাদের চোখে ধুলো দিয়ে কিভাবে এই কারবার চলেছে? তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন পক্ষ থেকে। ভ্যাকসিন কাণ্ডে অভিযুক্ত দেবাঞ্জন দেব পুলিশের জেরার মুখে স্বীকার করেছেন যে,অ্যামিক্যাসিন ইঞ্জেকশন পুরসভার নাম করে বাগরি মার্কেট থেকে কেনা হয়েছিল। তার কসবার অফিসে বসে কোভিশিল্ডের নকল মোড়ক বানানো হতো। তারপর তা সেটে দেবার কাজ করতেন তার চার জন কর্মী। এক ঋণদাতা সংস্থার কাছ থেকে পুরসভার নাম করে টাকা নিয়েছিলেন দেবাঞ্জন দেব। নাকতলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে সেই সংস্থা। অভিযোগ উঠেছে, ২৫ লক্ষ টাকার মাস্ক, স্যানিটাইজার বেআইনিভাবে মজুত করেছিলেন অভিযুক্ত দেবাঞ্জন দেব।

ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ডে একে অপরের ঘাড়ে অভিযোগ চাপিয়ে দিতে চাইছে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর, পুলিশ, কলকাতা পুরসভা। কলকাতা পুরসভার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, কসবার এই শিবির থেকে কোভ্যাকসিন, কোভিশিল্ড দেয়া হয়নি। বিসিজি বা হামের টিকা দেয়া হয়েছে। পুরসভার অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রণিতা সেনগুপ্ত জানিয়েছেন যে, কসবার ক্যাম্পে পাওয়া ভায়াল দেখে মনে করা হচ্ছে, এগুলি করোনা টিকার ভায়াল থেকে ছোট। এতে নির্মাতার নাম, ব্যাচ নম্বর,ম্যানুফ্যাকচারিং, এক্সপায়ারি ডেট দেওয়া নেই। মনে করা হচ্ছে, পাউডারের সঙ্গে জল মিশিয়ে করোনার নামে বিসিজি, হামের টিকা দেয়া হয়েছিল।

যদিও ফরেনসিক রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত চূড়ান্ত করে কোন কিছুই বলা সম্ভব নয়। পুরসভার পুর প্রশাসক মন্ডলীর সদস্য অতীন ঘোষ জানিয়েছেন যে, কোন সংস্থা আবেদন করলেই তাকে টিকাকরণ শিবির করার অনুমতি দেয়া হচ্ছে। এতে জালিয়াতরা সুযোগ নিচ্ছে। পুরসভা ধীরে ধীরে নিজের কেন্দ্র থেকেই টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করবে। তবে তিনি অভিযোগ করেছেন যে, স্থানীয়দের সমর্থন ছাড়া এই ধরনের কাজ কখনোই হওয়া সম্ভব নয়। স্থানীয় কো-অর্ডিনেটরদের আরো বেশি সতর্ক হওয়ার প্রয়োজন ছিল।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

আবার দেবাঞ্জন দেব ইতিপূর্বে আমহার্স্ট স্ট্রিটের সিটি কলেজ সহ বিভিন্ন এলাকায় টিকাকরণ ক্যাম্প চালিয়েছিল। পুলিশ, প্রশাসন, পুরসভাকে অজ্ঞাত রেখে কিভাবে প্রতারণা চক্র চলেছে? তা নিয়ে সরব হয়েছেন অনেকে। আরও কেউ এই প্রতারণা কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত আছেন কিনা? তা নিয়ে চলছে তদন্ত। পুরসভার নথি ব্যবহার করেছেন দেবাঞ্জন দেব, কিন্তু পুরসভা কোন কিছুই জানে না, তা কিভাবে সম্ভব? উঠেছে নানা প্রশ্ন। এ প্রসঙ্গে জনৈক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন যে, কোথাও কোন রক্তদান শিবির বা টিকাদান শিবির করতে হলে পুলিশের অনুমতির দরকার হয় না। এগুলো দেখে পুরসভা।

অন্যদিকে, স্বাস্থ্য দফতরের অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী জানিয়েছেন যে, এই ঘটনায় স্বাস্থ্য দপ্তরের কোন ভূমিকা নেই। পুরসভাই এর জবাব দেবে। তবে অতীন ঘোষ জানিয়েছেন যে, সমস্ত দায় পুরসভার উপর চাপিয়ে দেওয়া উচিত নয়। নাগরিকদেরও আরও সচেতন হওয়া দরকার। এই ধরনের শিবিরের অনুমতি দিতে পারেনা পুরসভা। তবে, মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের ছবি, পুরসভার স্টাম্প, নথি ব্যবহার করে কিভাবে দিনের পর দিন ধরে এই কারবার চলেছে? তা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। এদিকে দেবাঞ্জন দেব যথেষ্ট প্রভাবশালী বলে পরিচিত ছিলেন। সশস্ত্র রক্ষী নিয়ে চলাফেরা করতেন, ভারত সরকারের স্টিকার দেওয়া গাড়ি ব্যবহার করতেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে বিজেপির পক্ষ থেকে প্রশ্ন করা হয়েছে যে, সরকারের মদত ছাড়া কিভাবে এতদিন ধরে এটা চলেছে? আবার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মূর্তির ফলকে দেবাঞ্জন দেবের নামের সঙ্গে রাজ্যের একাধিক নেতা, মন্ত্রীর নাম রয়েছে। যা নিয়ে সড়ব হয়েছে বিজেপি শিবির। রাজ্য সরকার, প্রশাসনকে অজ্ঞাত রেখে কিভাবে দিনের পর দিন ধরে এই কারবার চলছে? তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধী শিবির। সম্প্রতি বিজেপির পক্ষ থেকে সোশ্যাল মিডিয়াতে একটি ছবি সহ টুইট করা হয়েছে। যে টুইটে লেখা রয়েছে যে, এই ছবিতে থাকা এই ব্যক্তি হলেন দেবাঞ্জন দেব, ভুয়ো আইএস অফিসার, জাল ভ্যাকসিন কাণ্ডে গ্রেফতার এই ব্যক্তি। শাসক দল ও প্রশাসনের মদত না থাকলে এই জালিয়াতি করা কি সম্ভব? চাল, ত্রিপল জালিয়াতির পর এবার কি ভ্যাকসিন নিয়েও জালিয়াতি? মানুষের বিশ্বাসের এই মর্যাদা দিচ্ছে তৃণমূল?

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!