এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > আডবাণী, সুষমার সঙ্গে শুভেন্দুর নাম একসাথে নিয়ে রাজ্য-রাজনীতিতে নতুন কোন ঝড় তুললেন শঙ্কুদেব?

আডবাণী, সুষমার সঙ্গে শুভেন্দুর নাম একসাথে নিয়ে রাজ্য-রাজনীতিতে নতুন কোন ঝড় তুললেন শঙ্কুদেব?


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – আজ নন্দীগ্রাম দিবস। আজকের দিনেই নন্দীগ্রামে গণ আন্দোলন হয়েছিল। আর সেই দিনটি প্রতিবছর স্মরণ করে তৃণমূল কংগ্রেস। তবে বর্তমানে সেই নন্দীগ্রাম দিবসকে নিয়ে জোরালো শোরগোল তৈরি হয়েছে গোটা বাংলা জুড়ে। যে মানুষটি এই নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, সেই শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে বাংলায়। দল এবং সরকারের সঙ্গে ক্রমাগত দূরত্ব বজায় রাখতে দেখা যাচ্ছে রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রীকে।

শুধু তাই নয়, নন্দীগ্রামের সূর্যোদয়ের 13 বছর পূর্তি উপলক্ষে এদিন অরাজনৈতিক ব্যানারের একটি সভায় উপস্থিত হয়ে বেশ কিছু বক্তব্য রেখেছেন শুভেন্দু অধিকারী। যা আদতে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বকে কটাক্ষ করা হয়েছে বলেই মনে করছেন একাংশ। আর এমত পরিস্থিতিতে তৃণমূলের প্রাক্তন ছাত্র নেতা তথা বর্তমান বঙ্গ বিজেপির অন্যতম মুখ শঙ্কুদেব পণ্ডার একটি পোস্ট এখন নয়া গুঞ্জনের সৃষ্টি করেছে গোটা বাংলা জুড়ে। যেখানে এই বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আডবানী, সুষমা স্বরাজের কথা তুলে ধরার পাশাপাশি নিজের পোস্টে তুলে ধরেন শুভেন্দু অধিকারীর কথা।

স্বাভাবিকভাবেই বর্তমান পরিস্থিতিতে যখন শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে, তখন বিজেপি নেতার পোস্টে তার কথা উঠে আসায় নতুন করে বিতর্ক দানা বাঁধতে শুরু করল। বস্তুত, 2011 সালে রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের ক্ষমতায় আসার জন্য যে দুটি জায়গা সবথেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, তার মধ্যে অন্যতম সিঙ্গুর এবং নন্দীগ্রাম। এদিন শুভেন্দু অধিকারী অরাজনৈতিক ব্যানারের সভায় উপস্থিত হয়ে তৃণমূলের পক্ষ থেকে যে পাল্টা সভা হচ্ছে, তার দিকে আঙুল তুলেছেন।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

নাম না করে তিনি নিজের বক্তব্যে বলেছেন, “এত বছর পর নন্দীগ্রামকে মনে পড়ল!” অর্থাৎ তার এই বক্তব্য যে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বকে উদ্দেশ্য করেই, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আর এমত পরিস্থিতিতে প্রাক্তন তৃণমূল নেতা তথা বর্তমান বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পণ্ডার একটি ট্যুইট নতুন করে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। এদিন শঙ্কুদেব পন্ডা লেখেন, “নন্দীগ্রাম দিবস কৃষক আন্দোলনের অধ্যায় হিসেবে স্মরণীয় দিন। আজও মনে পড়ে নন্দীগ্রামে মমতা ব্যানার্জির সমর্থনে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন লালকৃষ্ণ আডবাণী, সুষমা স্বরাজ।”

আর এরপরেই জল্পনা বাড়িয়ে তিনি লেখেন, “বাংলার মসনদে বসে নন্দীগ্রামের আন্দোলনের অন্যতম কারিগর শুভেন্দু অধিকারীর বিরোধিতা, ইতিহাস ক্ষমা করবে না।” একাংশ বলছেন, শঙ্কুদেব পণ্ডা একথা বলে তৃণমূলের অভ্যন্তরে শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে যে জল্পনা তৈরি হয়েছে, তাতে আরও ঘি ঢেলে দিলেন। তিনি এক সময়কার তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা, ফলে তিনি তৃণমূলের অতীত জানেন।

তাই শুভেন্দু অধিকারীর ত্যাগের কথা তুলে ধরে তার পাল্টা যেভাবে নন্দীগ্রামে সভা হচ্ছে, সেই ব্যাপারে প্রশ্ন তুলে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর চেষ্টা করলেন এই বিজেপি নেতা। অর্থাৎ নিজের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে তিনি বুঝিয়ে দিলেন যে, শুভেন্দু অধিকারীর লড়াই-সংগ্রামকে খাটো করা কোনোমতেই উচিত হবে না। আর তাই ইতিহাস ক্ষমা করবে না বলে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের দিকে কটাক্ষ ছুড়ে দিলেন তৃণমূলের প্রাক্তন এই ছাত্র নেতা বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

অনেকে বলতে শুরু করেছেন, সাম্প্রতিককালে শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে ব্যাপক জল্পনা তৈরি হয়েছে। তিনি বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন বলে দাবি করছেন একাংশ। তবে এই ব্যাপারে শুভেন্দু অধিকারী বা বিজেপির পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। আর এমত পরিস্থিতিতে নন্দীগ্রামের সূর্যোদয়ের বর্ষপূর্তির দিনে শুভেন্দু অধিকারী যেভাবে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন এবং তা নিয়ে আলোচনা শুরু হচ্ছে, তার মাঝেই শঙ্কুদেব পণ্ডার এই পোস্ট এবং সেখানে শুভেন্দু অধিকারীর নাম থাকায় নতুন করে গুঞ্জন সৃষ্টি হল।

বিশেষ করে রাজনৈতিক মহলে সবসময়েই চর্চিত থেকেছে শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে শঙ্কুদেব পণ্ডার ‘সুসম্পর্ক’! রাজনৈতিক আঙিনায় গুঞ্জন, দল ছাড়লেও সেই সম্পর্কে নাকি ছেদ পরে নি! যদিও প্রকাশ্যে এই নিয়ে কেউ কোনও দিন একটি শব্দও খরচ করেননি। অন্যদিকে, শঙ্কুদেব নিজে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গেলেও শুভেন্দুবাবু তো এখনও তৃণমূলেই আছেন। তাহলে তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার নিয়ে শঙ্কুদেব পণ্ডা মাথা গলাচ্ছেন কেন? কেন শুভেন্দু অধিকারীর সমর্থনে প্রকাশ্যেই বিবৃতি দিচ্ছেন?

তাহলে কি শুভেন্দুবাবুর সঙ্গে বিজেপির ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধি হতে শুরু করেছে? অনেকে বলছেন, এদিন শুভেন্দু অধিকারী নিজের বক্তব্যের শেষে “ভারতমাতা জিন্দাবাদ” বলে স্লোগান তুলেছেন। অন্যদিকে শঙ্কুদেব পণ্ডা নন্দীগ্রাম আন্দোলনে শুভেন্দু অধিকারীর বিরোধিতা করা নিয়ে তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্যে প্রশ্ন তুলেছেন। আর এই দুই সমীকরণ যদি মেলানো হয়, তাহলে বিজেপির সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলেই দাবি বিশেষজ্ঞদের।

যদিও এই প্রসঙ্গে শঙ্কুদেব পণ্ডা নিজে জানিয়েছেন, নন্দীগ্রামের কৃষক আন্দোলনের মঞ্চ কোনো রাজনৈতিক মঞ্চ নয়! ফলে তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে আমি কোনো কথা বলি নি। আর শুভেন্দু অধিকারী যে রাজনৈতিক দলই করুন না কেন, তিনি যে নন্দীগ্রাম আন্দোলনের প্রাণপুরুষ সেকথা নন্দীগ্রাম জানে এবং মানে। ফলে, তাঁকে আটকাতে যদি কোনো রাজনৈতিক দল বিরোধিতা করে সভা করে, এই নন্দীগ্রাম কি করে তা মেনে নেবে? সব মিলিয়ে নন্দীগ্রামের সূর্যোদয়ের বর্ষপূর্তির দিনে শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্য এবং শঙ্কুদেব পণ্ডার পোস্ট আগামী দিনে বঙ্গ রাজনীতিতে কি প্রভাব ফেলে, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!