এখন পড়ছেন
হোম > জাতীয় > লোকসভায় প্রধানমন্ত্রী চরম হুঁশিয়ারি দিতেই চুপসে গেলেন তৃণমূল সাংসদ! শুরু তীব্র জল্পনা!

লোকসভায় প্রধানমন্ত্রী চরম হুঁশিয়ারি দিতেই চুপসে গেলেন তৃণমূল সাংসদ! শুরু তীব্র জল্পনা!

বাংলার রাজনৈতিক সন্ত্রাস নিয়ে প্রায় প্রতিদিনই রাজ্য বিজেপি নালিশ জানিয়ে থাকেন। এবার বাংলার বুকে রাজনৈতিক সন্ত্রাসের বাড়বাড়ন্ত নিয়ে মুখ খুললেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এর আগেও প্রধানমন্ত্রী মোদী সর্বভারতীয় স্তরে বহুবার বাংলার রাজনৈতিক সন্ত্রাস নিয়ে মুখ খুলেছেন। কিন্তু এবার সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়ে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়কে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সাবধান করেন, বাংলার রাজনৈতিক সন্ত্রাস নিয়ে। রাজনৈতিক হানাহানির কারণে পশ্চিমবঙ্গের মাটি প্রায় প্রতিদিনই ভিজছে রক্তে আর এই নিয়ে শাসক পক্ষ এবং বিরোধী পক্ষ ক্রমাগত একে অপরকে দোষারোপ করতে থাকে।

গত দুদিন ধরেই লোকসভায় বিতর্ক চলছে। বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতির ভাষণের পর ধন্যবাদ জ্ঞাপন ভাষণের সময়  প্রধানমন্ত্রী যখন বক্তব্য রাখছেন, তখন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বারংবার তাকে বাধা দিতে থাকেন। বারংবার বাধা পেয়ে প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদী অত্যন্ত বিরক্ত হন। নরেন্দ্র মোদী সেসময় তাঁর বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সংশোধনী নাগরিকত্ব আইন, রাম মন্দির, তিন তালাক প্রথা, কাশ্মীরের 370 ধারা বিলোপ সহ নানান বিষয় উত্থাপন করছিলেন। ঠিক সেইসময় হঠাৎ করে সৌগত রায় বিজেপির অনুরাগ ঠাকুরের ‘গোলি মারো’ প্রসঙ্গ তুলে বলে ওঠেন, “তা হলে শাহিনবাগে গুলি চালানোর কথা যারা বলছে, তা ঠিক?’

আর সৌগত রায়ের এই বক্তব্যের পরেই রীতিমতো তীব্র আক্রমণ করেন তাঁকে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। নরেন্দ্র মোদী পাল্টা সৌগত রায়কে বলেন, ‘বাংলায় রাজনৈতিক হিংসার ঘটনায় আক্রান্ত ও পীড়িতরা এখানে বসে রয়েছেন। তাঁরা যদি আপনাদের কাণ্ড কারখানার কথা বলতে শুরু করেন, তা হলে অস্বস্তির শেষ থাকবে না। কী ভাবে নিরীহ লোকেদের ধরে ধরে মারা হচ্ছে সবাই জানে৷ বাংলায় নির্দোষরা খুন হচ্ছেন৷ পর্দাফাঁস করলে বিপদে পড়বেন৷” সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রীর এই হুঁশিয়ারির পর তৃণমূল সাংসদ আর বিশেষ কথা বাড়াননি।

সংসদের ভাষণে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কেন্দ্রের সুচারু ভাবনার কথা এদিন তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর পদের জন্য কেউ দেশ ভাগ করেছিলেন। ভারতের মানচিত্রের উপর দিয়ে লাইন টানা হয়েছিল। দেশভাগের জন্য হিন্দু, শিখ ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের উপরে কল্পনাতীত নির্যাতন হয়েছে।’ এ প্রসঙ্গে তিনি জওহরলাল নেহেরুর একটি চিঠির বেশ কিছুটা অংশ পাঠ করেন। সেই চিঠিতে লেখা রয়েছে, ‘হিন্দু শরণার্থী ও মুসলিম অনুপ্রবেশকারীর ফারাক করতে হবে আপনাকে। নির্যাতিতরা ভারতে আসছেন, তাঁদের নাগরিকত্ব পাওয়া নিয়ে কোনও সংশয় নেই। আইন অনুকূলে না হলে তা বদলাতে হবে।’

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

আগে থেকেই ইঙ্গিত ছিল, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এদিন দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী কংগ্রেসের জওহরলাল নেহেরুকে নিয়ে সংসদে আক্রমণ শুরু করবেন বিরোধীদের প্রতি। আর সেই বুঝেই কংগ্রেস শিবির থেকে বারংবার হৈ হট্টগোল শুরু করা হয় সংসদে। এদিন প্রধানমন্ত্রী জম্মু কাশ্মীরে 370 ধারা বিলোপ প্রসঙ্গে বলেন, ‘স্বাধীনতার পর থেকে একটা সন্ত্রাস কবলিত এলাকা। আমরা এসে শান্ত করে দিয়েছি। কাশ্মীরে বন্ধ হয়েছে সন্ত্রাসবাদ। সারা দেশের সঙ্গে কাশ্মীরও আজ নতুন পথের দিশারী।’

এরপর প্রধানমন্ত্রী বিজেপি সরকারের আরও বিভিন্ন কাজের কথা তুলে ধরে ভূয়সী প্রশংসায় ভরিয়ে দেন। তিনি বেশ জোরের সাথেই এদিন বলেছেন, ভারত বর্ষ বিজেপির আমলে নতুন ভারত দেখছে। যদিও প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ প্রসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র নিরাশাব্যঞ্জক মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, “কিছুই কাজের কথা শুনলাম না। যেমন রূপকথার গল্প বলেন, তেমনই বললেন। আর সংবিধান সম্পর্কে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহের সঙ্গে কথা শোনা মানে সেটাই সবচেয়ে বড় রূপকথা।”

অন্যদিকে এ দিনের ঘটনায় রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, দীর্ঘদিন ধরে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব যেভাবে শাসকদলের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক হিংসার অভিযোগ সামনে তুলে ধরেন, এদিন লোকসভার অন্দরে প্রধানমন্ত্রীর মুখে একই কথার প্রতিধ্বনি কার্যত রাজ্য বিজেপির নিশানা যে ঠিক সে কথাই প্রমাণ করে। অন্যদিকে, রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে রকম রাজনৈতিক আক্রমণের কেন্দ্রবিন্দুতে বিজেপি সরকারকে বসিয়ে রেখেছেন, ঠিক একইভাবে এদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও তৃণমূলকে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে তুলে ধরলেন। আপাতত সমস্ত পরিস্থিতির ওপর নজর রাখবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকগণ।

কিন্তু, একইসঙ্গে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের প্রশ্ন – রাজ্যজুড়ে তৃণমূল কংগ্রেস বিজেপির ‘অপশাসনের’ কথা বলে প্রচারে ঝড় তুলছে। অথচ সেই বিজেপির প্রধান মুখ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পাল্টা দিতেই কেন চুপসে গেল ঘাসফুল শিবির? তাছাড়া, এই কথাতেই প্রমাণিত – আগামীদিনে বিজেপিও রাজ্যে পাল্টা তৃণমূল বিরোধী প্রচার তীব্রতর করবে। সেই প্রচারের ঝাঁঝ আদৌ সামলাতে পারবে কি ঘাসফুল শিবির? সবমিলিয়ে নরেন্দ্র মোদীর আক্রমনের মুখে তৃণমূল সাংসদদের চুপ করে যাওয়া কিন্তু অনেক রাজনৈতিক জল্পনাই বাড়িয়ে দিল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!