এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > নদীয়া-২৪ পরগনা > বসিরহাটের কঠিন লড়াইয়ে গিয়েই রিগিং রুখে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসুর

বসিরহাটের কঠিন লড়াইয়ে গিয়েই রিগিং রুখে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসুর


রাজ্য বিজেপির অন্যতম লড়াকু ও জনপ্রিয় মুখ সায়ন্তন বসু এবার পদ্ম-প্রতীকে টিকিট পেয়েছেন বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রে। ২০১৪ সালেও তিনি বিজেপির টিকিট পেয়েছিলেন পুরুলিয়া থেকে, হেরে গেলেও সেবারে কঠিন লড়াই দিয়েছিলেন। তার থেকেও বড় কথা হেরে যাওয়ার পরেও পুরুলিয়ার মাটি ছাড়েননি, সেখানে পরে থেকে ধীরে ধীরে নিজের হাতে সংগঠন তৈরী করেছেন – আর তার ফল সবাই দেখে নিয়েছে বিগত পঞ্চায়েত নির্বাচনেই। ফলে সায়ন্তনবাবুর অনুগামীদের ধারণা ছিল – তাঁকে এবারেও পুরুলিয়া থেকেই টিকিট দেবেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ত্ব।

কিন্তু, একটু অন্যরকম ভেবেছিলেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহরা, পুরুলিয়ার মত ‘প্রায় জেতা নিশ্চিত’ আসন নয় – তাঁর ডাকাবুকো ভাবমূর্তির জন্যই তাঁকে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বসিরহাটের মত প্রায় ৪৮% সংখ্যালঘু অধ্যুষিত আসনে। আর দলের দেওয়া এই চ্যালেঞ্জকে কার্যত দুহাতে লুফে নিয়ে বসিরহাটে গিয়েই সেখানকার সাধারণ মানুষকে গণতন্ত্র রক্ষা করার অঙ্গীকার করে প্রচার জমিয়ে দিয়েছেন রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু।

গতকাল, বসিরহাটের ভ্যাবলার মাঠে নির্বাচনী জনসভা থেকে তৃণমূল কংগ্রেস ও স্থানীয় দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে একের পর এক তোপ দেগে যান গেরুয়া শিবিরের এই নেতা। রাজ্য বিজেপির অন্যতম রাজ্য সম্পাদক রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়, বসিরহাট জেলা বিজেপি সভাপতি গনেশ ঘোষ, সরকারি কর্মচারী পরিষদের রাজ্য আহ্বায়ক দেবাশীষ শীল সহ অন্যান্য স্থানীয় বিজেপি নেতাদের নিয়ে সায়ন্তনবাবু বলেন, কিছুক্ষন আগে রাজুর বক্তৃতার সময় হঠাৎ করে শ্যামাসংগীত চালু হয়ে গেল। কিন্তু তার কিছুক্ষন আগে চলছিল আজান! আসলে তৃণমূল কংগ্রেস সকালে উঠে করে আলি আলি আর বিজেপিকে দেখেই হয়ে যায় কালী কালী!

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এরপরেই সায়ন্তনবাবু স্থানীয় দুষ্কৃতীদের কার্যত হুঙ্কারের সুরে জানান, এলাকার গুন্ডা মস্তানরা কান খুলে শুনে নিন – নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহ আমাকে এখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার নির্দেশ দিয়েছেন। আর সেটা আপনাদের মুখ দেখা জন্য নয়, আপনাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। যারা এখানে বেচাল করবে তাদের তালিকা তুলে দেব, কেন্দ্রীয় বাহিনী এসে বেচালদের চাল ঠিক করে দেবে। নির্বাচনের দিন বুথ যদি দখল করতে আসেন, সে শাজাহান হোক আর ঔরঙ্গজেব হোক, সিআরপিএফকে বলে দেব, গুলি যেন বুক লক্ষ্য করে যায়। গুলি যেন পা লক্ষ্য করে না যায়।

একই সঙ্গে গতকাল তাঁর নিশানায় ছিল রাজ্য পুলিশও। তিনি বলেন, পুলিশ তৃণমূলের হয়ে কাজ করছে – আমি এটাও বলছি, পুলিশকে থানার মধ্যে আটকে রেখে দেব। পুলিশকে থানার বাইরে বের হতে দেব না। নিশ্চিন্তে থাকুন, নির্বাচনের সময় এই ভ্যাবলা মাঠে পুলিশ শুধু প্যারেড করবে। আর নির্বাচনী ক্ষেত্র জুড়ে বিএসএফ আর সিআরপিএফ থাকবে। দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্যে সায়ন্তনবাবুর নিদান, বিজেপির কার্যকর্তাদের বলছি, মার খেয়ে প্যানপ্যান করবেন না। মার খেয়ে পাল্টা মার দেবেন। তারপর ফোন করবেন। নিরীহ মানুষকে মারবেন না, গরিব মানুষকে মারবেন না – কিন্তু, যারা অত্যাচার করবে তাদের ছাড়বেন না।

একইসঙ্গে দলের মহিলা কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, একবারই মরবেন। বার বার মরবেন না। কিন্তু, যারা মারতে আসবে তাদের মেরে তারপর মরবেন। মহিলাদের বলছি বাড়ির বঁটিগুলোতে একটু ভাল করে ধার দিয়ে রাখুন। বসিরহাটে ভাল ভাল ডাব পাওয়া যায়। ডাব কাটার দাগুলি খুব ভাল হয়। এবার রাস্তা দিয়ে মহিলারা দা নিয়ে বেরবে। দু-চারটেকে দেখতে পেলে একেবারে সাবাড় করে দিয়ে আসবে। তার কারণ, এবারের নির্বাচন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের নির্বাচন। একইসঙ্গে তিনি জানান, তৃণমূল বিজেপিকে গালি দেয় অথচ বসিরহাটের যুবককে চাকরির খোঁজে বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র ও গুজরাটে যেতে হয়। কারণ, এখানে শুধু চপ আর মুড়ি ভাজার কাজ আছে আর দিদি তাতেই আনন্দ করছে!

সায়ন্তনবাবু আরও বলেন, এখানকার লড়াই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী হবেন? নাকি বসিরহাট বাংলাদেশের অঙ্গ হয়ে পশ্চিম বাংলাদেশ হয়ে যাবে তার বিরুদ্ধে। আমরা লড়াই কোনো রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে নয়, আমার লড়াই এখানকার হুজি আর জামাতের বিরুদ্ধে। আপনারা জানেন, বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশকারী মুসলমানদের দিয়ে তৃণমূল এখানে দাঙ্গা করিয়েছে। কিন্তু, এখানকার মুসলমানরা দাঙ্গা করতে চান নি – তার প্রমান আমাদের কাছে আছে। তাই ওই অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব আর এখানকার মুসলমানরা আমাদের নিজেদের লোক, তাঁদের বুকে টেনে নেব।

সায়ন্তনবাবুর বক্তব্য ছিল, বসিরহাটের লক্ষ লক্ষ মানুষ চিটফাণ্ডে প্রতারিত হয়েছে, তৃণমূলের লোকেরাই এই চিটফাণ্ডে জড়িত ছিল। তাই, তৃণমূল এবার ভোট চাইতে গেলে কলার ধরে জিজ্ঞাসা করুন চিটফান্ডের টাকা কবে ফেরত পাব? তৃণমূলের নেতারা টেট ও এসএসসির চাকরি দেবে বলে টাকা নিয়েছে। সেই চাকরিও হয় নি, টাকাটাও গেছে। তাই তৃণমূল ভোট চাইতে এলে আগে সেই টাকাটা ফেরত চাইবেন। আগামী ২৩ শে মে দেখবেন, সকাল ১১ টায় বিজেপি এগিয়ে গেছে। দুপুর ১২ টায় দেখবেন বিজেপি অনেক এগিয়ে গেছে আর ১ টায় দেখবেন বিজেপি বাংলা থেকে ২৩ টার বেশি আসন পেয়ে গেছে। দেড়টার সময় ১০০-এরও বেশি তৃণমূল বিধায়ক রাজভবনে গিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দিচ্ছেন আর এই সরকারটা পরে গেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী থেকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হয়ে গেছেন।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!