এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > মালদা-মুর্শিদাবাদ-বীরভূম > স্কুলের পঠনপাঠন যথাযথ রাখতে জারি নয়া নির্দেশিকা , চাপ বাড়লো শিক্ষক-শিক্ষিকাদের

স্কুলের পঠনপাঠন যথাযথ রাখতে জারি নয়া নির্দেশিকা , চাপ বাড়লো শিক্ষক-শিক্ষিকাদের

মোবাইল এখন দেখা যায় সবার হাতে। শিক্ষক থেকে ছাত্র-ছাত্রী কেউই মোবাইলের ছত্রছায়া থেকে বেরোতে পারেন না। ক্লাসরুমে পঠন-পাঠনের জায়গায় মোবাইলের বিস্তর ব্যবহার দেখতে পাওয়া যায়। আর এই অবস্থাকে কন্ট্রোল করতে এবার নতুন নির্দেশিকা চালু হলো বীরভূমে। মূলত স্কুলের পঠন পাঠন যথাযথ রাখতেই এই নির্দেশিকা চালু করা হয়েছে বলে জানা গেছে। বীরভূমের প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ আগামী দিনে পঠন-পাঠনে নজর দেওয়ার জন্য এই নতুন নিয়ম বলবৎ করলেন।

পয়লা নভেম্বর থেকে বীরভূমের প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ একটি নতুন নির্দেশিকা চালু করতে চলেছেন। তিনটি নির্দেশিকা মূলত চালু হবে। যার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যেটি, সেটি হল স্কুল চলাকালীন কোন শিক্ষক-শিক্ষিকা মোবাইল ব্যবহার করতে পারবেন না। পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে সবুজায়নের পক্ষে উৎসাহ প্রদান করতে হবে। এবং পরিবেশ সচেতনতার জন্য প্লাস্টিক ব্যবহারের কুফল সম্পর্কে ছাত্র ছাত্রীদের অবহিত করতে হবে।

স্কুল চলাকালীন অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকাকেই দেখা যায়, সাইলেন্ট মোডে মোবাইল নিয়ে তারা ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ এর জগতে ঘোরাফেরা করছেন। এর ফলে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট তো হতোই, উল্টে ছাত্র-ছাত্রীদের মনোসংযোগে বাঁধা পড়তে বলে মনে করা হচ্ছে। শুক্রবার থেকে বীরভূমের 2401টি স্কুলের প্রাথমিক বিভাগে এই নতুন নিয়ম চালু হলো। নির্দেশিকায় পরিষ্কার করে বলা আছে, নতুন নিয়ম অনুযায়ী স্কুলে ক্লাস চলাকালীন যদি কেউ মোবাইল ব্যবহার করেন তাহলে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে গণ্য হবে।

এই নির্দেশিকা চালু করার ফলে প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের দায়িত্বে থাকা চেয়ারম্যান প্রলয় নায়েক বহুল প্রশংসা কুড়িয়েছেন। তিনি অবশ্য এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, শিক্ষার পরিবেশ ফেরানোর জন্য নানান আলোচনা হলেও কিন্তু মোবাইলের গ্রাস থেকে শিক্ষাঙ্গনকে বার করে আনার কথা কখনোই বলা হয় না। তাই সেখান থেকেই এই ভাবনার শুরু বলে তিনি জানান। তবে তার সাথে তিনি এও জানান, স্কুল চলাকালীন বেশিরভাগ শিক্ষক-শিক্ষিকারা এই মোবাইল ব্যবহার করেন না। সেই আচরণকেই এবার নির্দেশিকায় রূপান্তরিত করা হলো বলে জানিয়েছেন তিনি।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিন পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের জেলা সভাপতি অরিন্দম বসু বলেন, ‘এটা একটা দৃষ্টান্তমূলক নির্দেশিকা। আমরা ইতিমধ্যে প্রার্থনা চলাকালীন প্লাস্টিকের অপব্যবহার, সবুজায়নের পক্ষে ছাত্র-ছাত্রীদের সচেতন করার নির্দেশ দিয়েছি। এই নির্দেশিকা সেক্ষেত্রে আমাদের আরও বলিষ্ঠ করল।’ অন্যদিকে নিখিল বঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের জেলা সম্পাদক সুধাংশু শেখর সরকার জানিয়েছেন, ‘মোটের ওপর এমন ভাবনা ভাল। তবে এই নির্দেশিকায় প্রাথমিক স্কুলে যতটা না সুফল হবে, তার থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্কুলে এটি কার্যকর হলে বেশি ভালো হয়।’

অন্যদিকে, শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার এই সিদ্ধান্তের ভূয়শী প্রশংসা করে জানিয়েছেন, ক্লাস চলাকালীন মোবাইল ব্যবহার করলে শিক্ষক থেকে ছাত্র সবারই মনোসংযোগ বিঘ্নিত হয় তাছাড়া ক্লাসের সময় নষ্ট হয়। তাই শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখতে গেলে মোবাইলকে দূর করতেই হবে। তাই এই নির্দেশিকা খুবই ভালো সিদ্ধান্ত।

কিন্তু এ বিষয়ে জেলার প্রাথমিক শিক্ষক শিক্ষিকারা কিছু আপত্তি জানিয়েছেন। তাঁদের মতে, গোটা জেলার প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থাটাই মোবাইল নির্ভর চলছে‌। স্কুল পরিদর্শকরা কোন নির্দেশিকা হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেন, এমনকি স্কুল চলাকালীন ক্লাস রুম, মিড ডে মিলের ছবি পাঠানোর নির্দেশ দিতে থাকে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে। এমনকি মোবাইল নির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য হোয়াটসঅ্যাপের একেকটা গ্রুপ তৈরি করা হয়েছে। শিক্ষা সংসদের প্রয়োজন সেদিকেও নজর দেওয়ার।

তবে একথা বলতেই হয়, বীরভূমের প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ নজিরবিহীন নির্দেশিকা চালু করল। আর এই নির্দেশিকার ফলে শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতিটি স্তর থেকেই ভূয়সী প্রশংসা উঠে এসেছে। এমনকি রাজনৈতিক মহল থেকেও এই সিদ্ধান্তের দারুণ প্রশংসা করা হয়েছে। শিক্ষাঙ্গনে সঠিকভাবে শিক্ষাব্যবস্থা চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে মত সবার।

তবে প্রাথমিক শিক্ষক শিক্ষিকাদের একাংশ মনে করছেন, শিক্ষা ব্যবস্থাটা এখন পুরোপুরি মোবাইল নির্ভর হয়ে উঠেছে। আধুনিকতার মিশেলে বইয়ের সাথে মোবাইল এখন অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। তাই কোন অবস্থাতেই মোবাইলকে এখন বাদ দেওয়া যায় না‌। প্রযুক্তির সুফল পেতে মোবাইল এখন সাথে রাখতেই হয়। তবে এ নিয়ে বিতর্ক আছে। আপাতত বীরভূম প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের নতুন নির্দেশিকা স্কুলগুলিতে কিভাবে পালন হচ্ছে তাতে নজর রাখবেন তাঁরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!